বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিদেশি চ্যানেল বন্ধে টিভি দর্শকের ‘পানসে’ জীবন

  •    
  • ৪ অক্টোবর, ২০২১ ১৭:১৭

টিভি দর্শকরা বলছেন, টেলিভিশন তাদের প্রধান বিনোদনমাধ্যম। সব চ্যানেল তারা দেখতে চান। টিভি দর্শক অঞ্জন বলেন, ‘সরকার ও কেব্‌ল অপারেটরদের দ্বন্দ্বে আমরা সাধারণ দর্শকরা কেন বঞ্চিত হব। আমাদের কেন জিম্মি করা হবে?’

প্রতিদিন সন্ধ্যায় নিয়ম করে টিভির সামনে বসেন নাজমুন নাহার। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটল ছন্দপতন। টেলিভিশন খুলে দেখেন বিদেশি চ্যানেল বন্ধ। নাতি দৌড়ে এসে জানায়, তার রুমের টিভিতে কার্টুন নেটওয়ার্ক দেখা যাচ্ছে না। সেদিন থেকে নাতি টিভিতে ইউটিউব দেখে সময় কাটাচ্ছে, কিন্তু নাজমুনের সন্ধ্যা যেন আর কাটছে না।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘নতুন নতুন স্মার্টফোন চালাই। ছেলে দেখিয়ে দিলো, কীভাবে ইউটিউবে সিরিয়াল দেখা যায়। তবে এখনও ভালোমতো ইউটিউবটা বুঝি না। সব সিরিয়ালের নতুন পর্বগুলোও খুঁজে পাই না। খুব বিরক্ত লাগছে।’

ঢাকার ক্যান্টনমেন্টে থাকেন সৌদিয়া আক্তার সুপ্তি। তার ঘরের টিভিতে সবসময়ই চলত স্টার জলসা।

তিনি বলেন, ‘আমি ঘর থেকে তেমন বের হই না। সারা দিন ঘরের কাজই করি। এইসব চ্যানেলই তো আমার বিনোদন। এখন স্মার্টফোনে ইউটিউব দেখি। তবে সিরিয়ালগুলো খুব মিস করছি।’

ক্লিনফিড (বিজ্ঞাপনমুক্ত) ছাড়া বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচারের ওপর সরকার বিধিনিষেধ জারির পর গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে সব বিদেশি চ্যানেল প্রদর্শন বন্ধ করে দিয়েছে কেব্‌ল অপারেটররা। আর এতে হঠাৎ করেই পানসে জীবনের মুখে পড়েছেন দেশের কোটি কোটি টিভি দর্শক।

বিশেষ করে পরিবারের শিশু ও নারীরা মহাবিরক্ত। তারা বলছেন, তারা সব ধরনের টিভি চ্যানেল দেখারই সুযোগ চান। আইনের মধ্যে সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকার ও সংশ্লিষ্টদের।

রাজধানীর উত্তরার নাজমুন নাহারের দিন কেটে যায় ঘরের কাজ আর নাতির দেখভালে। সন্ধ্যায় ছেলের বউ অফিস থেকে ফিরলে অবসর পান তিনি। এরপর ভারতীয় চ্যানেল স্টার জলসার সিরিয়াল দেখে তার সময় কাটে।

সিলেট নগরীর ব্লু বার্ড স্কুলের ক্লাস টুতে পড়ে সাদাত হোসেন মাহিন। টিভি দেখার জন্য বাবা-মা তাকে প্রতিদিন এক ঘণ্টা বেঁধে দিয়েছিলেন। চার দিন হলো টিভি দেখা হচ্ছে না বলে এতোটাই মন খারাপ যে, নাওয়া-খাওয়াই বন্ধ করে দিয়েছে সে।

দেশে বিদেশি চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ হওয়ায় মাহিনের মতো অনেক শিশুরই মন খারাপ। মাহিনের মা শেগুফতা ইয়াসমিন একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘টিভিতে সে কার্টুন দেখে। অনেক সময় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকও দেখে। কয়েকদিন ধরে এসব চ্যানেল বন্ধ বলে খুবই মন খারাপ তার। খাওয়া-দাওয়া করতেই চাচ্ছে না। প্রায় জোর করেই খাওয়াতে হচ্ছে।’

টিভিতে কার্টুন চ্যানেল বন্ধ বলে শিশুরা স্মার্টফোন ইউটিউব দেখে সময় কাটাচ্ছে

ছেলের মন ভালো করতে তিনি হাতে তুলে দিয়েছেন স্মার্টফোন। তাতেও বিপত্তি হয়েছে। এখন তার হাত থেকে ফোন নিলেই খিটমিট করছে।

