দীর্ঘদিন পর রোববার থেকে খুলছে সারা দেশের স্কুল-কলেজ। আবারও শিক্ষার্থীদের কলকাকলিতে মুখোর হবে শিক্ষাঙ্গন।
তবে তুরাগ ও বংশী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রয়েছে অনিশ্চয়তায়।
এসব এলাকায় স্কুল খোলার আনন্দে ভাটা পড়েছে। পানিবন্দি স্কুলগুলোতে ক্লাস কবে শুরু হবে জানে না কেউ।
উপজেলার ঢালজোড়া, সূত্রাপুর ও শ্রীফলতলী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে পানি উঠেছে। এসব এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ, মসজিদ, রাস্তাঘাট, বাড়িঘরে পানি ওঠায় দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, গত দুই সপ্তাহে গাজীপুরের তুরাগ নদী, মকশ বিলসহ কয়েকটি বিলে পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যা প্লাবিত এলাকার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরসভা মিলে ১২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আটটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পাঁচটি কলেজ এবং আটটি মাদ্রাসা রয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঢুকেছে বন্যার পানি।
শুক্রবার উপজেলার ঢালজোড়া ইউনিয়নের ভাউমান ঢালজোড়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলমাঠে সাঁকো তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কয়েকজন। কোমর পানিতে বাঁশ গেড়ে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসার ব্যবস্থা করছেন তারা।
স্থানীয় আব্দুল বাসেদ জানান, ‘বাঁশ আইনা ব্রিজ করবার লাগছি, যাতে পোলাপাইনে ইস্কুলে আইবার পারে।’
মৌচাক ইউনিয়নের বাঁশতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আশপাশের কয়েকটি বিদ্যালয়ে দেখা গেছে, স্কুলের প্রবেশপথ থেকে মাঠ পর্যন্ত ডুবে আছে বন্যার পানিতে।
ভাউমান ঢালজোড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হারেজ আলী বলেন, ‘প্রতিবছরই একটু পানি হলে স্কুলের মাঠ তলিয়ে যায়। এ বছরও আমাদের স্কুল মাঠে পানি উঠেছে। যার কারণে পাঠদান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।’
একই ইউনিয়নের বাসুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মালেক হোসেন বলেন, ‘স্কুলের কাছাকাছি কোনো উঁচু জায়গা কিংবা কারো বাড়ির উঠানে ক্লাস করার জন্য আমাদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমিতা ইসলাম বলেন, ‘১২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে পানিবন্দি ১৯টি স্কুল বন্ধ থাকবে। বাকি স্কুলগুলো সরকারি নিয়ম মেনে চলমান থাকবে। বন্ধ স্কুলগুলোর বিষয়ে বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’