নড়াইল পৌরসভা প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৭২ সালে। প্রায় ৫০ বছরে এ পৌরসভায় গড়ে ওঠেনি কোনো পরিকল্পিত ড্রেনেজ-ব্যবস্থা। এ সময়ে ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে মাত্র ৩ কিলোমিটার, অথচ প্রয়োজন ৫৫ কিলোমিটার।
ড্রেনেজ-ব্যবস্থা না থাকায় এখন সামান্য বৃষ্টিতেই নাকাল হচ্ছে পৌরবাসী। প্রতিবছরই বর্ষাকালসহ অন্য সময় বৃষ্টিতে পৌরসভাজুড়ে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এবারও বর্ষা মৌসুমে একাধিকবার জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
সবশেষ এক সপ্তাহে কয়েক দফা বৃষ্টিতে পৌরসভার বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, দোকান, বাসাবাড়ি ও অফিস চত্বরে পানি জমে যায়। অনেক জায়গায় ঘরের ভেতর পানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে আসবাবপত্র।
ঘরে পানি ঢোকায় রান্না করতেও পারেননি অনেকে। এ ছাড়া জলাবদ্ধতার পানি মাড়িয়ে যেতে হয়েছে অফিস-আদালতে।
পৌরসভার দুর্গাপুর, ভওয়াখালী, কুড়িগ্রাম, মাছিমদিয়া, আলাদাতপুর, দক্ষিণ নড়াইল, মহিষখোলা, বরাশুলা, ভাটিয়া ও সিটি কলেজ পাড়ায় এ সমস্যা প্রকট।
পৌর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নড়াইল পৌর এলাকায় ৫৫ কিলোমিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থার প্রয়োজন হলেও আছে মাত্র তিন কিলোমিটার। এতে বৃষ্টির পানি সহজে বের হতে না পেরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
দুর্গাপুর এলাকার আল-আমিন, ভওয়াখালীর রিয়াজ রহমান, রূপগঞ্জের পলি রহমানসহ পৌরবাসী জানায়, ১৯৭২ সালে গঠিত নড়াইল পৌরসভা প্রথম শ্রেণির হলেও ড্রেনেজ-ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি। বিলসহ নিচু জমিতে অপরিকল্পিত বাড়িঘর করায় সামান্য বৃষ্টিতেই প্লাবিত হচ্ছে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা।
এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় নতুন নতুন বাড়িঘর গড়ে উঠলেও তেমন কোনো রাস্তা নেই। গা ঘেঁষাঘেঁষি করে ঘর নির্মাণ করায় সহজে পানি বের হতে পারছে না। নতুন এসব রাস্তা এতটাই সরু, একটা ভ্যান বা রিকশাও চলাচল করতে পারে না। অনেক এলাকায় শুধু হাঁটার মতো পথ রয়েছে।
তারা আরও জানায়, দুর্গাপুর, ভওয়াখালী, বরাশুলাসহ বিভিন্ন এলাকায় নির্মাণাধীন রেললাইনের কারণেও বৃষ্টির পানি বের হতে পারছে না। এ বিষয়ে রেললাইন প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের তেমন কোনো ভূমিকাও তাদের চোখে পড়েনি।
নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা জানান, পৌর এলাকায় ড্রেন প্রায় নেই বললেই চলে। এ কারণে বৃষ্টির পানি সহজে বের হতে পারছে না।
এ ছাড়া বেশির ভাগ ড্রেনই অপরিকল্পিত ও বিচ্ছিন্নভাবে তৈরি করা হয়েছে। আর শহরসংলগ্ন চিত্রা নদী ছাড়া পানি নিষ্কাশনের তেমন কোনো মাধ্যম নেই। পৌরবাসীর কষ্ট লাঘবে পরিকল্পিত ড্রেনেজ-ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন।