ভারতের উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রী তীর্থ সিং রাওয়াত পদত্যাগ করেছেন।
দায়িত্ব নেয়ার চার মাস পরই শুক্রবার পদত্যাগপত্র গভর্নরের হাতে তুলে দেন তিনি।
গত বছর রাজ্যটিতে নির্বাচনের পর দায়িত্ব নিয়েছিলেন তীর্থ।
হিন্দিতে দেয়া সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সাংবিধানিক সংকট দেখা দেয়ায় আমার মনে হয়েছে পদত্যাগ করা সঠিক। কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে না।’
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজেপি নেতা তীর্থ সিং গত তিন দিন দিল্লিতে ছিলেন। সেখানে তিনি বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সভা করেছেন। সভা থেকে তাকে শাসক দলটি থেকে পদত্যাগ করতে বলা হয়।
এরপরই তিনি গভর্নর বেবি রানী মৌর্য্যের সঙ্গে দেখার করার সময় চান। তবে তার আগেই একটি সভা করে পদত্যাগপত্র দলের প্রধান জেপি নদ্দার কাছে হস্তান্তর করেন।
উত্তরাখন্ডে বিজেপির বিধায়ক নতুন নেতা নির্বাচনে শনিবার মিটিং করবেন।
তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র রাওয়াতের সঙ্গে তীব্র মতবিরোধের মধ্যে উত্তরাখন্ডে নির্বাচনের এক বছরের বেশি সময় পর চলতি বছরের মার্চে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তীর্থ।
কিন্তু সাংবিধানিকভাবে দায়িত্ব নিলেও তীর্থ সিংকে একটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জিতে আসতে হবে। এটা আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই হতে হবে।
ভারতজুড়ে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ধাক্কার মধ্যেই গত ফেব্রুয়ারি-মার্চ-এপ্রিলে পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়। নির্বাচন কমিশনের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘অনেকগুলো নির্বাচন এখনও অনুষ্ঠিত হয়নি। করোনা পরিস্থিতি এখন প্রধান বিবেচ্য বিষয়।’
সাতপাল মহারাজা এবং ধন সিং রাওয়াত শীর্ষ পদ পেতে মরিয়া ছিলেন। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতে সেই দৌড়ে তীর্থর কাছে হার মানেন তারা।
এরপর তীর্থ রাওয়াতের কিছু বিক্তব্য বিতর্ক সৃষ্টি করে। উত্তরাখন্ডের অন্য নেতারা তার বক্তব্যে রাজ্যটিতে জনরোষের সৃষ্টি হয়েছে বলে দিল্লিতে বিজেপি নেতাদের কাছে অভিযোগ করেন।
এমনকি রাওয়াত তার দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলেও রোষে পড়েন।
ক্ষমতা নেয়ার পর নারীদের স্টাইলিশ ছেঁড়া জিন্স পরা নিয়ে মন্তব্য করে ব্যাপক সমালোচিত হন তিনি।
রাওয়াত বলেছিলেন, ভারতকে ২০০ বছর শাসন যুক্তরাজ্য করেনি; করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এ ছাড়া তিনি কুম্ভমেলা আয়োজনের পক্ষেও সোচ্চার ছিলেন।
তীর্থ বলেছিলেন, কুম্ভমেলায় অংশ নিতে তীর্থযাত্রীদের কোনো আরটিপিসিআর টেস্ট প্রয়োজন নেই।
বিজেপি সূত্র জানিয়েছে, তারা পার্বত্য রাজ্যটিতে অশান্তি সৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করতে তীর্থকে সরানোর পদক্ষেপ নিয়েছে।