দেশে বর্ষা মৌসুমে সাপের ছোবলের ঘটনা বেশি ঘটে। এ সময় সাপে কাটার শিকার বেশি হয় গ্রামের মানুষ। অথচ উপজেলা পর্যায়ে দেশের বেশিরভাগ সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সাপের বিষের প্রতিষেধক (অ্যান্টিভেনম) নেই।
এমন বাস্তবতায় সব হাসপাতালে অ্যন্টিভেনম সরবরাহের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
চতুর্থ আন্তর্জাতিক সর্পদংশন সচেতনতা দিবস উপলক্ষে রোববার ভার্চুয়াল এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ নির্দেশ দেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতি বছর আনুমানিক ছয় লাখ মানুষ সাপের কামড়ের শিকার হন। আর সাপের কামড়ে মারা যান ছয় হাজার মানুষ।
‘সাপের কামড়ে যেন প্রাণহানি না হয়, সে জন্য উপজেলা পর্যায়সহ সবখানে অ্যান্টিভেনম ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু অ্যান্টিভেনম নিশ্চিত করলেই হবে না, পাশাপাশি প্রশিক্ষিত জনবল থাকতে হবে। মাঝে মাঝে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করতে হবে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘সাপের কামড়ে মৃত্যু নন কমিউনিকেবল ডিজিজ (ছোঁয়াচে নয় এমন রোগ)। এমনিতেই এমন নন কমিউনিকেবল ডিজিজে অনেক মৃত্যু হচ্ছে। প্রতি বছর ক্যানসারে বহু মানুষ মারা যাচ্ছে, স্ট্রোক করে অনেক মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে।
‘সড়ক দুর্ঘটনায়ও প্রতি বছর অনেক লোকের মৃত্যু হয়। দেশে সাপের কামড়ের শিকার হচ্ছে বছরে ছয় লাখের মতো মানুষ। বিশ্বের এই পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর ৫০ লাখের অধিক মানুষ সাপের কামড়ের শিকার হচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় ১ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে। সাপের কামড়ের কারণে মৃত্যু না হলেও বহু মানুষের অঙ্গহানির ঘটনা ঘটে। অর্থাৎ তিন থেকে চার লক্ষ মানুষের সাপের কামড়ের কারণে অঙ্গহানির ঘটনা ঘটে।’
মৃত্যুহার কমানোর উপায়
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সাপে কাটা প্রতিরোধে আমরা যদি সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম হাতে নিই, মানুষকে সচেতন করি বিভিন্নভাবে, গ্রামগঞ্জে বিভিন্ন ধরনের সভা-সেমিনার করি, মানুষকে যদি বোঝাতে পারি সাপে কামড়ালে আতঙ্কিত না হয়ে, সময় নষ্ট না করে প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করে হাসপাতালে আনার ব্যবস্থা করেন, তাহলে অনেক মৃত্যু কমে আসবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) নাসিমা সুলতানা, অধিদপ্তরের মুখপাত্র নাজমুল ইসলামসহ অনেকেই।