পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির মোদি-অমিত শাহ জুটি হুঙ্কার দিয়েছিল ২০০ আসনে জেতার। ক্ষমতাসীন দলের হুঙ্কারকে ছেলেখেলায় পরিণত করে বড় জয় ঘরে তোলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস।
এবার ভারত জয়ের পথে হাঁটতে শুরু করছে তৃণমূল। সেই জয়ের এবার দ্বিতীয় টার্গেট ত্রিপুরা রাজ্য।
তৃণমূলের একটি সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন, সেখানকার বিজেপি সরকারকে হারাতে তৃণমূলের অভিষেক-মুকুল জুটি প্রস্তুতি শুরু করেছেন।
রাজ্যের বাইরে তৃণমূলের সংগঠন বাড়াতে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন খুব ভালো বিকল্প হিসেবে নেবে তৃণমূল। যেহেতু মুকুল রায়ের হাত ধরে একসময় ত্রিপুরায় তৃণমূলের সংগঠন ছিল, তাই মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দিলে ত্রিপুরায় তৃণমূলের সংগঠন অনেকটা ঝিমিয়ে পড়ে।
সেই মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে ফিরেছেন ঘরের মাঠ, তৃণমূলে। এবার পূর্ণ শক্তি নিয়ে ত্রিপুরায় তৃণমূল কাজ করবে বলে দলের কয়েকজন নেতাও কথা বলেছেন।
অন্যদিকে, ত্রিপুরা বিজেপির অন্দরের কোন্দল এখন সর্বজনবিদিত। একদিকে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব, অন্যদিকে সুদীপ রায় বর্মন ও গোষ্ঠী।
এক সময় মুকুল রায়ের হাত ধরে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেয় সুদীপ রায় বর্মন। ২০১৭ সালে মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দিলে ত্রিপুরায় ভোটের আগে সুদীপ রায় বর্মনরাও বিজেপিতে যোগ দেন।
এখন, মুকুল রায় তৃণমূলের ভারত জয়ের লক্ষ্যে ত্রিপুরায় তার অনুগামীদের তৃণমূলে ফেরানোর চেষ্টা করবেন, তা বলাই বাহুল্য।
অন্যদিকে সুদীপ রায় বর্মন ও অন্য বিধায়করা বিভিন্ন কারণে বিজেপির ওপর বিরক্ত। বিজেপির দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে, সময় চেয়েও পাননি।
বিপ্লব দেব সরকারের অংশ হিসেবে থেকেও সুদীপ রায় বর্মনরা বিভিন্ন সময়ে বিজেপি সরকারের প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন। তবুও বিজেপি ছাড়েননি।
এবার আবার মুকুল রায় তৃণমূলে ফিরে আসায় মুকুল ঘনিষ্ঠ সুদীপের হাত ধরে ত্রিপুরা বিজেপি বড়সড় ভাঙনের মুখে পড়তে চলেছে বলে সূত্র জানাচ্ছে।
মুকুল রায় এরইমধ্যে ত্রিপুরায় কারা কারা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসতে পারেন, তার একটা সম্ভাব্য বড় তালিকা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিয়েছেন বলেও সেই সূত্র জানিয়েছে।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন, মুকুল রায়কে তিনি ফেরত নিয়েছেন, আগের ভূমিকা পালন করার জন্য। সর্বভারতীয় রাজনীতিতে মুকুল রায়ের গুরুত্ব বুঝে দল তাকে কাজে লাগাতে চাইছে।
তাই বাঙালি আবেগকে কাজে লাগিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে তৃণমূলের সংগঠনকে শক্তিশালী করে, ২০২৪ সালে কেন্দ্রে সরকার নির্বাচনের আগে বিজেপিকেবড় ধরনের ধাক্কা দিতে তৃণমূল ত্রিপুরাকে টার্গেট করেছে।
তৃণমূলের প্রথম টার্গেট ২০২৩ সালের ত্রিপুরার নির্বাচন, পাশাপাশি নজর রেখেছে মনিপুর রাজ্যের ;িদকেও।
মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ সুদীপ রায় বর্মন ও গোষ্ঠী, ত্রিপুরায় বিজেপি ছেড়ে বেরিয়ে তৃণমূলে যোগ দিলে বুঝতে হবে, ভারত জয়ের লক্ষ্যে তৃণমূলের প্রস্তুতি খেলা শুরু।