ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ জন শিশু ভর্তি হচ্ছে নিউমোনিয়া নিয়ে। শয্যা আর জনবল সংকটে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালটি।
হাসপাতালটির শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে সোমবার দেখা যায়, আটটি শয্যার বিপরীতে শিশু ভর্তি আছে ১১৪ জন, যাদের অধিকাংশই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।
শুধু এই হাসপাতালেই নয়, জেলার অন্য হাসপাতালগুলোতেও বাড়ছে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা।
সদর উপজেলার কমলাপুর গ্রামের লতিফ মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি আজ আট দিন হলো আমার ছাওয়ালকে নিয়ে হাসপাতালে আইছি। প্রথমে ঠাণ্ডা আর কাশি হইছিল। হাসপাতালে আসার পর ডাক্তার বলছে ডাবল নিউমোনিয়া। ওষুধ খাওয়াচ্ছি। আল্লাহর রহমতে এখন একটু ভালো।’
শৈলকুপা উপজেলার কাঁচেরকোল গ্রামের ২ মাস বয়সী রাবেয়াকে রোববার বিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
তার বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কাল বিকালে আইচি। ডাক্তার এখনও আসিনি। রাতে মাত্র একজন নার্স আর আয়া ছিল। ওষুধ দিয়া হয়ছে। এখন বাচ্চা ভালো আছে।’
এ সময় নিউমোনিয়ার কারণ হিসেবে সদর হাসপাতালের শিশু ও নবজাতক রোগ বিশেষজ্ঞ আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ঋতু পরিবর্তনের কারণে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। হঠাৎ গরম আবার হঠাৎ ঠাণ্ডা মূল সমস্যা। খেয়াল রাখতে হবে যেন শিশুদের গা ঘেমে না থাকে বা অতিরিক্ত ঠাণ্ডা না লাগে।
যেসব নারীরা স্তন্য দেন তাদের বেশি ঠাণ্ডা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বুকের দুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি শিশুদের সুষম খাবার দিতে হবে।
শিশুদের অসুস্থতার পাশাপাশি শয্যা ও হাসপাতাল সংকট ভাবিয়ে তুলছে স্বজনদের।
সদর উপজেলার কালুহাটি গ্রামের মো. হাবিল জানান, সদর হাসপাতালে প্রতিদিন ১ থেকে দেড়শ রোগী থাকছেন। ডাক্তার আছে মাত্র একজন।
তিনি বলেন, ‘একজন ডাক্তার এত রোগীর চিকিৎসা দেবে কী করে? সেও তো মানুষ। ইনডোর, আউটডোর মিলায়ে রোগীর তো শেষ নাই। জরুরি ভিত্তিতে আরও ডাক্তার, নার্স দরকার।’
এ বিষয়ে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. আলাউদ্দিন জানান, শিশু ওয়ার্ডে দুজন চিকিৎসক ছিলেন। কিছুদিন আগে একজন প্রশিক্ষণের জন্য গেছেন। এ কারণে একজনের ওপর সব চাপ পড়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জনবলের বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হবে।