বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নিরপেক্ষ নির্বাচনে একমত ঢাকা-লন্ডন

  •    
  • ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০১:০৬

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উভয় দেশই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের গুরুত্ব, জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থার উন্নয়নে সুধীসমাজের উপস্থিতি ও মতপ্রকাশ এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে একমত হয়েছে।

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের গুরুত্ব, জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থার উন্নয়নে সুধীসমাজের উপস্থিতি ও মতপ্রকাশ এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে একমত হয়েছে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ।

একই সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রভাব, বিধিবহির্ভূত আটক, বিধিবহির্ভূত বিচারপ্রক্রিয়া, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আবারও উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাজ্য ।

ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার লন্ডনে অনুষ্ঠিত চতুর্থ স্ট্র্যাটেজিক ডায়ালগে ওপরের বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

শুক্রবার ঢাকা থেকে পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক, বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক ইস্যু, বাণিজ্য, অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন অংশীদারত্ব, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে কার্যকর মতবিনিময় হয়েছে যুক্তরাজ্যের।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য দুই দেশই ২০১৯ সালের পর প্রথমবারের মতো সশরীরে সাক্ষাতের সুযোগকে স্বাগত জানিয়ে সংলাপ শুরু করে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির বছরে অনুষ্ঠিত এবারের কৌশলগত সংলাপ যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে।

উভয় দেশের প্রতিনিধিরা যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং প্রবাসী সংযোগ ও কমনওয়েলথের সদস্যপদের কারণে মানুষের সঙ্গে মানুষের সুদৃঢ় সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ব্রিটিশ হাইকমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, যুক্তরাজ্য সরকারের ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসে (এফসিডিও) অনুষ্ঠিত চতুর্থবারের মতো বার্ষিক ওই কৌশলগত সংলাপে ব্রিটিশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের পার্মানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি স্যার ফিলিপ বার্টন কেসিএমজি ওবিই ও বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব (সিনিয়র সেক্রেটারি) অ্যাম্বাসেডর মাসুদ বিন মোমেন।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) দক্ষিণ এশিয়া ও কমনওয়েলথ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী উইম্বলডনের লর্ড তারেক আহমেদ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব অ্যাম্বাসেডর মাসুদ বিন মোমেনকে স্বাগত জানান।

লর্ড আহমদ বলেন, ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন ও আমি যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের দৃঢ় সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছি। আমরা উভয়েই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ভবিষ্যতে আমাদের দুই দেশের মধ্যের বাণিজ্যকে আরও শক্তিশালী করার সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেছি।’

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশে করোনা মহামারি চলার সময় যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান সংলাপে অংশ নেয়া সদস্যরা। দেশজুড়ে করোনা প্রতিরোধী টিকা কর্মসূচি (বিশেষ করে কোভ্যাক্স থেকে প্রাপ্ত টিকার মাধ্যমে) পরিচালনার জন্য যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে।

বৈঠকে এফসিডিওর বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে উঠে আসা বাংলাদেশের মানবাধিকার সম্পর্কিত কিছু বিষয়; যেমন- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রভাব, বিধিবহির্ভূত আটক, বিধিবহির্ভূত বিচারপ্রক্রিয়া এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাজ্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উভয় দেশই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের গুরুত্ব, জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থার উন্নয়নে সুধীসমাজের উপস্থিতি ও মতপ্রকাশ এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে একমত হয়েছে।

সংলাপে সংঘাত প্রতিরোধ, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা, নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা সমর্থনসহ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একে অপরকে সহযোগিতা করতে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ সম্মত হয়েছে।

দ্বিপক্ষীয় সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে উভয় দেশই প্রশিক্ষণ, পেশাগত সামরিক শিক্ষা ও ইন্সট্র্যাকশনাল এক্সচেঞ্জসহ যৌথ সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়েছে। সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা এ বছরের শেষের দিকে একটি প্রতিরক্ষাবিষয়ক সংলাপ উদ্বোধনের আশাও জানিয়েছেন।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ বিশ্বের সব দেশকে আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে। গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ কমাতে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছে যুক্তরাজ্য।

বিভিন্ন উৎস থেকে আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করতে যুক্তরাজ্যের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে উদ্বোধন হওয়া ইউকে-বাংলাদেশ ক্লাইমেট পার্টনারশিপের জন্য উভয় দেশই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।

২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার জন্য জাতিসংঘের সুপারিশ লাভ করায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। এই উত্তরণ সফলে সাহায্য করতে এবং বাংলাদেশ যেন তাদের রপ্তানিভিত্তিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে পারে, সেজন্য যুক্তরাজ্য ২০২৯ পর্যন্ত তাদের দেশের বাজারে বাংলাদেশের জন্য শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি জানিয়েছে।

বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগকারী হিসেবে যুক্তরাজ্য ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউকে-বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ডায়ালগের উদ্বোধনকে স্বাগত জানিয়েছে।

বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশের উন্নতির গুরুত্ব এবং বাজার প্রবেশাধিকার বাধা হ্রাস করার ওপর জোর দিয়েছে যুক্তরাজ্য। এতে উভয় দেশ লাভবান হবে। চলাচল ও অভিবাসন বিষয়ক একটি পার্টনারশিপ গঠনে যুক্ত হতে উভয় দেশ সম্মত হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য তাদের নতুন পয়েন্ট-ভিত্তিক অভিবাসন ব্যবস্থায় প্রদত্ত সুযোগগুলোর কথা উল্লেখ করে। দুই দেশের মধ্যে উচ্চ শিক্ষাবিষয়ক অংশীদারত্ব বৃদ্ধি করতে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে ‘ক্রস বর্ডার উচ্চশিক্ষা আইন’ বাস্তবায়নের অনুরোধ জানিয়েছে।

রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংসতার শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার জন্যে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে।

রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্য নিয়ে ঢাকা ও লন্ডন নিজ নিজ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

সংলাপে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনের লক্ষ্যে উভয় দেশই দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনের উপায় নিয়ে আলোচনা করে।

যুক্তরাজ্য কারিগরি সহায়তা প্রদান ও প্রোগ্রামের মাধ্যমে কীভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রমের প্রভাব উন্নত, জনস্বাস্থ্য পরিষেবাগুলোকে আরও মজবুত এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংকট মোকাবিলায় সাহায্য করতে পারে, সেটি তুলে ধরেছে।

এ বিভাগের আরো খবর