বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লইস্কা বিলে আরিফের সঙ্গে ডুবল পরিবারের স্বপ্ন

  •    
  • ২৮ আগস্ট, ২০২১ ২৩:০৪

‘আমাদের একটাই আশা ছিল ভাতিজা ডাক্তার হবে। ভাতিজা বেঁচে থাকলে আরও টাকা খরচ করলেও কোনো দুঃখ থাকত না। এ নৌ-দুর্ঘটনায় আমাদের সব স্বপ্ন চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেল।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের আরিফ বিল্লাহ মামুন ও তার পরিবারের স্বপ্ন ছিল তিনি ভালো চিকিৎসক হবেন। সেই স্বপ্নপূরণে রাজধানীর গ্রিন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন আরিফ।

তবে চিকিৎসক হওয়ায় স্বপ্ন আর বাস্তবে রূপ নেয়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লইস্কা বিলে শুক্রবারের ট্রলারডুবিতে লাশ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ২০ বছরের আরিফ।

আরিফের বাবা জহিরুল হক ও মা পারভীন ভূঁইয়া সৌদিপ্রবাসী। দুর্ঘটনায় আরিফের মৃত্যুর খবর পেয়ে দেশে ফিরছেন তারা। বাবা ও মা আসার পর চম্পকনগরের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে তাকে।

আরিফে ছোট চাচা ওমর ফারুক শনিবার তার মরদেহের পাশে বিলাপ করছিলেন। এমনি বলছিলেন, ‘আমাদের সবকিছু শেষ, সব স্বপ্ন শেষ।’

তিনি জানান, ছোট থেকেই আরিফ ছিলেন মেধাবী। পড়াশোনায় ছিলেন অত্যন্ত মনোযোগী। আরিফ পিইসি, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পান। এ কারণে পরিবারের সদস্যরা তার বিষয়ে আশাবাদী ছিলেন।

আরিফের পড়াশোনার কোনো বিষয়ে তারা অবহেলা করেননি জানিয়ে তিনি জানান, দুই মাস আগে রাজধানীর গ্রিন লাইফ মেডিক্যাল কলেজে অনেক টাকা খরচ করে ভাতিজাকে ভর্তি করেন। গত ছয় মাসে তার পড়াশোনার জন্য আরও অনেক খরচ হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের একটাই আশা ছিল ভাতিজা ডাক্তার হবে। ভাতিজা বেঁচে থাকলে আরও টাকা খরচ করলেও কোনো দুঃখ থাকত না। এ নৌ-দুর্ঘটনায় আমাদের সব স্বপ্ন চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেল।’

আরিফের শিক্ষাজীবন নিয়ে ওমর ফারুক জানান, আরিফ স্থানীয় কিন্ডারগার্টেন থেকে পিইসি, অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে পাস করেন। কুমিল্লার ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০০৯ সালে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে পাস করেন এইচএসসি।

ভর্তি পরীক্ষায় সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পান তিনি। তবে মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে দুই মাস আগে গ্রিন লাইফ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন।

তিনি আরও জানান, গত ২৬ আগস্ট করোনার টিকা নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়িতে ফেরেন আরিফ। শুক্রবার এক বন্ধুর কাজে জেলা শহরে যাচ্ছিলেন তিনি, কিন্তু আর তাদের মাঝে জীবিত ফেরেননি। ফিরেছেন লাশ হয়ে।

আরিফের স্বজন শাহরিয়ার ইসলাম জানান, এইচএসসি পড়ার সময় থেকে গত পাঁচ বছর তারা রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে ছিলেন। তাদের দুজনের মধ্যে ছিল হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক। আরিফের বাবা-মা কোনো কারণে মোবাইলে না পেলে তাকেই ফোন করতেন। এভাবে তার চলে যাওয়া কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর