বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নির্ধারিত সময়ের আগেই ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের শঙ্কা

  •    
  • ১৯ জুন, ২০২১ ১৪:৪০

অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া বলেন, ‘বিভিন্ন রাজ্যে আনলক পর্যায় শুরু হতেই জনগণের মধ্যে সচেতনতা উধাও। প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ থেকে আমরা যেকোনো শিক্ষা নিইনি। তা বোঝা যাচ্ছে। আবার নানা জায়গায় জমায়েত হচ্ছে। মানুষ ভিড় করছে। সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে যদিও সময় লাগবে। তবে এভাবে চললে ৬–৮ সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে।’

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসতেই শুরু ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে শুরু হয়েছে ‘আনলক’ প্রক্রিয়া। আর সেই আনলক পর্বে মানুষের অসচেতনতায় উদ্বিগ্ন বিচারপতি-চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞরা। তাদের আশঙ্কা নির্ধারিত সময়ের আগেই শুরু হয়ে যেতে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ।

শুক্রবারেই সাবধানী বাণী শুনিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। দীর্ঘ দেড় মাসেরও বেশি সময় লকডাউনে বন্দি থাকার পর সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে নামায় ধীরে ধীরে আনলক প্রক্রিয়া ঘোষণা করেছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এই সিদ্ধান্ত বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করে দিল্লি হাইকোর্ট।

শুক্রবার সকালে হাইকোর্টের তরফে সতর্ক করে বলা হয়, ‘কোভিড নিয়মবিধি ভঙ্গ হলে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউই এগিয়ে আসবে।’

এদিন রাতেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের গঠিত টাস্কফোর্সের বিশেষজ্ঞদের হুঁশিয়ারি, আনলক পর্ব শুরু হতেই যে হারে জনগণের ভিড় দেখা যাচ্ছে, তাতে নির্ধারিত সময়ের আগেই সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে।

আবার শনিবার সকালেই এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া বলেন, ‘বিভিন্ন রাজ্যে আনলক পর্যায় শুরু হতেই জনগণের মধ্যে সচেতনতা উধাও। প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ থেকে আমরা যেকোনো শিক্ষা নিইনি। তা বোঝা যাচ্ছে। আবার নানা জায়গায় জমায়েত হচ্ছে। মানুষ ভিড় করছে। সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে যদিও সময় লাগবে। তবে এভাবে চললে ৬–৮ সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে।’

এরপরই গুলেরিয়ার সংযোজন, ‘কোভিড বিধি সঠিকভাবে মানার উপরই সবকিছু নির্ভর করছে। ভিড় একদমই করা চলবে না।’

সংক্রমণের দুটি ঢেউয়েই সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হয়েছিল মহারাষ্ট্র, দিল্লি। তাই এবারও আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চান মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, অরবিন্দ কেজরিওয়ালরা। সেই কারণেই তৃতীয় ঢেউয়ের সম্ভাবনা ও তীব্রতা নিয়ে কোভিড টাস্ক ফোর্সের মতামত চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

এ বিষয়ে টাস্ক ফোর্সের সদস্য ড. রাহুল পণ্ডিত বলেন, ‘যদি সময়ের আগেই তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ে, তার জন্য আমাদের আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। আমাদের কিছু গাণিতিক মডেল অনুসরণ করে এবং তারপর বিশ্বের বাকি দেশগুলিতে সংক্রমণের ঢেউগুলি কেমন ছিল, তা যাচাই করেই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।’

রাহুল জানান, গাণিতিক মডেলের হিসাব অনুযায়ী দুটি ঢেউয়ের মাঝে ১০০ থেকে ১২০ দিনের ব্যবধান থাকে। বেশ কয়েকটি দেশে ১৪-১৫ সপ্তাহ পরেও সংক্রমণের ঢেউ আছড়ে পড়েছে। আবার কোনো দেশে ৮ সপ্তাহের ব্যবধানেই ফের সংক্রমণ বেড়েছে।

‘সুতরাং আমাদের আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে রাজ্যে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা দেড় লক্ষের কাছাকাছি হলেও তৃতীয় ঢেউ সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছলে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৮ লক্ষে পৌঁছতে পারে। সংক্রমণের দুটি ঢেউয়ে সংক্রমণ যারা এড়িয়ে গেছেন, এবার তাদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি বলে মনে করছেন কোভিড টাস্ক ফোর্সের সদস্যারা।’

যশলোক হাসপাতালের চিকিৎসক ওম শ্রীবাস্তব বলেন, ‘সংক্রমণের এই ঢেউয়ে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আগে থেকেই কিছু বলা খুব কঠিন। যারা আগের দুটি ঢেউ এড়িয়ে গিয়েছেন, তাদের এই ঢেউয়ে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।’

ধীরে ধীরে সংক্রমণ কমায় একে একে সমস্ত পরিষেবা আনলকের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তবে বাজারহাট, শপিং মল খুলতেই উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায় সর্বত্র। কয়েক মাসের বিপর্যয় কাটিয়েও সাধারণ মানুষের এই অসচেতনতা বড় বিপদ ডেকে আনবে বলে আগেই সতর্ক করেছিলেন চিকিৎসকরা।

চলতি মাসের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল জানিয়েছিলেন, করোনা তৃতীয় ঢেউ কবে রাজ্যে আছড়ে পড়তে পারে, তা নিয়ে আগাম সতর্কতা জানাতে একটি কোভিড টাস্ক ফোর্স তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে আইসিইউ বেড ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রীর পরিমাণও বাড়ানো হচ্ছে।

এ বিভাগের আরো খবর