বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জাল অনুমোদনে ভুয়া করোনা পরীক্ষার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩

  •    
  • ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০১:৩৬

যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ‘ওই সব বুথে যে নমুনা সংগ্রহ করা হতো, সেগুলোতে রোগীর উপসর্গ লিখে রাখা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কারও জ্বর ঠাণ্ডা থাকলে তার রিপোর্ট পজিটিভ আর কারও উপসর্গ না থাকলে তাকে নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেয়া হবে।’

জাল অনুমোদন ব্যবহার করে করোনাভাইরাস শনাক্তের ভুয়া পরীক্ষা কার্যক্রম চালানোর অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা, গুলশান বিভাগ।

মঙ্গলবার রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা ও ঝালকাঠি জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এরা হলেন আব্দুল্লাহ আলামিন, আবুল হাসান তুষার ও মোহাম্মদ শাহিন মিয়া। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার, আইডি কার্ড, ভিজিটিং কার্ড, ট্যাক্স সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের জাল নিয়োগপত্র জব্দ করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপি গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, ‘চক্রটি ভুয়া করোনা পরীক্ষার মাধ্যমে সাধারণ ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য কাজ শুরু করেছিল। তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভুয়া অনুমোদনপত্র বানিয়ে ঝালকাঠিতে করোনা টেস্ট বুথ স্থাপন করে নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রমও শুরু করেছিল। তবে কোনো রিপোর্ট দেয়ার আগেই চক্রটিকে গ্রেপ্তার করা গেছে।’

যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ‘ওই সব বুথে যে নমুনা সংগ্রহ করা হতো, সেগুলোতে রোগীর উপসর্গ লিখে রাখা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কারও জ্বর ঠাণ্ডা থাকলে তার রিপোর্ট পজিটিভ আর কারও উপসর্গ না থাকলে তাকে নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেয়া হবে।’

গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা ভুয়া কাগজপত্র

তিনি বলেন, ‘রাজধানীর শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণীতে অবস্থিত আল-রাজি কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় নিজেদের অফিস বানায় চক্রটি। অফিসের নাম দেয়া হয় টিকেএস হেলথ কেয়ার সার্ভিস। এটিকে টিকেএস গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান দাবি করা হয়।

‘তারা টিকেএস হেলথ সার্ভিসের নামে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বরাবর একটি আবেদন করে। আবেদনে তারা উল্লেখ করে, বাংলাদেশের ৮টি বিভাগ, ৬৪টি জেলা, ৪৯২টি উপজেলা এবং ৪ হাজার ৫৬২টি ইউনিয়নে বিনা মূল্যে করোনা পরীক্ষা করাতে চান। আর সেজন্য তাদের মোট ৫ হাজার ১২৬ জন সম্মুখযোদ্ধা প্রস্তুত আছে।’

যুগ্ম কমিশনার জানান, ভুঁইফোড় এই প্রতিষ্ঠানের বৈধ কোনো অস্তিত্ব না থাকায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে কোনো অনুমোদন না পেয়ে জালিয়াতির আশ্রয় নেয় তারা। চক্রটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জাল স্বাক্ষর, সিল ও মুজিব শতবর্ষের লোগো বানিয়ে ভুয়া অনুমোদনপত্র তৈরি করে। এ ছাড়া তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জাকিয়া পারভীনের স্বাক্ষর-সিল জাল করে নিজেরাই বুথ স্থাপন, স্যাম্পল কালেকশন এবং লোক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করে।

তিনি বলেন, ‘এই ভুয়া অনুমতিপত্রের মাধ্যমে গ্রেপ্তারকৃতরা ঢাকা এবং ঝালকাঠি জেলার উপজেলা কো-অর্ডিনেটর এবং ইউনিয়নের ফিল্ড অফিসার পদে বিভিন্ন জনকে নিয়োগ দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়। তারা প্রতিটি বুথে একজন করে ডিলার নিয়োগ দেয়া শুরু করে এবং এই ডিলারশিপ দুই লাখ টাকা করে বিক্রি করে। এভাবে প্রতিটি বুথের মাধ্যমে পাঁচ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করেছিল চক্রটি।

যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ‘এই চক্রের মূল পরিকল্পনাকারী আব্দুল্লাহ আল আমিন কেয়ার গিভার্স ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশের (সিআইবি) মার্কেটিং ম্যানেজার এবং আবুল হোসেন তুষার আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের সাবেক রিলেশনশিপ ম্যানেজার হিসেবে কাজ করত। একসময় তারা অর্থের লোভে চাকরি ছেড়ে প্রতারণার পরিকল্পনা শুরু করে।’

এর আগেও তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ছিল বলে জানিয়েছেন হারুন অর রশীদ। তারা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ১০০ টাকার বিনিময়ে রেজিস্ট্রেশন করে দেয়ার কথা বলে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিল। তবে সে সময়ও সফল হতে পারেনি চক্রটি।

এ ঘটনায় চক্রটির বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর