বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

২২ বছর পর বাড়ি ফিরছেন ‘নিখোঁজ’ আমেনা

  •    
  • ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২৩:২৪

বগুড়া এনএসআইয়ের উপপরিচালক মুজাহারুল ইসলাম মামুন বলেন, ‘নেপালে বাংলাদেশি দূতাবাসের কাউন্সিলর মাসুদ আলমের তথ্য পেয়ে আমরা ওই নারীর ঠিকানা খুঁজে বের করি। মাসুদের দক্ষতা ও বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিকতায় ওই নারীকে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।’

আমেনা খাতুন ১৯৯৮ সালে নিরুদ্দেশ হন। অনেক খোঁজাখুজির পর তাকে ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। এরপর থেকে সবার কাছে ‘মৃত’ ছিলেন তিনি। সন্তানরাও ভেবেছিলেন আর কখনো মায়ের দেখা পাবেন না। সেই আমেনা নেপাল থেকে ২২ বছর পর বগুড়ার ধনুটে নিজ বাড়িতে ফিরছেন।

নেপাল থেকে ৬ সেপ্টেম্বর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। সোমবার দুপুর ১টায় নেপালের একটি বিশেষ বিমানে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামবেন তিনি।

সরকারি সহযোগিতায় তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আমেনার নাতি আদিলুর রহমান আদিল।

তিনি জানান, ৪০ বছর ধরে তার দাদি মানসিক ভারসাম্যহীন। এর আগে তিনি সুস্থ ছিলেন। তিন ছেলে আমজাদ হোসেন, ফটিক মিয়া ও ফরিদ মিয়ার জন্মের পর তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এরপর মেয়ে আম্বিয়ার জন্ম হয়।

১৯৯৮ সালে ফটিক মিয়া সৌদি আরবে যান। সেদিন একই সময়ে আমেনা খাতুনও বাড়ি থেকে বের হন। এরপর তার থেকেই নিখোঁজ তিনি। সবাই ভেবেছে তিনি মারা গেছেন।

আদিলুর জানান, গেল রোজার ঈদের আগে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সদস্যরা তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমেনা খাতুন নেপালে রয়েছেন বলে খোঁজ দেন। তারা ছবি দেখালে আমেনা খাতুনের পরিচয় নিশ্চিত করে পরিবার।

৩ সেপ্টেম্বর নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর মাসুদ আলম সন্তানদের সঙ্গে আমেনার ভিডিও কলে কথা বলার ব্যবস্থা করেন। ভিডিও কলে তিনি সন্তান ও স্বজনদের চিনতে পারেন।

এ ঘটনায় মাসুদ আলম ৪ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লিখেন, নেপালে ২২ বছর পর মায়ের সন্ধান পেলেন বগুড়ার আমজাদ হোসেন প্রমাণিক। ২২ বছর আগে ধুনটের আমেনা খাতুন বাড়ি থেকে অভিমান করে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। তার বয়স এখন প্রায় ৮০ বছর। তার বড় ছেলে আমজাদ হোসেনের বয়স ৬০ বছর। ৬ সেপ্টেম্বর সম্পূর্ণ সরকারি খরচে নেপালে বাংলাদেশি দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ বিমানে ঢাকায় তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

যেভাবে খোঁজ মেলে আমেনার

মাসুদ ফেসবুকে আরও বলেন, ‘৩০ মে নেপালের সুনসারি জেলার কুইক রেসপন্স সেন্টার ইনারুয়া সুনসারি এর মুকেশ মেহতা তার ফেসবুকে ইনারোয়া পৌরসভার ডেপুটি মেয়র যমুনা গৌতম পোখরেলের তত্ত্বাবধানে একজন বাংলাদেশের নারী রয়েছে উল্লেখ করে একটি পোস্ট দেন। এতে নেপাল বাংলাদেশ ইয়্যুথ কনক্লেভের চেয়ারম্যান অভিনাভ চৌধুরী আমাকে কমেন্টসে মেনশন করেন। এরপর আমিনার সঙ্গে কথা বলে ঠিকানা জানার চেষ্টা করে ব্যর্থ হই। পরে রাষ্ট্রদূতের পরামর্শে ১ জুন কাঠমান্ডু থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার দূরে সুনসারিতে যাই। সে সময়ে নেপালজুড়ে লকডাউন এবং কোভিড আক্রান্ত সর্বোচ্চ পর্যায়ে। ইনারোয়াতে আমাকে সহায়তা করেন সুনসারি বাঙালি সমাজের সভাপতি বিপ্লব ঘোষ।

‘দীর্ঘ সময় আমেনা খাতুনের সঙ্গে কথা বলে তার ঠিকানা উদ্ধার করে বগুড়া জেলা অফিসের প্রচেষ্টায় ঠিকানা ও পরিচয় নিশ্চিত হই। আমেনার বাকি জীবন তার পরিবারের সঙ্গে আনন্দে কাটুক এ প্রত্যাশা করি।’

আদিল বলেন, ‘দাদিকে বিমানবন্দর থেকে নিতে আমার বাবা, চাচাসহ সবাই ঢাকায় যাচ্ছি। এটি আমাদের পরিবারের জন্য অনেক খুশির খবর। ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’

কীভাবে তিনি নেপালে গেলেন সে বিষয় কেউ জানাতে পারেননি। তবে নেপালে এক নারীর আশ্রয়ে ছিলেন বলে জানা গেছে।

বগুড়া এনএসআইয়ের উপপরিচালক মুজাহারুল ইসলাম মামুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নেপালে বাংলাদেশি দূতাবাসের কাউন্সিলর মাসুদ আলমের তথ্য পেয়ে আমরা ওই নারীর ঠিকানা খুঁজে বের করি। মাসুদের দক্ষতা ও বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিকতার কারণে ওই নারীকে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এটি দারুণ সাফল্য।’

এ বিভাগের আরো খবর