শেগুফতার ভয়, এখন না আবার স্মার্টফোন আসক্তি ধরে যায় মাহিনের।

ভারতীয় চ্যানেলে সিরিয়াল ও রিয়েলিটি শো দেখে অবসর কাটে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার গৃহবধূ শরিফা বেগমের।

তিনি বলেন, ‘সারা দিন ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকি। সন্ধ্যার পর গিয়ে টিভি দেখার একটু সুযোগ পাই। এটাই আমার একমাত্র বিনোদন। সে সুযোগও এখন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

‘প্রতিদিন একবার টেলিভিশন চালু করে দেখি চ্যানেলগুলো আসছে কি না। হতাশ হয়ে আবার বন্ধ করে দেই।’

দেশের চ্যানেল কেন দেখেন না- এমন প্রশ্নের জবাবে শরিফা বলেন, ‘দেশের চ্যানেলগুলোতে দেখার মতো কিছু নেই। সব চ্যানেলে কেবল খবর আর টক শো। যেগুলোতে কিছু নাটক দেখায়, সেগুলোর মানও খুব বাজে। দেখার মতো না।’

তার সঙ্গে বসে নিয়মিত ভারতীয় চ্যানেল দেখেন গৃহকর্মীও। তিনি নাম জানাতে চাননি। তিনি বলেন, টিভি দেখতে পারছেন না বলে মন খারাপ; কোনো কাজেই মন বসছে না।

নগরীর শিবগঞ্জের অঞ্জন দাস টিভিতে মূলত খেলা দেখেন। এখন চ্যানেলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চ্যাম্পিয়নস লিগের খেলা দেখতে পারছেন না বলে খুব বিরক্ত তিনি।

অঞ্জন বলেন, ‘সরকার ও কেব্‌ল অপারেটরদের দ্বন্দ্বে আমরা সাধারণ দর্শকরা কেন বঞ্চিত হব। আমাদের কেন জিম্মি করা হবে?’

সিলেট কেব্‌ল সিস্টেম লিমিডেটের (এসসিএস) উপব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ফজলুল করিম মারজান বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপন ছাড়া বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচারের কথা বলা হয়েছে। ১ তারিখের মধ্যে ক্লিনফিড দেখানোর সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় তো আমরা বিদেশি চ্যানেল দেখাতে পারি না। কারণ সব চ্যানেলেই কম বেশি বিজ্ঞাপন আছে।

‘১ অক্টোবরই আমাদের কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়েছে। আমরা যদি বিদেশি চ্যানেল চালানো অব্যাহত রাখতাম, তখন হয়ত জরিমানা গুণতে হত।’

তিনি জানান, ক্লিনফিড দেখানোর মতো প্রযুক্তিগত সক্ষমতা নেই। এটি ব্যয়বহুলও। ক্লিনফিড পরিবেশকদেরই নিয়ে আসতে হবে। সরকারকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে।

বিদেশি চ্যানেল না চলায় গ্রাহকরা মাস শেষে বিল দিচ্ছেন না বলেও জানান তিনি।

লকডাউনে ঘরে বসে টিভি দেখেই সময় কেটেছে বরিশাল নগরীর শিশু তাসফি রহমানের। ‘সনি আট’ চ্যানেলের গোপাল ভাঁড় কার্টুনের নিয়মিত দর্শক ছিল সে।

টিভিতে প্রিয় চ্যানেল নেই, করোনার কারণে বাইরেও যাওয়া হয় না; তাই কম্পিউটারে সময় কাটায় এই শিশু

নিউজবাংলাকে সে বলে, ‘গোপাল ভাঁড় দেখতে পারছি না কতদিন ধরে। ভালো লাগছে না। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক আর ডিসকভারিও দেখতে পাচ্ছি না। কত সময় পড়ালেখা ভালো লাগে? বাইরেও ঘুরতে যেতে দেয় না।’

ভারতীয় সিরিয়ালের জন্য জনপ্রিয় চ্যানেল স্টার জলসা ও জি বাংলা নিয়মিত দর্শক নগরীর বেশিরভাগ গৃহবধূ।

নগরীর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইরা বানু বলেন, ‘কাজ না থাকলে নাটক দেখে একটু সময় কাটাতাম। ঘরের পুরুষরা তো সারা দিন বাইরে থাকে। তাদের সময় কেটে যায়। আমরা নারীরা বাইরে বেশি ঘুরতে পারি না, ঘরে কাজ থাকে। কাজ শেষে যে একটু বসে টিভি দেখব, সেই লাইনও রাখে নাই। সব খালি নো সিগন্যাল দেখায়।’

