পাবজি-ফ্রি ফায়ার অনলাইন গেমকে কেন্দ্র করে কিশোর বন্ধুর হাতে আরেক কিশোর খুনের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গত ২৭ জুলাই রাতে মাগুরার বেরইল পলিতা দক্ষিণপাড়া গ্রামে পাবজি-ফ্রি ফায়ার খেলা নিয়ে বিরোধের জেরে কিশোর বন্ধু গোলাম রসুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে আরেক কিশোর সজীব মিয়া।
গোলাম রসুল স্থানীয় আলহাজ কাজী আব্দুল ওয়াহেদ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।
মঙ্গলবার দুপুরে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, পাবজি-ফ্রি ফায়ার খেলা ও অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং নিয়ে মাগুরা সদরের বেরইল পলিতা দক্ষিণপাড়া গ্রামে সজীব মিয়ার সঙ্গে ভিকটিম রসুলের বিরোধ তৈরি হয়। ওই বিরোধের জেরে গত ২৭ জুলাই রাত পৌনে ৮টায় বেরইল পলিতা দক্ষিণপাড়া গ্রামের নূর আলমের বাড়ির সামনে রসুলকে একা পেয়ে সজীব ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকের বাঁপাশে সজোরে আঘাত করে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, পরে স্থানীয় লোকজন রসুলকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। পরে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মাগুরা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়।
‘ঘটনাটি সিআইডির দৃষ্টিগোচর হলে, সিআইডির এলআইসি শাখা প্রাপ্ত তথ্য যাচাইবাছাই ও পর্যালোচনা করে আত্মগোপনে থাকা সজীব মিয়াকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে একাধিক স্থানে অভিযান চালায়। সর্বশেষ গত ১৮ আগস্ট নরসিংদী সদর থানা এলাকা থেকে এলআইসির একটি চৌকস টিম তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।’
পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ ক্ষতিকর গেম তিন মাসের জন্য বন্ধ রাখার লিখিত আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এর মধ্যে পাবজি গেমের অনেক নেতিবাচক দিকও উঠে এসেছে। হত্যার ঘটনাও ঘটছে। এমতাবস্থায় সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ ক্ষতিকর গেম সরানো ও বন্ধ করতে সিআইডি পরামর্শ দেবে কি না জানতে চাইলে বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, সামাজিক সচেতনতা বেশি দরকার। আমাদের অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ, সন্তানদের দিকে খেয়াল রাখুন, সন্তানরা যাতে ক্ষতিকর এসব গেম পাবজি, ফ্রি ফায়ারে আসক্ত না হয়ে পড়ে। ভারতে এরই মধ্যে এর ভয়াবহতার কারণে গেমসগুলো বন্ধ করা হয়েছে। আমাদের দেশেও হাইকোর্ট একটা নির্দেশনা দিয়েছে। আশা করছি তিন মাসের মধ্যেই এ বিষয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ বাস্তবায়িত হবে।
ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহারে বাংলাদেশে ব্যবহৃত হচ্ছে ক্ষতিকর গেম ও বিভিন্ন অ্যাপস। এসব ক্ষেত্রে সিআইডির কোনো নজরদারি রয়েছে কি না জানতে চাইলে মুক্তা ধর বলেন, আমাদের চৌকস সাইবার টিম এ ব্যাপারে কাজ করছে। নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।