বকেয়া টাকার জন্য ১৯ ঘণ্টা মরদেহ আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের একটি প্রাইভেট হাসপাতালের বিরুদ্ধে।
নগরীর জিইসি মোড়ে অবস্থিত মেডিক্যাল সেন্টার নামের ওই প্রাইভেট হাসপাতালের বিরুদ্ধে শনিবার অভিযোগ করেন শামসুন নাহার নামের এক নারীর স্বজন।
শামসুন নাহারের স্বজনরা জানান, ৩৬ দিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে আইসিইউতে মারা যান শামসুন নাহার। এর পর মরদেহ নিতে গেলে স্বজনদের ১৪ লাখ ৬২ হাজার ৬৮২ টাকার বিল ধরিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে চিকিৎসা চলাকালে সাড়ে ৪ লাখ টাকা জমা দেয় স্বজনরা। পরে শুক্রবার রাত ২টার দিকে আরও ৬ লাখ টাকা দেয়া হলেও সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ না করে মরদেহ নিতে পারবে না বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ সময় ওই নারীর স্বজনরা একটি চেক দিয়ে বাকি টাকা কিছুদিন পর দেয়ার কথা বললেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এতে রাজি হয়নি। পরে বিষয়টি সংবাদকর্মীদের নজরে এলে শনিবার দুপুর ১টার দিকে মৃত্যুর ১৯ ঘণ্টার পর মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে এর আগে আরও দুই লাখ টাকা পরিশোধ করে বাকি টাকার জন্য এক মাস সময় নিতে হয়েছে স্বজনদের।
শামসুম নাহারের ভাগিনা মো. রবিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার মেজ মামী মেডিকেল সেন্টারের আইসিইউতে মারা গেছেন গতকাল সন্ধ্যা ৬টায়। আমরা এর আগে ২ লাখ, দেড় লাখ ও ১ লাখ করে পর্যায়ক্রমে সাড়ে ৪ লাখ টাকা বিল দিয়েছি। আমাদের বলা হয় মোট বিল এসেছে ১৪ লাখ ৬২ হাজার।
‘রাত দুটার দিকে আমরা ক্যাশ ৬ লাখ টাকা জমা দিই লাশ নিয়ে যেতে। কিন্তু বাকি টাকা দিতে না পারার কারণে তারা লাশ আটকে রাখে।’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তাৎক্ষণিকভাবে সংবাদ পেয়ে আমরা পুরো টাকা আনতে পারিনি। এখন ছয় লাখ টাকা দিচ্ছি। বাকি ৪ লাখ ১২ হাজার টাকা আমরা পরে পরিশোধ করব। কিন্তু তিনি তা মানতে রাজি হননি।
‘তিনি আমাদের বলছেন, টাকা নিয়ে সমস্যা থাকলে আমরা রোগীকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাইনি কেনো? পরে ব্যাপারটা মিডিয়ায় জানাজানি হলে উনারা ১টার দিকে লাশ বুঝিয়ে দেন। এর মধ্যে আমরা আরও দুই লাখ টাকা জমা দিয়েছি। বাকি টাকার জন্য একটা চেক দিয়েছি।’
এর মধ্যে শামসুন নাহারের লাশে পচন ধরতে শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে মেডিকেল সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।