চুয়াডাঙ্গার মোহাম্মদ হাসান জাতীয় যুব হ্যান্ডবল দলে সুযোগ পেয়েছিলেন ১৯৮৭ সালে। ১৯৮৯ পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন বেশ কিছু ম্যাচ।
এরপর চলে যান মধ্যপ্রাচ্যে। সেখান থেকে ২০১৭ সালে দেশে ফেরার পর ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়েন মাদক জগতে।
শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় বিশেষ অভিযানে জাতীয় যুব দলের সাবেক এ খেলোয়াড়কে মাদকসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও তিনজনকে।
গ্রেপ্তার চারজনের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে ৪৯ ডোজ প্যাথেড্রিন, চার হাজার ৪০০ টাকা ও একটি দেশীয় অস্ত্র।
হাসান ছাড়া গ্রেপ্তার তিনজন হলেন চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বড় মসজিদপাড়া এলাকার শীর্ষ মাদক কারবারি আবু বক্কর সিদ্দিক বনি, একই পাড়ার আসলাম হোসেন ও জোয়ার্দার পাড়ার তোতা মিয়া।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন জানান, হাসানের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া বনির বিরুদ্ধে সদর থানায় ছয়টি, আসলামের বিরুদ্ধে চারটি ও তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে থাকা সব মামলায় মাদকের।
পুলিশ জানায়, বনি চুয়াডাঙ্গার শীর্ষ মাদক কারবারি। তার মাদকের নিজস্ব সিন্ডিকেট রয়েছে। আগেও তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হয়েছে। এর মধ্যে একবার তিনি ধারালো অস্ত্র দিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে পালিয়ে যান।
সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যে হাসানসহ অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর হাসান এক সময় জাতীয় দলে খেলতেন বলে জানতে পারেন তারা।
হাসানের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানায়, আশির দশকে হাসান ১০০ মিটার স্প্রিন্টে কুষ্টিয়া জেলায় সেরা হয়ে অংশ নেন বিভাগীয় পর্যায়ে। খুলনা বিভাগেও সবাইকে ছাড়িয়ে যান তিনি। পরে ঢাকায় গিয়ে ট্রায়াল দেন। তবে জাতীয় স্প্রিন্ট দলে সুযোগ পাননি।
স্প্রিন্টার হতে না পারলেও পরবর্তীতে হ্যান্ডবলে জাতীয় যুবদলে জায়গা করে নেন হাসান। খেলেন বেশকিছু ম্যাচ। ১৯৮৭-৮৯ পর্যন্ত জাতীয় যুব হ্যান্ডবল দলে ছিলেন তিনি।
পুলিশ আরও জানায়, জাতীয় দল থেকে বের হয়ে পরে মধ্যপ্রাচ্যে চলে যান হাসান। সেখানে সুবিধা করতে না পেরে ২০১৭ সালে দেশে ফেরেন। পরে দেশে একটি মুদির দোকান দিলেও তা বন্ধ হয়ে যায় অল্প দিনেই। এরপর বন্ধুদের সঙ্গে মাদকের জগতে পা বাড়ান হাসান।
প্রথমে শুধু সেবন করলেও পরে নিজেও বিক্রিতে নেমে পড়েন। যোগ দেন বনির দলে। ২০১৮ সালে একবার গ্রেপ্তারও হন তিনি।