পদ্মা ও মেঘনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে পদ্মার সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে নদীতে বেড়েছে তীব্র স্রোত।
স্রোতের কারণে চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌপথে ফেরিগুলোকে পাঁচ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে। এ কারণে ওই নৌপথের শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার নরসিংহপুর ফেরিঘাটে পারাপার হতে না পেরে আটকা পড়েছে যানবাহন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করোপরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্র জানায়, চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌপথে যান পারাপারের জন্য সাতটি ফেরি রয়েছে। প্রতিটি ফেরি ২৪ ঘণ্টায় ছয় থেকে সাতবার ট্রিপ দিতে পারত। ভেদরগঞ্জের ঘাট থেকে চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটে পৌঁছতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লাগত। সেখানে এখন লাগছে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার স্থলবন্দর বেনাপোল, ভোমরা, নৌবন্দর মোংলা ও পায়রা বন্দরের পণ্য ও যাত্রীবাহী যানবাহন শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়ক দিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করে।
প্রবল স্রোতের কারণে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে ১৮ আগস্ট থেকে যানবাহন বন্ধ ঘোষণা করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। ওই নৌপথে চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে বিকল্প নৌপথ ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া হয়। এ কারণে শরীয়তপুর-নরসিংহপুর ফেরিঘাটে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে।
চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌপথে স্রোতের কারণে ফেরি পারাপারে এখন সময় লাগছে দ্বিগুণ। ছবি: নিউজবাংলা
খুলনা থেকে পেঁয়াজ নিয়ে কুমিল্লার দাউদকান্দিতে যাবেন দেলোয়ার হোসেন। দৌলতদিয়া ঘাট গিয়ে সিরিয়াল না পেয়ে আসেন নরসিংহপুর ঘাটে। দুই দিন অপেক্ষার পর শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ফেরিতে উঠতে পারেননি তিনি।
নরসিংহপুরের দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এক ঘাটে ফেরিতে উঠতে না পেরে আরেক ঘাটে এসেছি। সেখানেও গাড়ির জট। কখন ফেরিতে উঠতে পারব তা বুঝতে পারছি না। আল্লাহই জানেন আমাদের এ দুর্ভোগের শেষ কোথায়।’
ফেরিঘাটের ইজারাদার ও চরসেন্সাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিতু মিয়া ব্যাপারী বলেন, ‘বর্ষা এলেই ফেরি চলাচলে সমস্যা হয়। ফেরিগুলো অনেক পুরোনো হওয়ায় সামাল দিতে পারে না। সাতটি ফেরির মধ্যে তিনটির চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
‘মানুষের দুর্ভোগ কমাতে এখন নতুন ভালো মানের বড় ফেরির সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। বিআইডব্লিউটিসিকে ফেরি বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’
বিআইডব্লিউটিসির নরসিংহপুর ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুল মোমেন বলেন, ‘স্রোতের কারণে ফেরিগুলোকে পাঁচ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ চলতে হচ্ছে। এ কারণে আগের চেয়ে দ্বিগুণ সময় লাগছে পথে।
‘জোয়ারের সময় একটি পন্টুনের র্যাম্প তলিয়ে যাওয়ায় একটি পন্টুন পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এখন অর্ধেক পরিমাণ গাড়ি পারাপার করা যাচ্ছে। তা ছাড়া বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় নরসিংহপুর ঘাটে গাড়ির চাপ বেড়েছে।’