বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জাপানি নাগরিকের সন্তান: মা-বাবাকে আরও সময় হাইকোর্টের

  •    
  • ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২১:৩৮

ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদকে উদ্দেশে আদালত বলে, ‘দেখেন সন্তানের ভবিষ্যত চিন্তা করে এবং দেশের ভাবমূর্তিও বাঁচবে এমন কিছু করেন, যাতে বাবা-মা দুইজন সমঝোতায় আসতে পারেন।’

দুই সন্তানের ভবিষ্যত এবং দেশের ভাবমূর্তি রক্ষায় জাপানি নাগরিক মা এবং বাংলাদেশি বাবাকে সমঝোতায় আসতে আবারও সময় দিয়েছে হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সময় দেয়।

এদিন আদালতে বাবার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। অন্যদিকে মায়ের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

আদালত সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদকে বাবা এবং মায়ের মধ্যে সন্তান নিয়ে একটি সমঝোতায় আসতে দুই পক্ষকে নিয়ে বসার দায়িত্ব দিয়েছে।

২৮ আগস্ট পর্যন্ত এ মামলার শুনানি মুলতবি করেছে আদালত। তবে এ সময় পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে এক দিন মা ও এক দিন বাবা সকাল ৮টা থেকে পরের দিন ৮টা পর্যন্ত এভাবে সন্তানের কাছে থাকতে পারবেন।

এসময় সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদকে উদ্দেশে আদালত বলে, ‘দেখেন সন্তানের ভবিষ্যত চিন্তা করে এবং দেশের ভাবমূর্তিও বাঁচবে এমন কিছু করেন, যাতে বাবা-মা দুইজন সমঝোতায় আসতে পারেন।’

২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানের নাগরিক এরিকো এবং বাংলাদেশি-আমেরিকান ইমরান শরীফ জাপানি আইনে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন।

তাদের ১২ বছরের সংসারে তিন মেয়েসন্তানের জন্ম দেন এরিকো। এরা হলেন জেসমিন মালিকা, লাইলা লিনা ও সানিয়া হেনা।

এরিকো পেশায় একজন চিকিৎসক। মালিকা, লিনা ও হেনা টোকিওর চফো সিটিতে আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের (এএসআইজে) শিক্ষার্থী ছিলেন।

এ বছরের ১৮ জানুয়ারি শরীফ ইমরান বিবাহ বিচ্ছেদের (ডিভোর্স) আবেদন করেন। ২১ জানুয়ারি ইমরান এএসআইজে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তার মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন।

স্কুল কর্তৃপক্ষ এরিকোর সম্মতি না থাকায় তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। পরে ইমরান তার মেয়ে জেসমিন ও লিনাকে স্কুলবাসে বাড়ি ফেরার পথে বাসস্টপ থেকে অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান।

২৫ জানুয়ারি ইমরান তার আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছে তার সন্তানদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। এরিকো সেটি প্রত্যাখ্যান করেন।

২৮ জানুয়ারি এরিকো টোকিওর পারিবারিক আদালতে তার সন্তানদের জিম্মার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চেয়ে মামলা করেন। আদালত ৭, ১১ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি শিশুদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে সাক্ষাতের আদেশ দেয়। ইমরান আদালতের আদেশ ভঙ্গ করে মাত্র একবার মায়ের সঙ্গে দুই মেয়ের সাক্ষাতের সুযোগ দেন।

এরিকোর অভিযোগ, ৯ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ইমরান তার মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন এবং গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন পাসপোর্ট নেন। ২১ ফেব্রুয়ারি ইমরান তার দুই মেয়ে জেসমিন ও লাইলাকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন।

দুই মেয়ের বিবৃতি ও সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে টোকিওর পারিবারিক আদালত ৩১ মে এরিকোর অনুকূলে জেসমিন ও লাইলার জিম্মা হস্তান্তরের আদেশ দেয়।

বিষয়টি নিয়ে এরিকো বাংলাদেশের একজন মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করেন। তবে করোনা পরিস্থিতির জন্য তিনি বাংলাদেশে আসতে পারেননি।

এ বছরের ১৮ জুলাই এরিকো শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে আসেন।

এরপর মা জাপান থেকে বাংলাদেশে এসে সন্তানের জিম্মা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত সন্তানদের সঙ্গে বাবা-মাকে একসঙ্গে থাকতে নির্দেশ দেয়। ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার শুনানি হয়।

এ বিভাগের আরো খবর