পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হলেও সেসব কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে এমন নয়।
বরং গত আগস্ট ও পরে সেপ্টেম্বরে মোট ১২টি কোম্পানির দর বৃদ্ধি তদন্ত করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে, তার মধ্যে বেশির ভাগ কোম্পনির শেয়ার দর আরও বেড়েছে। এর মধ্যে একটির দর আছে অপরিবর্তিত। আর চারটির দর সামান্য কমেছে।
এই তিনটি কোম্পানির শেয়ার দরই তদন্তের আদেশ দেয়ার আগে থেকেই সংশোধনের মধ্যে ছিল।
গত ৯ আগস্ট ৯টি এবং ১৩ সেপ্টেম্বর ৪টি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কোম্পানিকে (ডিএসই) নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
এর মধ্যে ১৩ সেপ্টেম্বর যে চারটি কোম্পানি নিয়ে তদন্ত করতে বলা হয়েছে, তার মধ্যে একটির নাম ছিল ৯ আগস্টের আদেশে। বিএসইসির সেই আদেশের পর দাম বেড়েছে আরও ৩০ শতাংশের বেশি।
দুবারই দেখা গেছে, আদেশ আসার পরপর বিনিয়োগকারীদের একাংশ আতঙ্কে শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। কিন্তু পরে আফসোস করেছেন।
বিএসইসির আদেশে অস্বাভাবিকভাবে মোট ১২টি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির বিষয়টি তদন্ত করছে ডিএসই
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দর বৃদ্ধির তদন্তের খবরে স্বাভাবিকভাবে সেই কোম্পানির শেয়ার কিছুটা প্রভাব পড়ে সত্য। কিন্তু তদন্ত করলেই যে শেয়ার দর কমবে, সেটি সত্য নয়। বরং পুঁজিবাজারে শেয়ারের চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতেই শেয়ার দর নির্ধারিত হয়ে থাকে।’
তিনি বলেন, ‘যে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বৃদ্ধির কারণ তদন্ত করতে বলা হয়েছে, সেগুলোর সবগুলোই দুর্বল ও স্বল্প মূলধনি। ফলে এসব কোম্পানির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগাকরীদের আগ্রহ পুঁজিবাজারের জন্য খবুই ঝুঁকিপূর্ণ। এসব শেয়ারে বিনিয়োগ না করাই উত্তম।’
ডিএসই যে তদন্ত করছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য এখনও প্রকাশ হয়নি। জানতে চাইলে ডিএসইর উপমহাব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তদন্তের জন্য ডিএসইর আলাদা বিভাগ আছে। তারই এটি দেখভাল করে থাকে। আরএনডি বিভাগ এ সম্পর্কে বলতে পারবে।’
তবে আরএনডি বিভাগ সাধারণত গণমাধ্যমের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে না।
সেই ৯ কোম্পানির চিত্র
৯ আগস্ট যে ৯টি কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ আসে, তার মধ্যে ৫টির দাম আরও বেড়েছে। সামান্য কমেছে তিনটি দর। তবে এই আদেশ দেয়ার আগেই কোম্পানি তিনটির শেয়ার দর সংশোধনের মধ্যেই ছিল।
আনোয়ার গ্যালভানাইজিং
এই কোম্পানিটির শেয়ার দরও গত এক বছরে বেড়েছে ব্যাপকভাবে। এ সময়ে শেয়ারটির সর্বনিম্ন দর ছিল ৯২ টাকা ৮০ পয়সা, আর সর্বোচ্চ দর ৪৬৪ টাকা ৫০ পয়সা। গত দুই বছরে সর্বনিম্ন দর ছিল ৫৭ টাকা ৮০ পয়সা।
তবে উত্থান শুরু হয় মূলত গত ১১ এপ্রিল থেকে। সেদিন শেয়ার দর ছিল ৯৫ টাকা ২০ পয়সা। এরপর থেকে তেজি ষাঁড়ের মতো ছুটতে ছুটতে ৯ আগস্ট ৩১৯ টাকা ৮০ পয়সায় উঠে যাওয়ার পর আসে তদন্তের আদেশ।
পরদিন শেয়ারপ্রতি দর ৯ টাকা ৩০ পয়সা কমে ৩১০ টাকা ৫০ পয়সা হয়ে যায়। কিন্তু এরপর আবার বাড়তে থাকে। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৪৫২ টাকা ২০ পয়সা।
পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং
ওটিসি থেকে ১৩ জুন মূল মার্কেটে আসার পর চারটি কোম্পানির শেয়ার দর যে পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটছে, তার একটি এটি।
ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফেরার দিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ১৬ টাকা। তদন্তের আদেশ আসার দিন দর ছিল ১৬৪ টাকা ৭০ পয়সা। আদেশ আসার খবরে পরদিনই দাম কমে হয়ে যায় ১৫৫ টাকা ৩০ পয়সা। কিন্তু পরে আবার বাড়তে থাকে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফায় তদন্তের আসার আদেশ আসার দিন শেয়ারপ্রতি দর ছিল ২১৮ টাকা। সেটি আরও বেড়ে এখন হয়েছে ২২৫ টাকা ৩০ পয়সা।
গত এক বছরে কোম্পানিটির সর্বনিম্ন দর ১৭ টাকা ৬০ পয়সা হলেও এই দরে শেয়ার বিক্রি হয়েছে খুবই কম। ওটিসি মার্কেট থেকে আসার পর গত ১৪ এপ্রিল ৩০ হাজারের কিছু বেশি শেয়ার বিক্রি হয়। সেদিন এর দাম ছিল ১১৫ টাকা ৮০ পয়সা।
পরের দিন ৪ লাখ ৮৬ হাজার ২৯৪টি শেয়ার বিক্রি হয়, সেদিনই মূলত সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কেনার সুযোগ পেয়েছেন। সেদিন দর ছিল ১২৭ টাকা ৩০ পয়সা।
এমারেল্ড অয়েল
তদন্তের জন্য এই কোম্পানিটিকে বাছাই করা নিয়েই ছিল প্রশ্ন। স্পষ্টত কোম্পানিটির মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছিল আর সেটি ছিল প্রকাশিতই।
বেসিক ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারিতে ২০১৬ সালে কোম্পানি বন্ধ করে গিয়ে মালিকপক্ষ লাপাত্তা হয়ে গিয়েছিল। সেই কোম্পানিটিতে প্রাণ ফেরাতে বিএসইসির উদ্যোগে ব্যবস্থাপনায় এসেছে জাপানপ্রবাসী বাংলাদেশির কোম্পানি মিনোরি বাংলাদেশ।
গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে উৎপাদন শুরু হওয়ারও কথা ছিল। তবে বেসিক ব্যাংকের ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে জটিলতা এবং আরও কিছু লাইসেন্সের কাজ শেষ না হওয়ায় সেই উৎপাদন শুরু করা যায়নি।
তবে ব্যাংকের সঙ্গে জটিলতার অবসান এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। কারণ, আগের পর্ষদের নেয়া ঋণের সুদ মওকুফে অনুরোধ করেছে বিএসইসি। আর ব্যাংকটি তা বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে। আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে আবার উৎপাদন শুরু হতে পারে।
ডিএসইর তদন্ত চলাকলে এই চারটি কোম্পানির শেয়ার দর সামান্য কমেছে
তদন্তের আদেশ আসার দিন এমারেল্ডের শেয়ার দর ছিল ৩৬ টাকা ৫০ পয়সা। পরে তা কমে একপর্যায়ে ৩১ টাকা ৫০ পয়সায় নেমে আসে। তবে পরে সেখান থেকে বেড়ে ৪৪ টাকাও উঠে যায় গত বৃহস্পতিবার। তবে শেষ পর্যন্ত সেদিন লেনদেন শেষ করেছে ৪২ টাকায়।
গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বনিম্ন দর ছিল ৯ টাকা ৫০ পয়সা। আর সর্বোচ্চ দর ছিল ৪৪ টাকা।
জিবিবি পাওয়ার
গত এক বছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে এটির শেয়ার দর বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। এক বছরে সর্বনিম্ন দর ছিল ১২ টাকা ৮০ পয়সা, আর সর্বোচ্চ দর ৫১ টাকা ১০ পয়সা। গত ২ বছরে সর্বনিম্ন দর ছিল ৯ টাকা ৪০ পয়সা।
৯ আগস্ট তদন্তের নির্দেশ আসার দিন শেয়ার দর ছিল ৩৭ টাকা ১০ পয়সা। পরের দিন দাম কমে হয় ৩৫ টাকা ৬০ পয়সা। সেখান থেকে বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে ছাড়ায় ৫০ টাকা। সেখান থেকে খানিকটা কমে গত বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৪৮ টাকা ৮০ পয়সা।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স
এই কোম্পানিটির শেয়ার দর এক বছরে ২৫ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে সর্বোচ্চ ১৬৯ টাকা ৭০ পয়সা পর্যন্ত উঠেছিল। গত ২ বছরের সর্বনিম্ন দর ১৪ টাকা ৭০ পয়সা।
শেয়ার দর বৃদ্ধির কারণ খতিয়ে দেখার দিন শেয়ারমূল্য ছিল ১১৯ টাকা। সে সময় সংশোধনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল এই কোম্পানিটির পাশাপাশি গোটা খাত। তদন্ত চলাচালেই দাম গত ৫ সেপ্টেম্বর একপর্যায়ে বেড়ে ১৬১ টাকা ৬০ পয়সায় উঠে যায়। এরপর ৯ কর্মদিবসের মধ্যে ৮ কর্মদিবস দরপতন হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৩০ টাকা ৪০ পয়সা। এটিও তদন্তের আদেশ দেয়ার দিনের চেয়ে ১১ টাকা ৪০ পয়সা বেশি।
যেগুলোর দর সামান্য কমেছে
বিকন ফার্মা
এই কোম্পানিটির শেয়ার দর বৃদ্ধির বিষয়টিও বিস্ময়কর। গত দুই বছরে কোম্পানিটির সর্বনিম্ন দর ছিল ২৫ টাকা আর সর্বোচ্চ দর ২২৪ টাকা ৯০ পয়সা। এক বছরে সর্বনিম্ন দর ৬৫ টাকা ৯০ পয়সা।
৯ আগস্ট তদন্তের নির্দেশ দেয়ার দিন শেয়ারমূল্য ছিল ২২২ টাকা ১০ পয়সা। এই আদেশ আসার পর দুই কর্মদিবস কমে ১৯৯ টাকা ৪০ পয়সায় নেমে আসে। পরে আবার বাড়তে থাকে।
গত ১২ সেপ্টেম্বর ৯ সেপ্টেম্বরের দামকে ছাড়িয়ে শেয়ার দর দাঁড়ায় ২২৭ টাকা ৯০ পয়সা। সেখান থেকে কিছুটা কমে বৃহস্পতিবার দর দাঁড়িয়েছে ২১৭ টাকা ৩০ পয়সা।
ঢাকা ডাইং
গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য ছিল ৬ টাকা ৯০ পয়সা, আর সর্বোচ্চ দর ২৯ টাকা ৫০ পয়সা। গত ২ বছরের সর্বনিম্ন দর ২ টাকা ৮০ পয়সা।
কোম্পানিটির শেয়ার দর গত বছরের এপ্রিল থেকেই বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে। ২০১৫ সালের পর ২০২০ সালের জন্য প্রথমবারের মতো ১ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি ১০ পয়সা লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। এর আগের দুই বছর আয় ব্যয়ের হিসাব না দেয়া কোম্পানিটি চলতি বছর তিন প্রান্তিকেও মুনাফায় ফিরেছে।
কোম্পানিটি গত বছর যে মুনাফায় ফিরেছে, সেই ইঙ্গিতও ছিল না। তার পরেও এই সময়ে ৬ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ২৬ টাকা ৭০ পয়সায় উঠে যায় তদন্তের আদেশ আসার দিন।
বিএসইসির নির্দেশ আসার পর দাম কমে ২৩ টাকায় নেমে এলেও পরে তা আবার বাড়তে শুরু করে। সবশেষ দাম দাঁড়িয়েছে ২৫ টাকা ৭০ পয়সা। যদিও একপর্যায়ে দাম ২৬ টাকা ৭০ পয়সাকে ছাড়িয়ে ২৮ টাকায় উঠেছিল। এখন গোটা বস্ত্র খাতের শেয়ার দরই সংশোধনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
ন্যাশনাল ফিড মিলস
গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ার দর সর্বনিম্ন ছিল ৯ টাকা ২০ পয়সা। সেখান থেকে বাড়তে বাড়তে ৪৪ টাকা ৮০ পয়সায় উঠে গিয়েছিল। পরে কমতে শুরু করে।
তদন্তের আদেশ আসার দিনও দাম ১০ পয়সা কমে ৩৩ টাকা ৯০ পয়সায় দাঁড়ায়। এরপর ২ কর্মদিবসে আরও কমে দাঁড়ায় ৩১ টাকা।
পরে ওঠানামা করতে করতে গত বৃহস্পতিবারও এই দামেই লেনদেন শেষ করেছে। মাঝে একবার অবশ্য তদন্তের নির্দেশ আসার দিনের দামকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। গত ৫ সেপ্টেম্বর লেনদেন শেষ করে ৩৪ টাকা ৫০ পয়সায়।
ফুওয়াং সিরামিক
গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ার দর সর্বনিম্ন ৮ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ২৮ টাকা ৬০ পয়সা পর্যন্ত উঠেছে। গত ২ বছরের সর্বনিম্ন দর ৫ টাকা ৭০ পয়সা।
৯ আগস্ট তদন্তের নির্দেশ আসার দিন শেয়ারমূল্য ছিল ২৬ টাকা ৩০ পয়সা। এরপর ওঠানামা করে সর্বোচ্চ দাম হয় ৫ সেপ্টেম্বর ২৬ টাকা ২০ পয়সা।
এরপরের ৯ কর্মদিবসের মধ্যে ৮ কর্মদিবস দরপতন হয়েছে। এক দিন বেড়েছে। সবশেষ শেয়ারমূল্য দাঁড়িয়েছে ২২ টাকা ৪০ পয়সা।
ওটিসি থেকে ফেরা চারটি কোম্পানির তদন্তের আদেশ দেয়ার পর তিনটি দর আরও বেড়েছে, একটির কমে আবার সমান হয়েছে
ওটিসিফেরত কোম্পানির কী চিত্র
এই চারটির মধ্যে পেপার প্রসেসিংয়ের নাম আগের ৯ কোম্পানির মধ্যেই ছিল।
- আরও পড়ুন: শেয়ার দর ১৫ গুণ হওয়ার পর তদন্তের নির্দেশ
বাকি তিনটির মধ্যে ১৫ সেপ্টেম্বর তদন্তের আদেশ আসার দিন তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের শেয়ার দর ছিল ১৮০ টাকা ৪০ পয়সা।
এই কোম্পানিটি ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফিরেছে ১৩ টাকায়। তবে শুরুতে শেয়ার বিক্রি হয়নি বললেই চলে। প্রথমবারের মতো এক দিনে ৫০ হাজারের বেশি শেয়ার বিক্রি হয়েছে গত ১২ জুলাই। সেদিন দর ছিল ৭১ টাকা ৭০ পয়সা।
১৫ জুলাই শেয়ার দর ৯০ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার পর কিছুদিন ওঠানামা করতে থাকে। ওটিসিফেরত চারটি কোম্পানির মধ্যে একটি নিয়ে তদন্তের আদেশ আসার দিন এই কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৭৭ টাকা ৯০ পয়সা। পরদিন ২ টাকা ৪০ পয়সা কমে দাম দাঁড়ায় ৭৫ টাকা ৫০ পয়সা।
এরপর রীতিমতো উড়তে থাকে শেয়ারটি। গত ৯ সেপ্টেম্বর তা ২০২ টাকায় পৌঁছে।
১৩ সেপ্টেম্বর তদন্তের আদেশ আসার দিন দাম কিছুটা কমে হয় ১৮০ টাকা ৪০ পয়সা। পরের কর্মদিবসে সেখান থেকে প্রায় ১০ শতাংশ কমে ১৬২ টাকা ৯০ পয়সায় দাঁড়ায় শেয়ার দর। কিন্তু তার পরের দুই কর্মদিবসে আবার বেড়ে হয় ১৮৪ টাকা ৫০ পয়সা।
ওটিসি থেকে মনোস্পুল পেপার ফিরেছে ৫০ টাকা দর নিয়ে। তবে ১০০ টাকার নিচে শেয়ার বিক্রি হয়েছে কমই। গত ২৭ জুন ২৫ হাজার ১৯৫টি শেয়ার হাতবদলের দিন দাম ছিল ১৪২ টাকা ১০ পয়সা। তার পরদিন ২ লাখ ২৮ হাজার ৬১৭টি শেয়ার বিক্রি হয় ১৫৬ টাকা ৩০ পয়সায়। সেদিনই মূলত ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীরা শেয়ারটি পেয়েছেন।
গত ৯ আগস্ট ৯টি কোম্পানির শেয়ার নিয়ে তদন্তের নির্দেশ আসার দিন ১৭৫ টাকা ৯০ পয়সা দর ছিল কোম্পানিটির। যদিও সেই তদন্তে এই কোম্পানিটির নাম ছিল না, তারপরেও পরের দিন শেয়ার দর খানিকটা কমে হয় ১৬৮ টাকা ৯০ পয়সা। এরপর তা বাড়তে বাড়তে সেপ্টেম্বরে একপর্যায়ে ২৪৯ টাকা ৮০ পয়সায় পৌঁছে।
১৩ সেপ্টেম্বর তদন্তের নির্দেশ আসার দিন শেয়ার দর ছিল ২২৩ টাকা ৯০ পয়সা। পরের দিনই দরপতন হয় ২০৮ টাকা ১০ পয়সায় বিক্রি হয় শেয়ার। কিন্তু এরপরের দুই কর্মদিবস বেড়ে গত বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ২২৯ টাকা ৫০ পয়সা।
ওটিসিফেরত চারটি কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে কম বেড়েছে মুন্নু ফেব্রিক্সের দর। ১০ টাকা দিয়ে কোম্পানিটি ফিরেছে মূল মার্কেটে। আর আসার পর টানা বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে উঠে যায় ৩৭ টাকা ২০ পয়সায়।
মূল মার্কেটে ফেরার দিন প্রথম উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শেয়ার বিক্রি হয়েছে গত ২১ জুন। সেদিন হাতবদল হয় ১৩ লাখ ৫৬ হাজার ২৩৫টি শেয়ার। সেদিন দর ছিল ১৯ টাকা ৩০ পয়সা।
গত ৯ আগস্ট ওটিসির একটিসহ ৯টি কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধির বিষয়টি তদন্তের আদেশ আসার দিন দর ছিল ২৬ টাকা ১০ পয়সা। পরের দিন দাম সামান্য কমে ২৫ টাকা ৮০ পয়সা হয়ে যায়। একপর্যায়ে দাম কমে ২৪ টাকা ৫০ পয়সা হয়ে যায়। পরে তা বাড়ার বেড়ে ৩১ টাকা ৬০ পয়সা হয়ে যায়।
১৩ সেপ্টেম্বর তদন্তের নির্দেশ আসার দিন দর ছিল ২৯ টাকা ৯০ পয়সা। আদেশের খবরে পরদিনই দাম কমে ২৮ টাকা ৫০ পয়সা হয়ে যায়। এরপর দুই দিন দাম বেড়ে গত বৃহস্পতিবার আবার ২৯ টাকা ৯০ পয়সা হয়ে যায়।