চলতি বছর থেকেই ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্টের আওতায় আনতে চায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। এ বছর যেসব শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন, তাদের দিয়েই মূলত ডোপ টেস্ট কার্যক্রম শুরুর চেষ্টা করা হবে।
টেস্টের খরচ শিক্ষার্থীরা নাকি বিশ্ববিদ্যালয় বহন করবে, সেটি এখনও ঠিক করা হয়নি।
নিউজবাংলাকে শুক্রবার এসব তথ্য জানিয়েছেন ডোপ টেস্ট নিয়ে গঠিত কমিটির সদস্য সচিব এবং বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারের প্রধান কর্মকর্তা ডা. সারওয়ার জাহান মুক্তাফী।
তিনি বলেন, ‘এই বছর যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি হবে, তাদের দিয়েই মূলত ডোপ টেস্ট কার্যক্রম শুরু হবে। তাদের টার্গেটে রেখেই আমরা এটি শুরু করব।’
৩১ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের এক নিয়মিত সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি এবং শিক্ষক নিয়োগে ডোপ টেস্ট কার্যকর করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ লক্ষ্যে ডোপ টেস্টের সক্ষমতা যাচাইয়ে ডিনস কমিটির করা সাত সদস্যের একটি কমিটি অনুমোদন দেয় সিন্ডিকেট।
কমিটির প্রধান করা হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর চিকিৎসাবিজ্ঞান ও গবেষণা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞাকে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রহমতুল্লাহ, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুর রহমান, চিকিৎসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শাহরিয়ার নবী, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান জোবেদা খাতুন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. সারওয়ার জাহান মুক্তাফী।
৭ সেপ্টেম্বর এ কমিটির প্রথম সভা হয়। এতে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে কমিটি সদস্য ও চিকিৎসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শাহরিয়ার নবী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা কোন জায়গায় এই টেস্ট করাব, কীভাবে করানো হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ল্যাবরেটরি আছে, সেগুলোকে উন্নত করে এই টেস্ট করানোর সুযোগ আছে কি না, সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
টেস্টের খরচ বহনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু না। আমরা শুধু কোন জায়গায় টেস্ট করাতে কী খরচ, সেটি কর্তৃপক্ষকে জানাব। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে এই খরচ কে বহন করবে।’
কমিটির সদস্য সচিব ডা. সারওয়ার জাহান মুক্তাফী বলেন, ‘কমিটির সদস্যরা ডোপ টেস্ট নিয়ে একটি প্রস্তাব তৈরি করছে। কোথায় থেকে টেস্ট করানো হবে, খরচটা কীভাবে বহন করা হবে, এগুলো নিয়েই উনারা প্রস্তাব দেবেন।
‘এ প্রস্তাবগুলোই কমিটির আগামী সভায় আলোচনা হবে। এগুলোই পরবর্তী সময়ে ডিনস কমিটি, প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি, এরপর সিন্ডিকেটে সভায় যাবে। সেখানেই ডোপ টেস্ট নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।’
নতুন সভা কবে হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেহেতু নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির সময় এটি কার্যকর করার চেষ্টা করা হবে, তাই এটি নিয়ে এখনই তাড়াহুড়া করা হচ্ছে না। কিছুদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম শুরু হবে।
‘সেটির জন্য এখন একটু ব্যস্ত সময় যাচ্ছে। ভ্যাকসিনেশন শুরু করতে পারলে পরে আরেকটা সভায় আমরা বসব।’
টেস্টের খরচের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো প্রাইভেট সংগঠনে যেতে চাই না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়েই হয়তো আমাদের টেস্ট করাতে হবে। এখানেই মূলত খরচটা সবচেয়ে কম। এই টেস্টে দুই ধরনের খরচ আছে।
‘একটা প্রায় ৫০০ টাকা; অন্যটি এক হাজার টাকার মতো। এই দুটিই প্রস্তাব হিসেবে আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে। তবে এ খরচটা বিশ্ববিদ্যালয় নাকি শিক্ষার্থীরা বহন করবে, এটি পুরোপুরি আলোচনা হয়নি। প্রস্তাব আকারে সব সদস্য থেকে নিয়ে তারপর এটি আলোচনা করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘ডোপ টেস্ট নিয়ে গঠিত কমিটি কাজ করছে। তাদের রিপোর্ট জমা পড়লে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।’