করোনা মহামারির কারণে এইচএসসির পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগামী বার্ষিক পরীক্ষাও বাতিল হতে পারে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে সংবাদ সম্মেলনে আসছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের জানিয়েছেন, বুধবার বেলা ১২টার দিকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সিদ্ধান্ত জানাবেন মন্ত্রী।
সিদ্ধান্ত কী আসছে, সেটা আগে ভাগে জানাতে চান না শিক্ষা সচিব আলমগীর হোসেন। তবে মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সব পরীক্ষাই তো বাতিল হয়েছে। সে ক্ষেত্রে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে আর কতটা মূল্যায়ন করা যাবে?’
করোনার প্রকোপ গত দুই মাসে কিছুটা কমে আসলেও আগামী শীত মৌসুমে দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিষয়ে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই অবস্থায় শীতে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলে মনে করেন রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র আববার হোসাইনের বাবা সফিকুল ইসলাম।
নিউজবাংলাকে এই অভিভাবক বলেন, ‘সাত মাস স্কুল বন্ধ, অনলাইনে ক্লাস হলেও সেভাবে মনযোগ থাকে না ছেলেদের। আবার করোনার ভয়ও যায়নি। এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষা না নিয়ে অন্য কোনো উপায়ে মূল্যায়ন করা যেতে পারে।’
স্কুল খোলা অবস্থায় শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে যাচ্ছেন। ছবি: নিউজবাংলা
আববারের স্কুলের অধ্যক্ষ শাহানা আরা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের দুটি প্রস্তুতিই আছে। সিদ্ধান্ত এলে আমরা পরীক্ষা নেব। আর অন্য কোনো সিদ্ধান্ত এলে সে অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করতে পারব।’
আপনি ব্যক্তিগতভাবে পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে কি না- এমন প্রশ্নে এই শিক্ষক বলেন, ‘এটা তো আমাদের বিষয় না। মন্ত্রণালয় যদি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে আমাদেরকে পরীক্ষার্থীদেরকে ডাকতে হবেই।’
মহামারির কারণে সম্প্রতি বাতিল করা হয়েছে এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষা। জেএসসি ও এসএসসির ফলাফলের গড়ের মাধ্যমে ঠিক করা হবে এইচএসসির ফল।
- আরও পড়ুন : প্রাথমিকে ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি
বাতিল হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি), ইবতেদায়ি সমাপনী (ইইসি), জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষাও।
গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। কয়েক দফা বাড়িয়ে ছুটির মেয়াদ করা হয়েছে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত।
যদিও এ মুহূর্তে অনলাইন ও টেলিভিশনে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। তবে দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি শিশু-কিশোর অনলাইনের ক্লাসে যোগ দিতে পারছে না।
আর্থিক বা প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতার কারণে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় পরীক্ষা নিলে একটি বড় অংশের শিক্ষার্থীদের ফলাফল খারাপ হতে পারে।
এরই মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের শিশুদের কোনো পরীক্ষা ছাড়া পাস করানোর সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তারাও বিকল্প উপায়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের কথা বলছে।