গত শুক্রবার রংপুর থেকে বিমানযোগে ঢাকায় পৌঁছান ইসলমি বক্তা মুফতি যুবায়ের আহমাদ। এরপর থেকেই তার আর খোঁজ নেই বলে দাবি করেছে পরিবার।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে মুফতি যুবায়ের আহমাদের সন্ধান চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। এ সময় স্বামীকে খুঁজে দিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান যুবায়েরের স্ত্রী বিলকিস আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে বিলকিস বলেন, ‘মুফতি যুবায়ের আহমাদ সাহেব বাংলাদেশের একজন পরিচিত মুখ আলেম। যিনি কোনো রাজনৈতিক দল-মত, বিশৃংখলা বা রাষ্ট্রবিরোধী কাজের সঙ্গে জড়িত নন।
‘তার কোনো বক্তব্য কিংবা লেখায় কখনও কোনো প্রকার উস্কানিমূলক, দেশ ও সরকারবিরোধী এমন কোনো কিছুই খুঁজে পাওয়া যাবে না। তার প্রতিটা কাজই দৃশ্যমান। লুকিয়ে কোনো কাজ করতেন না। বিভিন্ন সময়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত অনেকেই উনার প্রশংসা করেছেন। সারা দেশের মানুষ, সকল উলামায়ে কেরামদের মধ্যে উনার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।’
যুবায়েরের স্ত্রী দাবি করেন, দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল যেখানে ধর্ম শিক্ষার অভাব রয়েছে সেইসব এলাকায় মক্তব-মাদ্রাসা পরিচালনা করেন যুবায়ের। শিশুদেরকে কালামে পাক শিক্ষা দেন। করোনার মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রংপুরের বিভিন্ন মাদ্রাসা পরিদর্শন ও কীভাবে কার্যক্রম শুরু করা যায় সেসব বিষয়ে পরামর্শ দিতে কিছুদিন আগে তিনি সফরে বের হন। পরে গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিমানযোগে বিকেল ৫টার একটি ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান।
বিমান থেকে নেমে পরিবারের কাছে কল করে যুবায়ের জানান, তার ফিরতে কিছুটা দেরি হতে পারে। এরপর থেকেই তার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
যুবায়েরের নিখোঁজের ব্যাপারে ইতোমধ্যেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চেয়েছে তার পরিবার। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো থানায়ই সাধারণ ডায়রি নিচ্ছে না বলে দাবি করেন বিলকিস।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি আকুল আবেদন জানাচ্ছি, তিনি যেন আমার নিরপরাধ স্বামীকে খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ নির্দেশ দেন। আমরা অনেক দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। তিনিও যেন একজন পিতাহারা নারী হিসেবে আমার সন্তানদের দুঃখ কষ্টগুলো অনুধাবন করেন।
‘আশা করছি তিনি আমার স্বামী ও আমার সন্তানদের পিতাকে অবিলম্বে গুরুত্ব সহকারে খুঁজে বের করতে নির্দেশ দেবেন।’
বিলকিস জানান, মুফতি যুবায়ের ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন। তিনি কখনো কোনো অমুসলিমকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ম চাপিয়ে দেননি বা জোর করে দাওয়াতও দেননি। কারণ তিনি দৃঢভাবে এই কথায় বিশ্বাস করতেন যে, ধর্ম কোনো চাপিয়ে দেয়ার বিষয় নয়। কিন্তু ধর্মের দাওয়াত দেয়া জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মুফতি যুবায়ের আহমাদের ছোট ভাই মো. হাবিবুল্লাহ, মো. হিজবুল্লাহ প্রমুখ৷