পৌরসভা মেয়র নির্বাচনে ভোট বর্জন করেছেন পাবনার চাটমোহর ও সাভারের ধামরাইয়ের একাধিক প্রার্থী। এ ছাড়া সহিংসতার মধ্য দিয়ে ভোট হচ্ছে পঞ্চগড় পৌরসভায়।আরও পড়ুন: ভোট হচ্ছে ২৪ পৌরসভায়
চাটমোহর
সোমবার ভোট শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মির্জা রেজাউল করিম দুলাল এবং বিএনপির বিদ্র্রোহী প্রার্থী এস এম আব্দুল মান্নান।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মির্জা রেজাউল চাটমোহরের মধ্য শালিকায় নিজ বাসভবনে সকালে সাংবাদিকদের বলেন, তার এজেন্টদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।
‘গত রাতে আমার এজেন্ট ও কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সন্ত্রাসী বাহিনী। আমার ভোটারদের ভোট দিতে দেয়া হচ্ছে না।’
এজেন্টদের কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেয়ার অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নানেরও। চাটখিলের সবুজ সংঘ মাঠের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, রোববার রাত থেকেই তার এজেন্টদের হুমকি দেয়া হচ্ছে।
আব্দুল মান্নান বলেন, ‘নৌকা প্রতীক ছাড়া অন্য কোন প্রতীকে ভোট দিতে দেয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্ত্রাসী বাহিনী ভাড়া করে এনেছেন নৌকার প্রার্থী।’
অবশ্য এসব অভিযোগ প্রত্যাখান করে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, ভোটের পরিবেশ স্বাভাবিক আছে।
ধামরাই
ভোট জালিয়াতির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী দেওয়ান নাজিম উদ্দিন মঞ্জু।
দুপুরে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘(ইভিএমে) টিপ দিলে আমার প্রতীক দেখায় না। অধিকাংশ কেন্দ্রেই এ অবস্থা। যেটার মধ্যেই ঢুকছে সেটার মধ্যেই ধানের শীষের প্রতীক নেই। ৮ থেকে ১০ কেন্দ্রের মধ্যে প্রতীক নেই।’
জালিয়াতির অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী দেওয়ান নাজিম উদ্দিন মঞ্জু। ছবি: নিউজবাংলানির্বাচন বর্জন করেছেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সরকারের প্রহসনের নির্বাচন এইডা। সরকারের ছত্রছায়ায় এই গুলা করতাছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছত্রছায়ায় কবির মোল্লা (আওয়ামী লীগের প্রার্থী) এইগুলা করতাছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ চাই আমি। এটা কি ইলেকশন না কি?
‘ওসি সাহেবরে ৫০ বার রিং দিলাম। তাকে পাওয়া যায় না। ভ্রাম্যমাণ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত দিয়া আসছি। এই মর্মে, আমি পুনর্নির্বাচন চাই। আমি এই নির্বাচন মানি না।’
পঞ্চগড়ে ভাঙচুর
উত্তপ্ত পরিবেশে ভোট চলছে পঞ্চগড় পৌরসভায়। সেখানে রিটার্নিং কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর এবং এক কেন্দ্রে আ. লীগ প্রার্থী সমর্থকদের হামলা হয়েছে।
সোমবার দুপুর ১১টার দিকে পঞ্চগড় আদর্শ শিক্ষা নিকেতনে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, তিনি ভোট পর্যবেক্ষণে কেন্দ্রের ভেতরে গেলে এক দল লোক এসে তার গাড়ি ভাঙচুর করে।
পঞ্চগড়ের একটি কেন্দ্রের বাইরে পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। ছবি: নিউজবাংলাভাঙচুর হয়েছে তুলারডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং এজেন্টদের পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করায় ওই কেন্দ্রে ভোট বন্ধ আছে।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং এজেন্টরা গেট বন্ধ করে স্কুলের দুতলায় অবস্থান নিয়েছেন।
কেন্দ্রের বাইরে পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে পঞ্চগড় সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী ভোট দিতে এলে তার সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে স্লোগান দিতে শুরু করে। পুলিশ বাধা দিতে গেলে তাদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এরপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিএনপির মেয়র প্রার্থী তৌহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা সহিংস আচরণ করছে। তারা সুষ্ঠু ভোট হতে দিচ্ছে না।