বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সংস্কারের বছর না ঘুরতেই বেহাল সড়ক

  •    
  • ৩ অক্টোবর, ২০২১ ১০:৩৫

প্রতি অর্থবছরেই এক থেকে দেড় শ কিলোমিটার করে সড়ক সংস্কার হচ্ছে। বছর না ঘুরতেই সেগুলোতে তৈরি হচ্ছে খানাখন্দ। এলজিইডি বলছে, অতিরিক্ত ওজনের গাড়ি চলাচল করায় সড়ক টিকছে না।

নোয়াখালী সদর থেকে সুবর্ণচরের সংযোগ সড়কটি সোনাপুর থেকে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে সুবর্ণচর ও হাতিয়ায় যাওয়ার অন্যতম সড়ক। ১৯ কিলোমিটারের এ সড়কটি ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দুইবার সংস্কার করা হয়েছিল। তাতে খরচ হয়েছিল প্রায় চার কোটি টাকা।

এখন এ সড়কের ৯০ শতাংশই খানাখন্দে ভরা। বেশির ভাগ অংশে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এ সড়কে চলাচলের সময় যানবাহন প্রায়ই বিকল হচ্ছে, দুর্ঘটনাও ঘটছে।

বড় গর্তগুলোতে কর্তৃপক্ষ আস্ত ইট ফেলে কোনোরকম চালিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলেও সংস্কারের কোনো পদক্ষেপ নেই।

নোয়াখালীতে এলজিইডির বেশির ভাগ সড়কেরই এই হাল। বিভিন্ন উপজেলায় সড়কে বড় গর্তগুলোতে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে। চলাফেরায় চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ তাতে আরও বাড়ে।

প্রতি অর্থবছরে এক থেকে দেড় শ কিলোমিটার করে সংস্কার হলেও বছর না ঘুরতেই সেগুলো বেহাল হয়ে পড়ছে। সংস্কারের অর্থ পুরোটাই জলে যাচ্ছে। এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বলছে, অতিবৃষ্টি ও মাত্রাতিরিক্ত ওজনের গাড়ি চলাচলের কারণে সড়কগুলো টিকছে না।

জেলা সদরের ভাটিরটেক এলাকার নুরুল ইসলাম, হাসানুর রহমান ও যুবরাজ নামের একাধিক বাসিন্দা নিউজবাংলাকে জানান, সদর-সুবর্ণচর সংযোগ সড়কের বাজারের দক্ষিণ অংশে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। অটোরিকশা ও মাইক্রোবাস উল্টে পাশের খাদে পড়ে। কিছুদিন আগেই অটোরিকশা পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন এক অন্তঃসত্ত্বা।

ওই সড়কে নিয়মিত সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালান আবদুল ওহাব। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমার গাড়ি মাস খানেক আগে ওই বাজারের সামনে উল্টে পড়ে যায়। গাড়ির গতি কম থাকায় যাত্রীদের বেশি সমস্যা হয়নি। গাড়িটা এখনও বিকল।’

২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দুই ভাগে সংস্কার হয়েছিল জেলা সদরের সঙ্গে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটের অন্যতম সংযোগ সড়কটি। মাইজদী-বছিরার দোকানের সামনে দিয়ে যাওয়া প্রায় ২০ কিলোমিটারের এই সড়ক সংস্কারে খরচ হয় প্রায় ৫ কোটি টাকা।

সড়কের আদর্শ স্কুল মোড় এলাকার সালাহ উদ্দিন সুমন ও নিজাম উদ্দিন জানান, সংস্কারের এক বছরের মাথায় সড়ক বেহাল। এখন আর সংস্কার হয়নি। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তদারকি না থানায় অল্প সময়ে সড়কে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে।

জেলা শহরের বছিরার দোকানসংলগ্ন সড়কে বিকল হওয়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক শাহাব উদ্দিন জানান, এ সড়কে চলাচল করতে গিয়ে অন্তত চারবার তার রিকশা বিকল হয়েছে। সবশেষ গত শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে যাত্রীসহ পড়ে গিয়ে অটোরিকশার সামনের মাথা ভেঙে যায়। এ অবস্থা শুধু তার নয়; প্রতিদিন ২-৪টা অটোরিকশা বিকল হয় এখানে।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার কবিরহাট, সুবর্ণচর, সদর পশ্চিমাঞ্চল, সেনবাগসহ বিভিন্ন উপজেলা সংযোগ সড়কগুলো বেহাল। উপজেলার গ্রামীণ সড়কগুলোর চিত্র আরও ভয়াবহ।

অথচ প্রতিবছরই এক থেকে দেড় শ কিলোমিটার করে সড়ক সংস্কার হচ্ছে।

জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) হিসাবে, গত ১২ বছরে নতুন সড়ক উন্নয়ন হয়েছে প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার। সবমিলিয়ে এখন তাদের পাকা সড়ক রয়েছে প্রায় ৪ হাজার কিলোমিটার, যার ৪৫ শতাংশের বেশি চলাচলের অনুপযোগী।

এ বিষয়ে এলজিইডির জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ইকরামুল হক জানান, বর্ষায় সড়কে পানি জমাট বাঁধা এবং সড়কের পাশের গাছের কারণে অল্প দিনেই সড়ক নষ্ট হচ্ছে। তা ছাড়া অতিরিক্ত ওজনের গাড়ি চলাচলও সড়ক নষ্ট হওয়ার বড় কারণ।

তিনি আরও জানান, সংস্কার উপযোগী সড়কের তুলনায় বরাদ্দ কম। স্বল্প বরাদ্দের মধ্য দিয়েও নিয়মিত সংস্কারকাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে জেলার সব বেহাল সড়কই সংস্কার করা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর