বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ধীরাজ হত্যা: ৩ মাসেও ক্লু পায়নি পুলিশ

  •    
  • ২৮ আগস্ট, ২০২১ ০৯:১১

গ্রেপ্তার ছয় আসামির মধ্যে পাঁচজনকে রিমান্ডে নিয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে আবার দুইজন জামিনে মুক্ত হয়েছেন।

সিলেটের বালাগঞ্জে দিনদুপুরে ইটভাটায় ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল ম্যানেজার ধীরাজ পালকে। এরপর তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এ ঘটনার কোনো ক্লু পায়নি পুলিশ।

এ মামলায় গ্রেপ্তার ছয় আসামির মধ্যে পাঁচজনকে রিমান্ডে নিয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে আবার দুইজন জামিনে মুক্ত হয়েছেন।

বালাগঞ্জের গহরপুর এলাকার রতনপুর গ্রামে জিবিসি ব্রিক ফিল্ডে গত ২৮ মে দুপুরে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ৬০ বছর বয়সী ধীরাজ পালকে। পরদিন নিহতের বড় ছেলে প্রভাকর পাল বাপ্পা অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে বালাগঞ্জ থানায় মামলা করেন।

থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও তা পরে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়। তাতেও তদন্তে আশানুরূপ কোনো অগ্রগতি হয়নি। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যেই হত্যার সঙ্গে জড়িতরা থাকতে পারে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবির পরিদর্শক ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। যাকেই সন্দেহ হচ্ছে তাকেই জিজ্ঞাসাবাদ করছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আশাব্যঞ্জক কোনো তথ্য পাইনি। হত্যার কোনো ক্লু উদ্ধার করতে পারিনি।

‘আমি আশাবাদী এই মামলার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে। তবে কিছুটা সময় লাগবে।’

মামলার এজাহার ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ধীরাজ পাল ৮ বছর ধরে গহরপুরের ওই ইটাভাটায় ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করতেন। তার বাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমার আলমপুর এলাকায়। কাজ শেষে রাতে তিনি ইটভাটাতেই ঘুমাতেন। শুক্রবার কাজ শেষ করে বাড়ি যেতেন।

ঘটনার দিন ছিল শুক্রবার। কাজ শেষে বিকেলে তার বাড়ি ফেরার কথা ছিল। দুপুরে নিজ কার্যালয়ের সামনে তাকে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। সিলেট এমএজ ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মামলার এজাহারে ইটভাটার কর্মীদের বরাত দিয়ে বলা হয়, জুমার নামাজের সময় হত্যা করা হয় ধীরাজ পালকে। এ সময় ইটভাটার সব কর্মীরা মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। ইটভাটা তখন ফাঁকা ছিল।

মামলা হওয়ার পরদিন ইটভাটার ব্যবসায়িক অংশীদার ও ক্যাশিয়ার মেরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সহকারী ব্যবস্থাপক সুহেদ আহমদ ও অটোরিকশা চালক রুবেল আহমদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতের মাধ্যমে তাদের ৪ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।

এরপর ইকবাল হোসেন নামে এক ট্রাক চালক ও ইটভাটার নৈশপ্রহরী রাসেল আলীকে গ্রেপ্তার করে ৩ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় তোফায়েল আহমদ নামে আরেকজনকে।

এর মধ্যে সিএনজি অটোরিকশা চালক রুবেল আহমদ রাসেল ও নৈশপ্রহরী রাসেল আলী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

তিন মাসেও পুলিশ হত্যার ঘটনার কোনো ক্লু খুঁজে না পাওয়া ক্ষুব্ধ ধীরাজের পরিবার। তার ছেলে ও মামলার বাদী প্রভাকর পাল বাপ্পা বলেন, ‘একটা নিরীহ লোককে প্রকাশ্যে খুন করে ফেলা হলো, অথচ পুলিশ তিন মাসেও কোনো রহস্য উদঘাটন করতে পারল না। এটি আমাদের পরিবারের জন্য চরম হতাশার।

‘পুলিশের আন্তরিকতা নিয়েই আমাদের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এভাবে আর কিছুদিন চললে তো আরও অনেক ঘটানার মতো এই হত্যা মামলাও ছাইচাপা পড়ে যাবে। আর আমরা ন্যায়বিচার বঞ্চিত হবো।’

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘পুলিশ এই হত্যারহস্য উদঘাটনে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে। এ কারণে থানা থেকে মামলাটি ডিবিতে আনা হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত আমরা এখনও রহস্য উদঘাটন করতে পারিনি। তবে আমার ধারণা, যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের মধ্যেই হত্যাকারী রয়েছে।

‘হত্যারহস্য উদঘাটনে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

ধীরাজ হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে গত ৩০ মে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করেন দক্ষিণ সুরমার আলমপুর এলাকাবাসী।

এরপর গত ১০ জুন হত্যা রহস্য উদঘাটনের দাবিতে এলাকাবাসী আবারও মানববন্ধন করে। সিলেটের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মফিজ উদ্দিন আহম্মদ বরাবর স্মারকলিপিও দেয়া হয়।

এ বিভাগের আরো খবর