করোনাভাইরাসের সংকট মোকাবিলায় অনেক দেশ অর্থনৈতিকভাবে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়লেও বাংলাদেশ সাফল্যের পরিচয় দিচ্ছে বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বলেছেন, কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও শান্তি বিরাজ করছে দেশে।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় কমিটির আয়োজনে রোববার এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
করোনার ধাক্কায় অর্থনৈতিকভাবে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে মালয়েশিয়া। অর্থনৈতিক মন্দা ঠেকাতে না পারার দায় নিয়ে সম্প্রতি দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সড়ে দাঁড়াতে হয় মুহিউদ্দিন ইয়াসিনকে।
করোনার কারণে অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছে পর্যটননির্ভর অর্থনীতির দেশ থাইল্যান্ডও। এতে অনেকটা নড়বড়ে হয়ে পড়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রাউত চান-ওচার গদি।
এসব প্রসঙ্গ টেনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা চিকিৎসায় ব্যর্থ হয়ে থাইল্যান্ডের সরকারের পতন হয়েছে (প্রকৃত পক্ষে সরকারবিরোধী আন্দোলন চলছে)। মালয়েশিয়া সরকার পরিবর্তন হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকারের অবস্থা বেহাল, অনেকে দেশের অর্থনীতি এখন হুমকির মুখে।
‘তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় করোনা এখন নিয়ন্ত্রণে আসছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে বলেই দেশের অর্থনীতি ভালো রয়েছে। সামাজিক অবস্থা ভালো আছে। দেশে শান্তি বিরাজ করছে এবং আগামীতে দেশ এগিয়ে যাবে। করোনা মধ্যেই আমাদের ৬ শতাংশ গ্রোথ রয়েছে।’
স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দেশে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আপানাদের সহযোগিতায় করোনা মহামারি মোকাবিলা করে যাচ্ছি। যে দুর্যোগ ১০০ বছরেও একবারও আসে না। এই দুর্যোগ কীভাবে মোবাবেলা করতে হয়, এটা মানুষের জানা ছিল না। এই মহামারিতে কী করা লাগবে জানা ছিলো না। তবে সবকিছু আপনাদের সহযোগিতা নিয়েই করে যাচ্ছি। এ কারণে বাংলাদেশ করোনা মোকাবিলায় সফল হয়েছে।
‘করোনা নিয়ন্ত্রণে আমরা অনেক দেশে প্রশংসা পেয়েছি; বিশ্ব সংস্থা সংস্থার প্রশংসা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা। এসব সম্ভব হয়েছে চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য। তারা এই কাজগুলোতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে, তারা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে কাজ করে যাচ্ছে। কাজেই তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।’
করোনা নিয়ন্ত্রণে আনতে নমুনা পরীক্ষার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন ল্যাবে হাজার হাজার টেস্ট করানো হচ্ছে। টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। অনেক দেশ এখনও টিকা পায়নি।
তিনি বলেন, ‘করোনা সেবা নিতে গিয়ে চিকিৎসকসহ আমরা ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা আমরা কাজ করি যাচ্ছি। একটি ল্যাব থেকে এখন সাড়ে ৭০০টি ল্যাব হয়েছে। করোনা সেবা দেয়ার জন্য ১৭ হাজার শয্যা করা হয়েছে। হাসপাতালে সাধারণ শয্যাও একই রয়েছে। হাসপাতালে এখন তিন ধরনের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। করোনা, নন করোনা চিকিৎসা, ডেঙ্গু চিকিৎসা।’
ভার্চুয়াল আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক এম ইকবাল আর্সলান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, স্বাচিপের মহাসচিব অধ্যাপক এম এ আজিজসহ অনেকেই।