করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও ২০২১-২২ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়েছে পাকিস্তান।
৮ দশমিক ৪৮ ট্রিলিয়ন রুপির বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ দশমিক ৩৭ ট্রিলিয়ন রুপি, যা গত অর্থবছর থেকে ৬ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। এই বরাদ্দ পাকিস্তানের মোট বাজেটের ১৬ শতাংশ, দেশিটির মোট দেশজ (জিডিপি) উৎপাদনের ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
বাজেটে বিশাল এই বরাদ্দ দেখিয়ে দিচ্ছে পাকিস্তানের কী পরিমান অর্থ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় হয়। ব্যয়ের এই খাত দিন দিন দেশটির জাতীয় অর্থনীতির জন্য বড় বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
পাকিস্তানে সামরিক ব্যয় নির্বাহে বরাদ্দকৃত বাজেটের বাইরেও বিশাল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়। যেমন অবসরপ্রাপ্ত সেনাদের জন্য ৩৬০ বিলিয়ন রুপির খরচটা যায় বেসামরিক কার্যকলাপের জন্য বরাদ্দ থেকে।
বড় মাপের সামরিক অধিগ্রহণের জন্যও আলাদা বরাদ্দ দেয়া হয় বলে ধারণা করা হয়। আর পারমাণবিক অস্ত্র সুরক্ষার জন্য অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি গোপনীয়ই থেকে যায়।
তবে নতুন অর্থবছরের জন্য সামরিক খাতে বাজেট বৃদ্ধির বিষয়টি যৌক্তিক দেখছেন অনেকে। প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে তাল মেলানো এবং আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারে চাপ পড়তে পারে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ওপর। দেশটির সেনাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপালন করতে হতে পারে আফগানিস্তানে।
সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাও অনেকটা নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান। উচ্ছৃঙ্খল অবস্থা বেলুচিস্তানেও। এসব কিছু দেশটির নিরাপত্তাবাহিনীর চ্যালেঞ্জ বাড়িয়ে দিয়েছে।
বাজেটে বলা হয়েছে প্রতিরক্ষা খাতে সরঞ্জামাদি কেনার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৩৯১ দশমিক ৫ বিলিয়ন রুপি, যা আগের অর্থবছর শেকে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। আর সেনাবাহিনীর বেসামরিক কার্যক্রমের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৬৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন রুপি, যা গত বছর অর্থবছর থেকে ৯ দশমিক ২ শতাংশ বেশি।
প্রতিরক্ষা বাজেটের ৩৫ শতাংশ তথা ৪৮১ দশমিক ৬ বিলিয়ন যাবে সেনাদের বেতন ও অন্যান্য ভাতাদির পেছনে।
বরাবরের মতো এবারও প্রতিরক্ষা বাজেটের বড় অংশ পাচ্ছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী, ৬৫১ দশমিক ৫ বিলিয়ন রুপি (৪৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ)। এরপর রয়েছে পাকিস্তান বিমানবাহিনী, ২৯১ দশমিক ২ বিলিয়ন রুপি (২১ দশমিক ২৬ শতাংশ)। তৃতীয়স্থানে আছে পাকিস্তান নৌবাহিনী ১৪৮ দশমিক ৭ বিলিয়ন রুপি (১০ দশমিক ৮৫ শতাংশ)। সামরিক বাহিনীর অন্যান্য উইংয়ের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৭৮ দশমিক ৩২ বিলিয়ন রুপি (২০ দশমিক ৩২ শতাংশ)।