নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন (জেএমবি) নেতা এমদাদুল হক ওরফে উজ্জ্বল মাস্টারকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
তিন দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (নি.) শাকিল জোয়ার্দ্দার আসামিকে আদালতে হাজির করেন। নতুন করে রিমান্ড না চেয়ে উজ্জ্বল মাস্টারকে সন্ত্রাসনিরোধ আইনের মামলায় কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তিনি।
পুলিশের আবেদনে ঢাকার মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়ার আদালত আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
মোহাম্মদপুরের বছিলার সিটি ডেভেলপমেন্ট হাউজিংয়ের একটি আবাসিক ভবনে অভিযান চালিয়ে র্যাব গত বৃহস্পতিবার ভোরে জেএমবি নেতা উজ্জ্বল মাস্টারকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, আসামি এমদাদুল হক ওরফে উজ্জ্বল মাস্টার দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের সদস্য হিসেবে কাজ করে আসছেন। তিনি আত্মঘাতী কাজে জড়ানো ও জিহাদের জন্য মানুষকে প্ররোচিত করতেন। ধর্মীয় উগ্রবাদের বই সরবরাহ করতেন অনুসারীদের মাঝে। তিনি বিভক্ত জেএমবির একটি গ্রুপের শীর্ষ নেতা।
অভিযানকালে তার কাছে পাওয়া গেছে একটি পিস্তল, গুলি, বিস্ফোরক, নগদ পৌনে তিন লাখ টাকা, রাসায়নিক দ্রব্য, দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, বেশ কিছু জিহাদি ও ইসলামি উগ্রবাদের বই।
গ্রেপ্তারের পর র্যাব জানায়, ময়মনসিংহের একটি কলেজ থেকে বিএ পাস করে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন এমদাদুল হক। কিন্তু জড়িয়ে যান উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে, আর জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তাকে সেই চাকরি থেকে বাদ দেয়া হয়।
২০০২ সালে মুক্তাগাছায় একজন জঙ্গি নেতার বয়ান শুনে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হন এমদাদুল। পরে জঙ্গি সংগঠন জেএমবির প্রধান শায়খ আব্দুর রহমানের কাছে দীক্ষা লাভ করেন। জামালপুরে একটি আস্তানায় সামরিক প্রশিক্ষণও গ্রহণ করেন।
জঙ্গিবাদে ব্যাপক তৎপরতা থাকায় এমদাদুল দ্রুত ময়মনসিংহ অঞ্চলের নেতা হয়ে ওঠেন। ২০০৩ সালে মুক্তাগাছায় ব্র্যাক অফিসে ডাকাতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল তার। ২০০৭ সালে এমদাদুল হক তার নিকটাত্মীয় রফিক মাস্টারকে হত্যা করেন বলে তথ্য পেয়েছে র্যাব।
উজ্জ্বল মাস্টার ২০০৮ সাল থেকে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় নাম পরিবর্তন করে ছদ্মবেশে অবস্থান করেন। তিনি কাপড়ের দোকানের কর্মচারী, খেলনা বিক্রেতা, ফেরিওয়ালা, রিকশাচালক ও রাজমিস্ত্রির পরিচয়ে থাকেন। সর্বশেষ রাজধানীর বছিলা এলাকায় ছিলেন।