মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপ্যাধায়ের বিরুদ্ধে বিচার ব্যবস্থাকে কলুষিত করার অভিযোগে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে আদালত। এ ছাড়া কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ নন্দীগ্রাম মামলা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
বুধবার বিচারপতি কৌশিক চন্দ জানান, মামলাকারীর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, তার জন্য তিনি সরে দাঁড়াচ্ছেন না, বিষয়টি বিতর্কিত হয়ে ওঠায় তিনি সরে দাঁড়াচ্ছেন।
মামলার রায় ঘোষণার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনি এজেন্ট শেখ সুফিয়ান বলেন, ‘একজন মূখ্যমন্ত্রীকে এইভাবে জরিমানা করা লজ্জাজনক ঘটনা। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা সুপ্রিমকোর্ট যাব।’
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়ান টুইট করে লেখেন, ‘আমরা এমন একটা পৃথিবীতে বাস করছি, যেখানে সত্যি কথা বলার জন্য পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হয়। আমরা এমন একটা পৃথিবীতে বাস করছি, যেখানে মিথ্যা প্রচারের জন্য কোনো দাম দিতে হয় না। প্রসঙ্গটা ধরা গেল? মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়। মোদি থাকলে সবই সম্ভব।’
তৃণমূল ছেড়ে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দিয়ে নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট যুদ্ধে নামেন। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয় দুপক্ষের।
নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে একবার মমতাকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। তারপর আবার অল্প ভোটের ব্যবধানে শুভেন্দু অধিকারীকে জয়ী বলে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
তৃণমূল নন্দীগ্রামের ভোট গণনায় বিজেপির বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ তোলে, ভোট গণনার সময় দীর্ঘক্ষণ সার্ভার ডাউন রাখা হয়েছিল বলে তৃণমূলের অভিযোগ। নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের ফল নিয়ে আদালতে যাবেন আগেই জানিয়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
এরপর শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে ভোট গণনায় কারচুপি করে জয়ী হয়েছেন বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে তৃণমূল কংগ্রেস হাইকোর্টে মামলা করে।
সেই মামলা কেন বিজেপি ঘনিষ্ঠ বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে, সেই প্রশ্ন তুলে বার কাউন্সিলের আইনজীবীরা এই মামলা থেকে বিচারপতি কৌশিক চন্দের অপসারণ চেয়ে আদালত চত্বরে প্রতিবাদ মিছিল করেন।
বার কাউন্সিলের চেয়ারপারসন অশোক দেব কৌশিক চন্দের অপসারণ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিকে চিঠি লেখেন। তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বিচারপতি কৌশিক চন্দের ছবি সামাজিক গনমাধ্যমে পোস্ট করে, বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতার প্রশ্নে এই মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান।
২৫ জুন এই মামলায় ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন মামলাকারী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার হয়ে এই মামলায় সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। সেখানে তিনি বিচারপতি কৌশিক চন্দকে এই মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর আর্জি জানান। সেদিন রায় ঘোষণা করেননি।
বুধবার এই মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। তাকে হেনস্তা করে আদালত কলুষিত করার জন্য মামলাকারীকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করে। ওই টাকা বার কাউন্সিলে জমা দিতে বলেছে। যা পরে কোভিড চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবে।
এবার নন্দীগ্রাম মামলা কোন আইনজীবীর এজলাসে যাবে তার সিদ্ধান্ত নেবেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল।