কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে একই পরিবারের দুই সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। সরকারি সাহায্যের জন্য আবেদন করেও দুই বছরে কোনো আশ্বাস মেলেনি। আর্থিক সংগতি না থাকায় সবার সহযোগিতা চান বাবা।
উপজেলার বল্লভেরখাস ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ গ্রামের দরিদ্র কার্তিক দাস পেশায় একজন ঝাড়ুদার। সরকারি খাস জমিতে দুটি টিনের চালা তুলে তিন সন্তান, স্ত্রী নিয়ে বসবাস তার। সংগীতকে ভালোবেসে স্থানীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তবলাও বাজান। স্বল্প আয়ে কোনো রকমে চলছে তার সংসার। অভাব থাকলেও শান্তিতে দিন কাটছিল তাদের।
কিন্তু হঠাৎ করেই ২০১৬ সালে তার বড় ছেলে ১৬ বছর বয়সী সাগর দাস থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়। এর ছয় মাস পরে ছোট ছেলে ১২ বছরের শাওন দাসও আক্রান্ত হয় একই রোগে। ধারদেনা, এনজিও ঋণ নিয়ে শুরু করেন ছেলেদের চিকিৎসা। বড় ছেলেকে প্রতিমাসে একবার এবং ছোট ছেলেকে মাসে দুবার রক্ত দিতে হয়। এতে তার প্রতিমাসে খরচ হয় প্রায় ২০-৩০ হাজার টাকা।
করোনার কারণে উপার্জন বন্ধ। তাই ছেলেদের চিকিৎসার অর্থ জোগান দিতে তাকে বিক্রি করতে হয়েছে আসবাবপত্র, ঘরের খুঁটি, টিনের চালা এমনকি শখের হারমোনিয়ামটিও। বিক্রি করার মতো আর কিছু না থাকায় অর্থাভাবে ছেলেদের চিকিৎসা এখন প্রায় বন্ধের পথে। চোখের সামনে সন্তানদের করুণ পরিণতি আর সইতে পারছেন না তিনি।
কার্তিক দাস বলেন, দীর্ঘদিন থেকে দুই ছেলের চিকিৎসার পিছনে সংসারের ঘটিবাটি এমনকি তার শখের হারমোনিয়ামটিও বিক্রি করতে হয়েছে। এখন অর্থাভাবে প্রতিমাসে দুই ছেলেকে রক্ত দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই সন্তানদের বাঁচাতে সহৃদয়বান ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। এ ছাড়াও সমাজসেবার মাধ্যমে দুই বছর আগে সরকারি সহযোগিতার জন্য আবেদন করেছিলেন। সেটাও এখন পর্যন্ত পাননি। মেম্বার, চেয়ারম্যানও খোঁজ নেয় না। তাকে সাহায্য পাঠানোর বিকাশ নম্বর ০১৭১৯৭০৯৬৯৩।
কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্তদের প্রতিমাসে রক্ত সঞ্চালন করতে হয়। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে রক্ত সঞ্চালনের ব্যবস্থা রয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে রক্ত সঞ্চালনের ব্যবস্থা না থাকলেও রক্ত সঞ্চালনের বিশেষ ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।
এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘আবেদনের কপি আমি পাইনি। পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতাম।’ আবেদনের কপি নিয়ে দেখা করলে দ্রুত সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।