বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আছে কেবল আয়া

  •    
  • ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০৮:৩১

ঘোষগাঁও ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের ফজলুল হক বলেন, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির চতুর্দিকে পানি আর ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। আশপাশে রয়েছে গাছপালা ও বাঁশঝাড়। ফটক খোলা, কিন্তু ভিতরে কোনো সাড়াশব্দ নেই। দেখে মনে হবে পুরোনো কোনো বাড়ি। অনেকে হাসি-তামাশা করে এটিকে ‘ভূতুড়ে বাড়ি’ নাম দিয়েছেন।”

ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং মা ও শিশুদের সেবা নিশ্চিতে রয়েছে পাঁচটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। নিয়মিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো খোলা হলেও অধিকাংশ সময়ই সেখানে থাকেন না চিকিৎসক।

স্থানীয়দের অভিযোগ, চিকিৎসক না থাকায় তারা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে ফেরত আসেন। জরুরি প্রয়োজনে যেতে হয় উপজেলা হাসপাতালে। বিনা মূল্যে এসব কেন্দ্রে সরকারি ওষুধ দেয়ার কথা থাকলেও তাও মেলে না।

উপজেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেহাল ঘোষগাঁও ইউনিয়ন কেন্দ্রের। এখানে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে মা ও শিশুরা কোনো স্বাস্থ্যসেবা পান না। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে একজন আয়া ছাড়া কাউকে দেখা যায় না। তিনি প্রতিদিন ফটকটি খোলেন। খোলা ফটক দেখে অনেকে চিকিৎসা নিতে গিয়ে দেখেন সেখানে চিকিৎসক নেই।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় থেকে জানা যায়, সাধারণ রোগী, মা ও শিশুর সেবা, প্রসূতিদের বিভিন্ন পরামর্শ দেয়াসহ পরিবার পরিকল্পনাসংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা রয়েছে এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে পরিবার পরিকল্পনা মাঠকর্মী হিসেবে ৩২টি পদে কর্মরত আছেন ১৮ জন।

ঘোষগাঁও ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের ফজলুল হক অভিযোগ করেন, ইউনিয়নের কোনো কোনো পরিবারে ৮ থেকে ৯ জন সদস্য রয়েছে। অথচ পরিবার পরিকল্পনার বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেই স্বাস্থ্যকর্মীদের। এ ছাড়া সরকারিভাবে যেসব ওষুধ বরাদ্দ দেয়া হয় তাও পান না ইউনিয়নবাসী।

তিনি বলেন, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির চতুর্দিকে পানি আর ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। আশপাশে রয়েছে গাছপালা ও বাঁশঝাড়। ফটক খোলা, কিন্তু ভিতরে কোনো সাড়া-শব্দ নেই। দেখে মনে হবে পুরোনো কোনো বাড়ি। অনেকে হাসি-তামাশা করে এটিকে ‘ভূতুড়ে বাড়ি’ নাম দিয়েছেন।”

একই গ্রামের জলিল উদ্দিন জানান, ইউনিয়নের স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর্মী যান না। শুধু আয়াকে পাওয়া যায়। এতে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নারী ও শিশুরা।

তিনি অভিযোগ করেন, উপজেলার প্রত্যেকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একই অবস্থা। তবে দেখার কেউ নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করেছেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুলতান উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘উপজেলার প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই জনবল সংকট রয়েছে। তবুও মাঠকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য। তবুও যারা কাজে গাফিলতি করবে তাদের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দেয়া হবে।’

ময়মনসিংহ জেলা সিভিল সার্জন ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সেবার মান নিশ্চিত করতে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা না দিয়ে কাজে কেউ গাফিলতি করলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর