দুই রাজ্যের সীমান্তে সংঘর্ষে ছয় পুলিশ সদস্য নিহতের পর মিজোরাম ভ্রমণে যেতে আপাতত না করেছে অসম সরকার।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, সহিংসতার ঘটনায় মিজোরামে গেলে অসমের লোকজনের ওপর হামলা হতে পারে এই আশঙ্কা থেকে বৃহস্পতিবার রাজ্যটি এক অ্যাডভাইসরি জারি করেছে।
মিজোরাম বলছে, অসমের পুলিশ যে এই সহিংসতা চালিয়েছে সেটা প্রমাণিত। প্রশ্ন উঠছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে রাজ্য দুটির সীমান্ত সমস্যা নিয়ে সফল বৈঠকের দুদিনের মাথায় এমন ঘটনা কীভাবে ঘটাতে পারল।
অসম পুলিশের ছয় সদস্য গত সোমবার দুই রাজ্যের পুলিশের সংঘর্ষে নিহত হন। ঘটনায় আরও ৪৫ জন আহত হন।
ওই অ্যাডভাইসরিতে অসম জানায়, ‘ওই ঘটনার পর মিজো সুশীল সমাজ, শিক্ষার্থী ও তরুণদের সংগঠনগুলো ক্রমাগত অসম সরকার ও রাজ্যবাসীর বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে। অথচ ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষ অস্ত্র হাতে এমনকি অনেকেই স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র হাতে আক্রমণ করছে।’
সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই ওই অ্যাডভাইসরি জারি করা হয়েছে বলে জানায় অসম রাজ্য সরকার।
মিজোরাম ভ্রমণ ছাড়াও যারা বিভিন্ন কাজের উসিলায় মিজোরামে রয়েছেন, তাদেরকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়।
বিষয়টি নিয়ে সেই শুরু থেকেই দোষারোপ-পাল্টা দোষারোপ চলছেই। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা দাবি করেন, ‘আমার কাছে প্রমাণ আছে প্রথম গুলি অসমের পুলিশ চালিয়েছে। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর অসম যা করেছে সেটা অনভিপ্রেত।’
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা তার ভালো বন্ধু বলে দাবিও করেন জোরামথাঙ্গা। তিনি বলেন, ‘হেমন্ত আমার ভালো বন্ধু। বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়েছে। আমার মনে হয় কেউ অসম সরকারকে ভুল বোঝাচ্ছে।’
মিজোরামের তিনটি জেলা আইজআওল, কোলাসিব ও মামিতের মোট ১৬৪ দশমিক ৬ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে অসমের কাচার, হাইলাকান্দি ও করিমগঞ্জ জেলার।
রাজ্য দুটির মধ্যে সীমান্ত নিয়ে সংঘাতের ইতিহাস কয়েক দশকের। প্রতিবারই দুই পক্ষের নিরাপত্তারক্ষী ও স্থানীয়রা পরস্পরের প্রতি অনুপ্রবেশের অভিযোগ তোলে। মাত্র এক মাস আগেও বিবাদে জড়িয়েছিল তারা।
সীমানা নির্ধারণ বিতর্কের অবসানে সীমান্তবিষয়ক একটি কমিশন গঠন করেছে মিজোরাম রাজ্য সরকার।
প্রতিবেশী মেঘালয় আর অরুণাচল প্রদেশের সঙ্গে সীমানা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে অসমের।