আলুর দাম শর্তসাপেক্ষে সরকার নির্ধারিত ৩০ টাকায় নামিয়ে এনেছে সুপার শপগুলো। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়।
তবে যত খুশি তত কেনার সুযোগ নেই। একজন ক্রেতাকে সর্বোচ্চ দুই কেজি করে আলু ও পেঁয়াজ দেবে একটি প্রতিষ্ঠান। সেটাও আবার শর্তাধীন।
দেশের শীর্ষ সুপারশপ ‘স্বপ্ন’ এর সব আউটলেট ও অনলাইন ‘স্বপ্নডটকম’-এ মঙ্গলবার সকাল থেকে গ্রাহকরা এই দামে আলু ও পেঁয়াজ কিনতে পারছেন।
স্বপ্নের হেড অব বিজনেস মাহাদী ফয়সাল বলেন, ‘সর্বনিম্ন ৩০০ টাকার অন্যান্য পণ্য কিনলে প্রত্যেক ক্রেতা প্রতি কেজি আলু ৩০ টাকা ও পেঁয়াজ ৭৫ টাকায় পাবেন। একজন ক্রেতা কিনতে পারবেন সর্বোচ্চ দুই কেজি। অফারটি স্টক শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলবে।
- আরও পড়ুন: ২৫ টাকায় আলু বেচবে সরকার
মজুদদাররা যাতে বিক্রির জন্য আলু কিনে নিয়ে যেতে না পারেন সেজন্যই এই শর্ত দেয়া হয়েছে বলেও জানান স্বপ্ন কর্মকর্তা।
মিনাবাজারেও আলু মিলছে ৩০ টাকায়। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা প্রতি কেজি আলুতে ১০ টাকা লোকসান দিচ্ছি। কেননা পাইকারি বাজারে ৪০ টাকার কমে আলু পাওয়া যাচ্ছে না।’
আলুর দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার পর গত ৭ অক্টোবর কৃষি বিপণন অধিদপ্তর আলুর পাইকারি ও খুচরা দাম নির্ধারণ করে দেয়।
উৎপাদন, মজুদের খরচ ও ‘যৌক্তিক মুনাফা’ হিসাব করে হিমাগারে ২৩ টাকা, পাইকারিতে ২৫ টাকা এবং খুচরায় সর্বোচ্চ দাম ৩০ টাকা ঠিক করা হয়।
দাম নির্ধারণ করে জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠানো চিঠি প্রকাশ হয় এক সপ্তাহ পর।
তবে নির্ধারিত দামে এখনো খুচরায় মিলছে না আলু। হিমাগার মালিকরা ২৩ টাকায় আলু বেচতে রাজি হচ্ছেন না। এই অবস্থায় সরকার টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে ২৫ টাকায় আলু বেচার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রোববার।
খোলাবাজারের পাশাপাশি সুপার শপগুলোও এতদিন সরকারি নির্দেশ অমান্য করে আসছিল। তবে রোববার বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশির হুঁশিয়ারির দুই দিন পর তারা নির্ধারিত খুচরা মূল্যে আলু বিক্রিতে রাজি হয়েছে।
মন্ত্রী বলেছেন, তাদের ঠিক করা দামে না বেচলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার।
মিনাবাজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যদি আমরা ৩০ টাকায় আলু না দেই, তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান হলে বড় অংকের জরিমানা গুণতে হবে। আবার আলু বিক্রি বন্ধ করে দিলে ক্রেতা হারাতে হবে।’
- আরও পড়ুন: আলু আছে, পাইকার ‘নাই’
গত মৌসুমে দেশে উৎপাদন চাহিদার চেয়েও বেশি ছিল বলে জানিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। সরকারি হিসাব দেশে আলুর চাহিদা ৭৭ লাখ নয় হাজার টন হলেও উৎপাদন হয়েছে তার দেড় গুণ; প্রায় এক কোটি নয় লাখ টন।
উদ্বৃত্ত ৩১ লাখ ৯১ হাজার টন আলুর একটি অংশ রপ্তানি হয়েছে। তাই ঘাটতির কোনো কারণ নেই বলে মনে করছে অধিদপ্তর।