সিরাজগঞ্জের তাড়াশের গুল্টা বাজার এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুল মতিন হত্যার কারণ বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নয় বরং ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গুল্টা বাজার এলাকার একটি বিদ্যালয়ের শৌচাগার থেকে মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশের সন্দেহ ছিল বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণে তাকে হত্যা করা হয়। তবে তদন্তে নেমে জানতে পারে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের কারণে তাকে খুন করা হতে পারে।
এ ঘটনায় চারজনকে আটক করার পর তা নিশ্চিত হয়। আটকদের মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দিয়েছেন। আরও কয়েকজনের নামও জানা গেছে।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয়ে রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।
তিনি জানান, মতিন হত্যায় জড়িত সন্দেহে তালম গ্রামের ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম আরিফ, গুল্টা গ্রামের নিরঞ্জন তির্কী, লালন এক্কা ও রাজ কুমার তপ্য নামে চারজনকে গত বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে আরিফ ও নিরঞ্জন তির্কী পর দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দির বরাত দিয়ে পিবিআই পুলিশ সুপার জানান, নিহত মতিনের দোকানের পাশেই আরিফের ইলেকট্রনিক্সের দোকান। মতিনের ব্যবসার উন্নতি দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে এক পর্যায়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো শুরু করেন আরিফ। স্থানীয় নিরঞ্জনকে তিনি উসকানি দেন, মতিন রাতে নিরঞ্জনের বাসায় ঢিল ছুড়েছেন তার স্ত্রী পদ্মার সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক করার জন্য।
এ ছাড়া তিন-চার মাস আগে স্থানীয় স্কুলমাঠে একটি ইসলামি ওয়াজের বক্তব্য নিয়েও আরিফ ও মতিনের বাকবিতণ্ডা হয়। সব মিলিয়ে মতিনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আরিফ।
পুলিশ সুপার আরও জানান, ১৬ জুন রাত ১টার দিকে মতিন দোকান বন্ধ করে মোটরসাইকেলে বাড়ি যাওয়ার সময় তার গতিরোধ করেন নিরঞ্জন, তার স্ত্রী পদ্মা, ছেলে মিঠুন ও আরিফ। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নিরঞ্জন ও আরিফের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় মতিনের। ওই সময় নিরঞ্জনের সহায়তায় মতিনের ঘাড় মটকে দেন আরিফ। এতে কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান মতিন।
তিনি আরও জানান, হত্যার পর মতিনের দেহ ১৫ মিনিটের মতো নিরঞ্জনের বাড়িতে রাখা হয়। তার মোটরসাইকেলটি ফেলে আসা হয় ঘটনাস্থল থেকে ২-৩ কিলোমিটার দূরে ডোবায়। আর মতিনের মরদেহ স্থানীয় বিদ্যালয়ের শৌচাগারের মধ্যে ফেলে দেয়া হয়।
করোনায় স্কুল বন্ধ থাকায় ওই শৌচাগারে কেউ যেত না। তবে স্থানীয় মাঠে ক্রিকেট খেলার একপর্যায়ে বলটি শৌচাগারের পাশে পড়লে সেখানে গিয়ে মতিনের মরদেহ দেখতে পায় কিশোররা। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।