করোনা ভাইরাসের কারণে দেশে এসে আটকে পড়া মালয়েশিয়া প্রবাসীরা এবার কর্মস্থলে ফেরার দাবিতে রাস্তায় নেমেছে।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছে কয়েকশ প্রবাসী।
তাদের এই অবস্থানের কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে অফিসগামী মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে।
একই দিন বায়তুল মোকাররম এলাকায় অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেছে ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। ফ্রান্সে মহানবী (সা.) এর কার্টুন প্রকাশের জেরে বাংলাদেশে দেশটির দূতাবাসে ঘেরাওয়ের কর্মসূচি রয়েছে।
পাশাপাশি দুটি এলাকায় সড়কে জমায়েতের প্রভাব পড়েছে রাজধানীর একটি বড় অংশে। বিকল্প সড়ক ধরে গাড়ি চলাচল করায় সেগুলোতেও তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে। গাড়ি থেকে নেমে হাজার হাজার মানুষকে হেঁটে চলতে দেখা গেছে।
আন্দোলনরত মুন্সিগঞ্জের মালয়েশিয়া প্রবাসী মোহাম্মদ রনি নিউজবাংলাকে জানান, গত ১৬ মার্চ ছুটিতে দেশে এসেছিলেন, করোনা মহামারিতে ফ্লাইট যোগাযোগ বন্ধ থাকায় আর কর্মস্থলে ফেরা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘ফ্লাইট বন্ধ থাকায় দেশে প্রায় ৩০ হাজার মালয়েশিয়া প্রবাসী আটকা পড়েছে। যাদের ৮০ ভাগের ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। এখন মালয়েশিয়ায় না ফিরতে পারলে পথে বসতে হবে।’
- আরও পড়ুন: অবশেষে খুলল ইতালির দুয়ার
রনি বলেন, ‘সরকার প্রবাসীদের জীবন জীবিকা নিয়ে ভাবছে না। তাই আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তা অবরোধের মতো কর্মসূচি দিয়েছি।
‘দুইটার মধ্যে কর্মসূচি শেষ করে সবাই সড়ক ছেড়ে দেয়। পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে পরে জানাব।’
নোয়াখালী বেগমগঞ্জের মাইনউদ্দিন চার মাসের ছুটিতে ফেব্রুয়ারিতে দেশে এসেছিলেন, সঙ্গে এনেছিলেন ফিরতি টিকেট। এখন নয় মাস পেরিয়ে গেলেও কর্মস্থল মালয়েশিয়ায় ফিরতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘ফিরতে না পারলে আমার পরিবারকে কী করে চালাব?’
- আরও পড়ুন: সৌদির বিমান টিকিট ভিসার মেয়াদের ওপর
সাভার থেকে আসা মাসুদ মিয়া বলেন, ‘গত কয়েক মাস বেকার দেশে বসে আছি। সরকারি সহযোগিতা দিবে বলে বিভিন্ন ব্যাংক পাসপোর্ট ও আইডি কার্ডের ফটোকপি নিয়েছে। অথচ কোন সহযোগিতা পাইনি।’
করোনা পরিস্থিতিতে দেশে এস ফিরতে না পেরে এর আগে টানা বিক্ষোভ করেছে সৌদি প্রবাসীরা। বিমানের টিকিটের দাবিতে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ও অক্টোবরের শুরু পর্যন্ত রাজধানীর কারওয়ানবাজার এলাকায় সৌদি এয়ারলাইনসের কার্যালয়ের সামনে টানা বিক্ষোভ করেছে তারা।
বিক্ষোভের মধ্যে সৌদি সরকার প্রবাসীদের ভিসা ও আকামার মেয়াদ বাড়ানোসহ নানা ঘোষণা দিয়েছে।
ইতালি প্রবাসীরাও ঢাকায় দেশটির দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করেছে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে। এর পর ইতালি সরকারও বাংলাদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়েছে।
ফেরার টিকিটের দাবিতে গুলশানে বিক্ষোভ করেছে তুরস্ক প্রবাসীরাও।