বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইলিশ ধরা বন্ধ, নিষ্প্রাণ আড়ত

  •    
  • ৪ অক্টোবর, ২০২১ ১৭:৫৩

চাঁদপুরের বড় স্টেশন মাছঘাটের ব্যবসায়ী সম্রাট বেপারী বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার এই সময়টাতে ইলিশ বেচাকেনা বন্ধ। তাই আমাদের অবসর সময় কাটছে। পুরোনো হিসাবনিকাশ দেখছি।’

কাকডাকা ভোরে শুরু হয় কর্মব্যস্ততা। একের পর এক ট্রলার এসে ভিড়তে থাকে ঘাটে, শ্রমিকরা ঝাঁপি নিয়ে ছুটে যান, ট্রলার থেকে মাছ এনে আড়তে স্তূপ করেন। এরপর শুরু হয় নিলাম। নিলাম শেষে ক্রেতারা মাছ নিয়ে চলে যান।

তবে সোমবার সকালে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বরগুনার বিএফডিসি পাথরঘাটা ও চাঁদপুরের বড় স্টেশন মাছঘাটে গিয়ে দেখা মেলেনি এই চিরচেনা দৃশ্যের। একেবারে সুনসান নীরবতা।

প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

রোববার মধ্যরাত থেকে কার্যকর হয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বাগেরহাট- মোট ২০টি জেলার নদ-নদী, মোহনা ও সাগরে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকবে।

এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, জামালপুর, রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খুলনা, কুষ্টিয়া ও নড়াইল জেলার নদ-নদীতেও ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ থাকবে।

চাঁদপুরের বড় স্টেশন মাছঘাটে ব্যবসায়ীরা এখন আড্ডা দিয়ে পার করছেন নিজেদের অবসর সময়। সহস্রাধিক শ্রমিক না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে মাছঘাটের ২০ থেকে ২৫টি চায়ের দোকান। হুট করেই হারিয়ে গেছে চায়ের দোকানের জমজমাট আড্ডা, হইচই।

চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাট

এই মাছঘাটের ব্যবসায়ী সম্রাট বেপারী বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার এই সময়টাতে ইলিশ বেচাকেনা বন্ধ। তাই আমাদের অবসর সময় কাটছে। পুরোনো হিসাবনিকাশ দেখছি।’

আরেক মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক জানান, ভোরের দিকে পুকুরে চাষ করা কিছু রুই, কাতল, জিওল মাছ আসে। সকাল সাতটার মধ্যেই এগুলো শেষ হয়ে যায়। বাকি সময়টা আর কোনো কাজ থাকে না।

শ্রমিক আবুল হোসেন জানান, এখন পুরোপুরি বেকার হয়ে পড়েছেন। নিষেধাজ্ঞা না ওঠা পর্যন্ত কোনো কাজ নেই।

জেলা মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শবে বরাত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় ইলিশ বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আমরা ব্যবসায়ীরা তা মেনে চলছি। আশা করি অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন হবে। আগামীতে ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়বে।’

বরগুনার পাথরঘাটার সবচেয়ে বড় মুদি জান্নাত বাণিজ্য ভান্ডারের স্বত্ত্বাধিকারী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য সবই মাছকেন্দ্রিক। মাছের ব্যবসা চললে আমাদের ব্যবসা জমে। আর মাছ না থাকলে আমাদেরও এভাবে বসে থাকতে হয়।’

এ বছর ইলিশের মৌসুমের শুরুতে সাগরে তেমন দেখা মিলছিল না রুপালি এই মাছের। তবে শেষ দিকে জমে ওঠে বাজার।

বাজার যখন সড়গরম তখনই এই নিষেধাজ্ঞা। এতে অনেকেই হতাশার কথা জানিয়েছেন।

বরগুনা জেলার ট্রলার মালিক সংগঠনের সভাপতি মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ‘এইবার যে অবস্থা হ্যাতে মোগো ট্র্রলার মালিকগো সরকারের চাউল-ডাইল দেওন লাগে। একে তো ঝড় বইন্না লাইগ্যাই রইছে, হেইয়ার উফরে ইলিশ নাই সাগরে, গাঙ্গে কোনোহানে। ৬৫ দিনের অবরোধের পর এই পর্যন্ত ট্রলার মালিকরা ঘাটতি কাডাইয়াই ওটতে পারেনাই। মোরা বা কী খামু আর জাইল্লাগোই বা কেমনে কী দিমু?’

এ বিভাগের আরো খবর