নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তিনজনকে গুলি করে হত্যার মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। প্রায় ৩ বছর ধরে তদন্ত করলেও কোনো আসামি শনাক্ত করতে পারেনি সংস্থাটি।
হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন ও জড়িতদের শনাক্ত ছাড়াই গত মঙ্গলবার আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে প্রতিবেদন জমার বিষয়টি শনিবার আদালত পুলিশের মাধ্যমে জানা যায়।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করে শনিবার সন্ধ্যায় জানান, মঙ্গলবার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর আগামী ২২ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন দিয়েছেন বিচারক।
২০১৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সকালে রূপগঞ্জের কাঞ্চন-কুড়িল ৩০০ ফুট সড়কের একটি সেতুর নিচ থেকে গুলিবিদ্ধ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত তিনজন হলেন রাজধানীর মহাখালীর দক্ষিণ পাড়া এলাকার সোহাগ ভূঁইয়া, ঝিনাইদহের কালিগঞ্জের ঘোরেলা গ্রামের শিমুল আজাদ ও মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ির পাইকপাড়া গ্রামের নূর হোসেন বাবু। তারা রাজধানীর মুগদা এলাকায় থাকতেন।
মরদেহ উদ্ধারের পর অভিযোগ ওঠে, আগের দিন গভীর রাতে ডিবি পরিচয়ে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ১৪ সেপ্টেম্বরই অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে একটি হত্যা মামলা হয় রূপগঞ্জ থানায়।
মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। দুইটি সংস্থার প্রায় ৩ বছরের তদন্ত শেষে আসামি শনাক্ত ছাড়াই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহত সোহাগ ভুঁইয়া, শিমুল আজাদ ও নুর হোসেন বাবু মাদক কারবারসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ঘটনার দুদিন আগে ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সোহাগ ও বাবু ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে শিমুলের গ্রামের বাড়িতে ছিলেন।
পরদিন রাত ১০টার দিকে তারা ঝিনাইদহ থেকে বাসে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। রাত ১টার দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে নামার পর অজ্ঞাতপরিচয় সাতজন ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাদের গাড়িতে তুলে নিয়ে যান। এরপর আর তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
ওই রাত থেকে সকাল সাড়ে ৭টার কোনো একটি সময়ে তাদের রূপগঞ্জের কাঞ্চন-কুড়িল ৩০০ ফুট সড়কের ১১ নম্বর সেতুর নিচে গুলি করে হত্যা করা হয় বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির উপপরিদর্শক মুন্সী শহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, নিহতদের নামে মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তবে যারা এ হত্যায় জড়িত তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘদিন তদন্তের পর আসামি শনাক্ত না হওয়ায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে।