বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জাতিসংঘে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২৩:১৭

এবার জাতিসংঘের প্রধান্য দেওয়া ইস্যুগুলোর প্রত্যেকটি বাংলাদেশের জন্য সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই ইস্যুগুলোর উপর যেসব ইভেন্ট আছে বাংলাদেশ তার সব কয়টিতেই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার সকালে তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন।

২ সপ্তাহের রাষ্ট্রীয় সফরে দীর্ঘ ১৯ মাস পর বিদেশ যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। সফরকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমসহ মোট ৮০ সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হচ্ছেন। এ ছাড়াও ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধিদলও তার সঙ্গী হচ্ছে।

সফরে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার প্রধানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা ইস্যু, করোনার টিকাসহ নানা বৈষম্য ও বিভিন্ন বিষয়ে জোর দেবে বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ১৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে পৌঁছাবেন। কোভিড বাস্তবতায় এবারের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল খুব ছোট আকারে গঠন করা হয়েছে।

২১ সেপ্টেম্বর থেকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনের উচ্চ পর্যায়ের বিতর্ক পর্ব শুরু হবে। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এবারের অধিবেশনের একটি বড় অংশ জুড়ে থাকবে কোভিড-১৯ ও পরবর্তী টেকসই পুনরুদ্ধার ও পুনঃনির্মাণ। কোভিড-১৯ থেকে মুক্তিলাভের জন্য, বিশ্বব্যাপী টিকা বৈষম্য দূরীকরণের বিষয়টি এবারের অধিবেশনে বিশেষভাবে আলোচিত হবে।

এ ছাড়া আসন্ন অধিবেশনে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়টিও প্রাধান্য পাবে বলে জানান তিনি।

মোমেন বলেন, ‘এবারের কপ-২৬ থেকে বিশ্ব যাতে একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা পেতে পারে, সে বিষয়েও এবারের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ আলোচনা করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘ মহাসচিব ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর যৌথ উদ্যোগে জলবায়ু বিষয়ে সোচ্চার দেশগুলোকে নিয়ে একটি সভার আয়োজন করা হয়েছে।’

মহামারির মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অসহিষ্ণুতা, বৈষম্য-বিভেদ ইত্যাদি আশংকজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের বিভেদ নিয়ে কখনোই টেকসই পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। তাই এ বিষয়টিও এবারের অধিবেশনে আলোচনায় আসবে।’

বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবারের সম্মেলন

এবার জাতিসংঘের প্রধান্য দেওয়া ইস্যুগুলোর প্রত্যেকটি বাংলাদেশের জন্য সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই ইস্যুগুলোর উপর যেসব ইভেন্ট আছে বাংলাদেশ তার সব কয়টিতেই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

২০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ও জাতিসংঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা। সিভিএফ চেয়ার এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকির সম্মুখীন দেশ হিসেবে এটি বাংলাদেশের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সভায় প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরবেন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি নিরসনে সম্মিলিত বৈশ্বিক উদ্যোগের আহবান জানাবেন।

একই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দপ্তর চত্বরে বৃক্ষরোপন করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

২২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আয়োজিত ‘White House Global Covid-19 Summit: Ending the pandemic and building back better’ শীর্ষক এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় বক্তব্য প্রদান করবেন।

একই দিনে বাংলাদেশের আয়োজনে ‘Rohingya crisis: Imperatives for a sustainable solution’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের সাইড ইভেন্টেও অংশগ্রহণের কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। ইতোমধ্যে এই অনুষ্ঠান আয়োজনে ওআইসি, আসিয়ান এবং ইউরোপিয়ান দেশগুলোর পক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ ছাড়াও গাম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, তুরস্ক, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং ওআইসি অনুষ্ঠানটির সহ-আয়োজক।

এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা সমস্যার পঞ্চম বছরে পদার্পণ করেছি। কিন্তু পাঁচ বছরে এক জনকেও মিয়ানমারে পাঠানো সম্ভব হয় নি। অথচ বাংলাদেশের জন্য রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন সর্বোচ্চ প্রাধান্যের ইস্যু। ওই সাইড ইভেন্টের মাধ্যমে এই বক্তব্যই আমরা বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দিতে চাই।’

তিনি জানান, ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত একটি সম্মেলনেও প্রধানমন্ত্রী যোগ দেবেন। খাদ্য খাতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সাফল্য তুলে ধরার জন্য এই সম্মেলন হবে একটি অনন্য উপলক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী ওই সভায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা, কৃষি গবেষণা ও উন্নয়ন, টেকসই উৎপাদন, খাদ্য বিতরণ এবং সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অংশীজনদের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ব্যাপারে বিশ্ব নেতৃত্বকে আহবান জানাতে পারেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

একই দিনে UN Common Agenda: Action to achieve Equality and Inclusion শীর্ষক একটি উচ্চপর্যায়ের সাইড-ইভেন্টেও প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেবেন।

২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ তারিখে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাধারণ বিতর্ক পর্বে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য রাখবেন। প্রতিবারের মত এবারও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলায় বক্তব্য দেবেন। তিনি বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়ন অগ্রযাত্রা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্যখাতে সাফল্য সম্পর্কে আলোকপাত করবেন। পাশাপাশি বিশ্বশান্তি, নিরাপদ অভিবাসন, করোনা টিকার ন্যায্য বন্টন, টিকার পেটেন্টসহ মেধাস্বত্ব উন্মুক্তকরণ, ফিলিস্তিনি ও বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক সংকট, জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্পর্কিত বিষয়সমূহ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসবে।

প্রতি বছরের মত এবারও, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান আয়োজন করবেন। কোভিড মহামারির প্রেক্ষিতে ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী প্রতিবারের ন্যয় বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ, ভিয়েতনামের মহামান্য রাষ্ট্রপতি নগুয়েন জুয়ান ফুক, বার্বাডোজের প্রধানমন্ত্রী মিয়া আমোর মোটলি, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ইউরোপীয়ান কাউন্সিলের সভাপতি চার্লস মাইকেলসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিয়ে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এছাড়া প্রতিবারের মতো প্রধানমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের আয়োজনে একটি গোল টেবিল বৈঠকেও অংশগ্রহণ করবেন। এই বৈঠকে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা দেশে বিনিয়োগ পরিবেশ ও সুযোগ সুবিধার বিষয় সমূহ তুলে ধরবেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীগণ তাদের বিনিয়োগ প্রস্তাব বাংলাদেশের নিকট তুলে ধরবেন। এর মাধ্যমে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি সংযোগ তৈরি হবে।

মোমেন বলেন, এবারের সাধারণ অধিবেশনের সাইড লাইনে আমিও বেশ কয়েকটি ইভেন্টে যোগ দেবার আশা রাখছি। এর মধ্যে পারমানবিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক একটি উচ্চ পর্যায়ের সভাসহ যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি সেক্রেটারি অফ স্টেট এর সঙ্গে মন্ত্রী পর্যায়ের সভা উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও অংশ নেবেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর