আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব, নেতার কথা বলেন? আরে নেতা তো বাংলাদেশে একজনই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি একমাত্র নেত্রী যিনি এই দেশে দীর্ঘ নয় বছর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।’
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আয়োজনে ‘করোনা হেল্প সেন্টার’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়া সম্পর্কে ফখরুল আরও বলেন, ‘এখনো গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে গিয়ে তিনি গৃহবন্দী হয়ে আছেন। মিথ্যা মামলায় তাকে বেআইনিভাবে সাজা দেয়া হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সরকার টিকতে পারবেনা দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পৃথিবীতে কোনো স্বৈরশাসক, একনায়ক টিকে থাকতে পারেনি। জনতার উত্তাল রোষে তাদের পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারও টিকে থাকতে পারবে না। তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।’
সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেয়ালের লিখনিগুলো পড়ুন। মানুষের চোখের ভাষা বুঝতে চেষ্টা করুন। মানুষের মনের ভাষা বুঝতে চেষ্টা করুন। আপনাদের ব্যর্থতার জন্য পদত্যাগ করুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। সেই অপরাধ থেকে যদি রক্ষা পেতে চান অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে জনগণ যেন তার পছন্দের সরকার নির্বাচিত করতে পারে সেই ব্যবস্থা করুন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ইসহাক সরকারসহ সকল ছাত্র নেতা, যুব নেতার উপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। থানায় নিয়ে গিয়ে তাদের পায়ে গুলি করে পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে। আমরা ভুলে যাইনি সেসব কথা। এখনো ঘরে ঘরে গিয়ে পুলিশ হয়রানি করছে। কারণ কি? কারণ বিএনপি জেগে উঠেছে।’
এ সময় ফখরুল জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের তত্ত্বাবধায়নে নতুন করে বিএনপিকে সাজানো হচ্ছে, নতুন কমিটি করা হচ্ছে। এতে নতুন জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনার শুরু থেকে আমরা আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ত্রাণ দিয়ে আসছি। কিন্তু যারা আজকে অস্ত্র দেখিয়ে জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে তারা করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি, ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘একজন স্বাস্থ্যমন্ত্রী আছেন যার প্রতিটি কথা মিথ্যা। তারা করোনা মোকাবেলা করতে গিয়ে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন।’
শুধু স্বাস্থ্য খাতই নয়, দেশের প্রত্যেক সেক্টরে চরম অরাজকতা, দুর্নীতি ও নৈরাজ্য বিরাজ করছে বলে দাবি করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, ১৯৭২-৭৫ সালে বাকশাল গঠনের মাধ্যমে যেভাবে এক ব্যক্তির পুঁজা হয়েছিল, আজকে আবার একইভাবে এক ব্যক্তির পুঁজা শুরু হয়েছে। দেশকে রক্ষা করতে হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাতে হবে।’