সিলেটে পুলিশের হেফাজতে রায়হান আহমদ হত্যার বিচার ও জড়িতদের গ্রেফতার চেয়ে আমরণ অনশনে বসেছেন তার মা সালমা বেগম, চাচা হাবিবউল্লাহ চৌধুরীসহ রায়হানের অন্তত ২০ জন স্বজন।
রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে তারা অনশনে বসেন।
সালমা বেগম বলেন, ‘এই ফাঁড়িতেই রায়হানকে হত্যা করা হয়েছে। এই ফাড়ি থেকে আমার লাশ যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের প্রায় দুই সপ্তাহ হতে চললেও মূল অভিযুক্ত আকবর এখনও গ্রেফতার হয়নি। সে কোথায় আছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল শনিবার বলেছেন, তারা এই হত্যায় সন্দেহভাজনদেরকে চিহ্নিত করেছেন। এসআই আকবর অচিরেই গ্রেফতার হবেন বলেও আশা করেছেন তিনি।
রায়হানের চাচা হাবিবউল্লাহ চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রায়হান হত্যার সঙ্গে জড়িতরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অনশন চলবে। আমরা অভিযুক্তদের ফাঁসি চাই।’
১১ অক্টোবর ভোরে সিলেট নগরের কাস্টঘর এলাকায় ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে রায়হানের মৃত্যু হয় বলে দাবি করে পুলিশ। যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কোনো ছিনতাই বা গণপিটুনির কথা তারা শোনেননি। পাশাপাশি ওই এলাকার ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা ফুটেজে যুবককে গণপিটুনির কোনো প্রমাণই মেলেনি বলে জানান স্থানীয় কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মুনিম।
পরিবারের অভিযোগ, ফাঁড়ি থেকে ফোন দিয়ে রায়হানকে ছাড়িয়ে আনতে তাদের কাছে ১০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল। পুলিশের নির্যাতনেই তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী ১২ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
১৪ অক্টোবর এ মামলার তদন্ত ভার পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে পিবিআই বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারা ২০ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে গ্রেফতার করে। তবে প্রধান অভিযুক্ত পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন এখনও পলাতক।
- আরও পড়ুন: ‘হেফাজতে মৃত্যু’, বরখাস্ত এসআই আত্মগোপনে
রায়হানের দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের জন্য ১৫ অক্টোবর তার মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়। ময়নাতদন্ত করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ। ওই বিভাগের প্রধান শামসুল ইসলাম জানান, ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতেই রায়হানের মৃত্যু হয়। তার দেহে আঘাতের ১১১ টি চিহ্ন রয়েছে। গুরুতর জখম রয়েছে ১৪ টি।