কবে নাগাদ চ্যানেলগুলো স্বাভাবিক হবে, তা জানতে চাইলে বরিশালের স্কাই ভিশন কেব্‌ল নেটওয়ার্কের পরিচালক শিবু দাস বলেন, ‘সরকার ক্লিনফিড ছাড়া চ্যানেল চালাতে বলায় সব বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। এখন যে চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপন নেই, সেই চ্যানেলগুলো ধীরে ধীরে আবার দর্শকদের সামনে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করব।’

ইউরোটেল ডিজিটাল কেব্‌ল টিভির পরিচালক এস এম জাকির হোসেন বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে সব বিদেশি চ্যানেলই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এখন আমরা যাচাই-বাছাই করে যে চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপন নেই, সেগুলো চালু করব। তবে তাতে কিছুটা সময় লাগবে।’

কুমিল্লা নগরীর কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক রুমি আক্তার তো ভেবেছিলেন টিভি সেটেই হয়ত সমস্যা, তাই বিদেশি চ্যানেল আসছে না। স্বামী আজহার উদ্দিন স্টেডিয়াম এলাকার মেকানিকের দোকানে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, টিভি ঠিকই আছে। ক্যাবেল অপারেটররাই চ্যানেলগুলো বন্ধ করেছে।

নগরীর ঝাউতলা এলাকার গৃহবধূ শিরিন সুলতানা বলেন, ‘আমার ছেলেটা টিভিতে মোটু-পাতলু দেখত। চ্যানেল বন্ধ হওয়ায় এখন মোবাইলে ডাটা অন করে ইউটিউব থেকে দেখে। ফোনে কল আসলে কেটে দেয়। অনেক জরুরি কল ধরতে পারি না। চ্যানেলগুলো বন্ধ হওয়ায় যন্ত্রণায় আছি।’

টিভিতে খেলার চ্যানেল চলে না বলে পাড়ার দোকানেও ক্রেতা কমেছে

জেলার সদর উপজেলার জগন্নাথপুরে হোসেন মিয়াও বিপদে পড়েছেন। এলাকায় ছোট্ট খাবার হোটেল আছে তার। জানান, দোকানে টিভিতে খেলার চ্যানেল চালিয়ে রাখলে তা দেখার জন্য গ্রাহক বসতেন, চা-নাস্তা খেতেন।

তিনি বলেন, ‘আমার দোকানে মানুষ আসে, চা-টা খায়, খেলা দেখে। আজ কয়েকদিন মানুষ খুব বিরক্ত। কোনো চ্যানেল আসে না। বাংলা চ্যানেলে সিনেমা চলে। আর এসব দেখে কাস্টমার চলে যায়।’‌

জেলার চান্দিনা উপজেলার কেব্‌ল ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘গ্রাহকরা দিনরাত ফোন দিয়ে যাচ্ছে। যতই বলি ততই অবুঝের মতো প্রশ্ন করে মানুষ। আশা করি চ্যানেলগুলো আবার খুলে দেয়া যাবে শিগগিরি।’

বিদেশি চ্যানেল বন্ধে খুশিও অনেকে

রাজধানীর মিরপুরের মৌসুমী ইসলাম মনে করেন, বিদেশি কিছু চ্যানেল বন্ধ করা প্রয়োজন ছিল।

তিনি বলেন, ‘ভারতীয় বিভিন্ন চ্যানেলের সিরিয়াল না থাকায় ভালোই হয়েছে। জি-বাংলা, স্টার জলসা, এসব চ্যানেলের তেমন প্রয়োজন নেই বললেই চলে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত খুবই ইতিবাচক। তবে এখন সব ধরনের চ্যানেল বন্ধ রয়েছে, এটা ঠিক নয়। বিভিন্ন নিউজ চ্যানেল, খেলা ও নেচার বিষয়ক চ্যানেলগুলো সম্প্রচারে থাকা উচিত।’

কিছু চ্যানেল চালু রাখার পক্ষে কথা বললেন লক্ষ্মীপুরের রামগতির আরিফ হোসেনও।

তিনি বলেন, ‘অফিস শেষে বাসায় ফিরে কিছু সময়ের জন্য টিভি দেখে একটু রিফ্রেশ হওয়া যায়। দেশি-বিদেশি টিভিগুলোতে এখন মানসম্মত তেমন অনুষ্ঠান থাকে না বললেই চলে। তাই বন্ধ থাকাই ভালো। তবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নিউজ চ্যানেল খুলে দেয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে ট্রাভেল ও ডিসকভারির মতো চ্যালেনগুলো দেখেও মানুষ নতুন কিছু শিখতে পারে।’

ঢাকার আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকার নেছার উদ্দিন ও খাদিজা আক্তার দম্পতির দুই সন্তানের টিভিতে কার্টুনের আসক্তি বেশ বেড়ে গিয়েছিল। কার্টুন দেখতে না দিলে খেতেই চাইত না তিন বছরের তাসফিয়া আক্তার নাফিজা ও সাত বছরের নাঈম খান। আবার রিমোট নিয়ে দুইজনের মধ্যে মারামারিও লেগে থাকত।

এখন বিদেশি চ্যানেল বন্ধ হওয়ায় তারা মিলেমিশে খেলাধুলা করছে বলে জানান তাদের বাবা-মা।

নাফিজা-নাঈমের মা খাদিজা আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি জি-বাংলা, স্টার জলসা ও জলসা মুভিস দেখি। আমার বাচ্চা দুইটা সব সময় কার্টুন চ্যানেল দেখত। সারা দিন রিমোট নিয়ে মারামারি করত। ছেলে মোটুপাতলু দেখতে চায়, আরেকজন গোপী।

‘আমি যখন দেখতাম, তখন একটা নেশা ছিল। এ জন্য স্বামীর সঙ্গে ঝগড়াও হতো। এখন ইন্ডিয়ান চ্যানেল বন্ধ হওয়ার পরে কোনো ঝামেলাই নাই। ছেলে-মেয়ে দুই দিন কান্নাকাটি করলেও এখন ওরা বুঝতে পারছে যে চ্যানেল নাই। আজকে কিছু বলেও নাই। দুই ভাই-বোন নিজেরা খেলা করছে সারা দিন।’

দেশীয় টিভি চ্যালেনগুলোর মানহীন অনুষ্ঠানের কারণেই দর্শক বিদেশি চ্যানেলমুখী হয়েছে বলে মনে করেন রাজধানীর ফার্মগেটের মো. হোসেন। তিনি বলেন, ‘দেশি চ্যানেলগুলোতে একঘেয়েমি সংবাদ আর নাটক দেখে আমরা বিরক্ত। নাটকে ঘুরে ফিরে প্রায় একই মুখ। দেশি চ্যানেল দেখার জন্য টাকা খরচ করে ডিস লাইন নেব কেন?’

দেশি টেলিভিশনগুলোর মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো) বলছে, আলোচনার মাধ্যমেই চলমান সমস্যায় একটা পথ বের হবে।

ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শনিবার সন্ধ্যায় সংগঠনটির সিনিয়র সহসভাপতি মোজাম্মেল বাবু বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশে এ আইন মানা হচ্ছে। আমাদের কোনো চ্যানেল বিদেশে সম্প্রচারে গেলেও তাদের এটা মানতে হয়। ডিস্ট্রিবিউটরদের ডাউনলিংকের অনুমোদনের ক্ষেত্রেও এটি শর্ত হিসেবে উল্লেখ আছে।

‘তবে এটা আন্দোলনের কোনো বিষয় না। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের একটি পথ বের হয়ে আসবে।’

বন্ধ হওয়া বিদেশি চ্যানেলগুলো খুলতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার রোববার তথ্য সচিব ও কোয়াব সমন্বয় কমিটির আহ্বায়কের কাছে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন।

একই সঙ্গে ক্লিন ফিডে কোনো বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচার করা হলে বাংলাদেশের সব টিভি চ্যানেলেও ক্লিন ফিড (বিজ্ঞাপনবিহীন) সম্প্রচারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, ‘বিদেশি চ্যানেলগুলোর সঙ্গে ক্লিন ফিড ছাড়া কীভাবে বাংলাদেশে সম্প্রচার অব্যাহত রাখা যায়, সে ব্যাপারে কোনো আলোচনা না করে চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করা হঠকারী সিদ্ধান্ত।

‘এমন সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ বিদেশি চ্যানেল দেখার প্রয়োজনীয় ফি দিয়েও চ্যানেল দেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে বিনোদনের অভাব দেখা দিয়েছে, যা সুস্পষ্টভাবে বাংলাদেশের সংবিধান ও মানবাধিকার লঙ্ঘন।’

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলোর অনুষ্ঠানের মান অত্যন্ত নিম্ন। ফলে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ বিদেশি চ্যানেল দেখেন। সেগুলো বন্ধের ফলে দেশের মানুষ, বিশেষ করে শিশুরা কার্টুন, নারীরা রান্না ও সিরিয়াল এবং পুরুষরা সংবাদ, খেলা ও রিয়্যালিটি শো দেখতে পারছেন না। এটি প্রচলিত আইনের পরিপন্থি।

নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার চালু না করে দিলে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন সিলেটের দেবাশীষ দেবু, বরিশালের তন্ময় তপু, কুমিল্লার মাহফুজ নান্টু ও সাভারের ইমতিয়াজ উল ইসলাম।

এ বিভাগের আরো খবর