অবৈধভাবে বিক্রির জন্য রাজধানীর পিকক বারের গোপন কুঠুরিতে দেশি-বিদেশি মাদক দ্রব্যের স্তুপ খুঁজে পেয়েছে র্যাব ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দল। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করা হয়েছে।
শাহবাগে বারটিতে মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালানোর পর বুধবার নিউজবাংলাকে বিস্তারিত জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক।
তিনি জানান, কুঠুরিতে ১ হাজার ৪১৬টি দেশি বিয়ারের ক্যান, ২ হাজার ৪৯৬ বিদেশি বিয়ারের ক্যান, ১১৫টি বিদেশি মদের বোতল ও ১ হাজার ৪২৮টি দেশি মদের বোতল জব্দ করা হয়। এসব মাদকদ্রব্যের আনুমানিক মূল্য কোটি টাকার ওপরে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বারের সংশ্লিষ্টরা অভিনব কায়দায় অবৈধ মদ ও বিয়ার মজুদ করে রেখেছিল। যেগুলো যাদের পারমিট নেই তাদের কাছে বিক্রি করা হতো। অভিযানের সময় বারের মালিক, ম্যানেজার ও দায়িত্বশীলদের পাওয়া না গেলেও কুঠুরি ও অন্যান্য জায়গায় থাকা অবৈধ মাদক রক্ষণাবেক্ষণে ছিল এমন চারজনকে আটক করা হয়েছে।’
আটক চারজন হলেন মজিবুর রহমান, মো. লিটন, ওলিউর রহমান ও জহিরুল ইসলাম।
আটকদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাব জানায়, যাদের মাদকের লাইসেন্স নেই, যারা বাসায় বসে মদ্যপান করে এবং বাসায় বিভিন্ন মিনিবার পরিচালনা করে তাদেরকে বিভিন্ন সময় এখান থেকে মদ-বিয়ার সাপ্লাই দেয়া হতো।
অভিনব কায়দা প্রসঙ্গে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘পিকক বারের নিচতলায় ঢুকতে ডানপাশে কয়েকটা কয়লার বস্তা ফেলে রেখেছিল। যেগুলো আড়ালে একটি ছোট কুটুরি, যা দিয়ে একজনে বেশি প্রবেশ করা যায় না। এর ভেতর শত শত মদের বোতল ও বিয়ার মজুদ করে রেখেছিল। চারতলায় কর্মচারীদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানেও বক্স খাটের পাটাতনের নিচে কৌশলে মদ ও বিয়ার লুকিয়ে রেখেছিল।’
র্যাব থেকে বলা হয়েছে, বারের মালিক ও বাড়ির মালিকসহ গ্রেপ্তার চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হবে বলে জানান মোজাম্মেল হক। বারের মালিককে আসামি করা হবে। আর বাড়ির মালিকও আসামি হবেন। কারণ তার অনুমতি ছাড়া নিশ্চয়ই তার বাড়ির স্ট্রাকচার পরিবর্তন করা হয়নি।’
অভিযানের সময় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমন্ডার খন্দকার আল মঈন দাবি করেন, কোটি টাকার অবৈধ মদ ও বিয়ার উদ্ধার হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নিচতলা থেকে তিনতলা পর্যন্ত বারের অনুমোদন ছিল, কিন্তু তারা চারতলা পর্যন্ত বারের কাজে ব্যবহার করত। আমরা অভিযানে এসে বারের স্বত্বাধিকারী, ম্যানেজারসহ অনেককেই পাইনি। স্টোররুম ও মালামাল তালাবদ্ধ ছিল।
‘চারতলায় দুয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা জানতে পারি, অবৈধ কিছু মাদক রয়েছে। সেখানে গিয়ে আমরা বিপুল পরিমাণ অবৈধ মাদক পেয়েছি। আমরা নিচে এসে সুরঙ্গের মতো একটি পেয়েছি। সেখান থেকেও বিপুর পরিমাণ মাদক পেয়েছি। যেগুলোর কোনো বৈধ কাগজ নেই।’