আফগানিস্তানের ৩১ প্রদেশে রাত করে কারফিউ জারি করেছে দেশটির সরকার। দেশব্যাপী তালেবান সশস্ত্র গ্রুপের দ্রুত দখল ঠেকাতে ও সহিংসতা বন্ধ করতে এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সহিংসতা কমাতে ও তালেবান গোষ্ঠীর চলাচল সীমিত করতে রাত করে ৩১টি প্রদেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে।’
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, এই বিধিনিষিধের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে রাজধানী কাবুল, পাঞ্জির ও নাঙ্গারহার প্রদেশকে।
পৃথক এক অডিও বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আহমেদ জিয়া জিয়া জানান, এই কারফিউ শুরু হবে প্রতি রাত ১০টা থেকে, চলবে ভোর ৪টা পর্যন্ত।
রাজধানী কাবুল থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক জেমস বাইস জানান, কারফিউ দেয়ার কারণ একেবারে ‘সরল’।
এটা খুব পরিষ্কার যে, আফগানিস্তানের অনেক অঞ্চল দীর্ঘদিন থেকেই দিনের বেলা সরকার নিয়ন্ত্রণ করলেও রাতের বেলা সে স্থানগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় তালেবানরা।
এটি ঠেকাতেও এমন পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে আফগান সরকার।
দরজায় লড়াই কড়া নাড়ছে
আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সেনাদের প্রত্যাহার শুরুর পর থেকেই দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল দখল করে নিতে শুরু করে তালেবান গোষ্ঠী।
গত কয়েকমাস থেকেই দেশটিতে সরকারি বাহিনী ও তালেবানদের মধ্যে তুমুল লড়াই চলেছে। লড়াইয়ে দেশের ৮৫ শতাংশ এলাকা দখল করে নেয়ার দাবি করেছে তালেবান।
এরই মধ্যে জনবহুল অনেক এলাকায় সরকারি সেনা ও তালেবান অস্ত্রধারীদের মধ্যে যুদ্ধ চরমে পৌঁছেছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, কিছু কিছু এলাকায় আফগান সেনাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অনেক স্থানীয়রা। তারাও তালেবান রুখতে একসঙ্গে কাজ করার কথা জানাচ্ছে।
কারদান বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান ফাহিম সাদাত আল জাজিরাকে বলেন, ‘সরকার তার নজরদারি বাড়াতে একটি অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে চলাচল সীমাবদ্ধ রাখতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘এই কারফিউ জনগণকে একটা বার্তা দিতে চায়, লড়াই একেবারে দরজায় এসে পৌঁছেছে। এই সময় স্থানীয়দের উচিত হবে সরকারকে সমর্থন দিয়ে তালেবান মোকাবিলা করা।’