মুক্তিপণের দাবিতে দিনাজপুরে মা ও ছেলেকে ‘অপহরণের’ ঘটনায় সিআইডির তিন সদস্যের জামিন দেয়নি আদালত।
দিনাজপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঞা রোববার বিকেল সাড়ে ৫টায় তাদের জামিন আবেদন নাকচ করেন। এর আগে বিচারক আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শোনেন।
মামলার আসামি সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবির, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসানুল হককে গত বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হয়েছিল। এ সময় তাদের জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম। তখন জামিন শুনানি হয়নি।
আদালতের পেশকার আমিজার রহমান জানান, রোববার বিচারক দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে আসামিদের জামিন দেননি। তাদের কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ আগস্ট রাত ৯টার দিকে চিরিরবন্দর উপজেলার নান্দেরাই সালেমান শাহ পাড়া এলাকার লুৎফর রহমানের বাড়িতে ৬-৭ ঢুকে লুৎফরের স্ত্রী জহুরা বেগম ও ছেলে মো. জাহাঙ্গীরকে মারধর করে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে চলে যায়।
বাদীর অভিযোগ, সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবিরের নেতৃত্বে একটি দল রাত সাড়ে ৯টায় ওই বাড়িতে যায়। তারা লুৎফরকে আটক করতে এসেছে বলে জানায়। লুৎফরকে না পেয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। ঘরে থাকা টাকা ও স্বর্ণালংকারও তারা লুট করে।
মা ও ছেলেকে অপহরণের পর দফায় দফায় ফোন করে দুজনের মুক্তির বিনিময়ে ১৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এরপর বিষয়টি চিরিরবন্দর থানায় জানালে অপরাধী ধরতে ফাঁদ পাতা হয়।
মুক্তিপণের টাকা নিতে অপহরণকারীদের দিনাজপুর সদর উপজেলার বাঁশেরহাটে আসতে বলা হয়। অপহরণকারীরা সেখানে গেলে পুলিশ তাদের আটক করে। উদ্ধার করা হয় জহুরা ও তার ছেলে জাহাঙ্গীরকেও।
রংপুর সিআইডির ভারপ্রাপ্ত এসপি আতাউর রহমান জানান, সিআইডির এই সদস্যরা ২১ আগস্ট থেকে ১০ দিনের ছুটিতে ছিলেন। এ সময়ে তাদের কোনো অভিযোগ তদন্তে দিনাজপুর যাওয়ার কথা ছিল না। ভাড়া করা একটি গাড়ি নিয়ে তারা সেখানে গিয়ে ধরা পড়েন।
আলোচিত এই অপহরণের ঘটনায় ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আসামিরা হলেন রংপুর সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবির, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসানুল হক, মাইক্রোবাসচালক হাবিব, নিমনগর বালুবাড়ী এলাকার ফসিহ উল আলম পলাশ, চিরিরবন্দর উপজেলার আন্ধারমুহা গ্রামের আরেফিন শাহ, শহরের ৬ নং উপশহর খেরপট্টি এলাকার সোহেল, সুইহারী চৌরঙ্গী বাজারের রিয়াদ, ২ নং উপশহর এলাকার সুমন ও ৩ নং উপশহর এলাকার জাহিদ।
এ মামলাতেই সিআইডির তিন সদস্য গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।