ভালোবাসার প্রতীক গোলাপ ফুল। প্রেমিক-প্রেমিকারা একে অপরকে ভালোবাসে উপহার দেন এই ফুল। তবে গোলাপ এখন শুধু আর ভালোবাসার প্রতীকেই সীমাবদ্ধ নয়, এই ফুল দিয়ে তৈরি চা পান করলে বেশি কিছু রোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব।
গোলাপ হাজার বছর ধরে ওষধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ১৩০ টিরও বেশি গোলাপের প্রজাতি রয়েছে। এর সব প্রজাতি ভোজ্য এবং চায়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে কিছু প্রজাতি মিষ্টি এবং অন্যগুলো তেতো।
গোলাপ চা এমন একটি সুগন্ধি ভেষজ পানীয় যা গোলাপ ফুলের সুগন্ধি পাপড়ি এবং কুঁড়ি থেকে তৈরি। এটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। গোলাপের চা অন্যান্য় চায়ের মতো অত জনপ্রিয় ছিল না। তাই জনপ্রিয় হতে সময় লেগেছে। গোলাপ চায়ের উপকারিতা অনেক।
শুধু ওজন কমাতেই সাহায্য করে তাই নয়, তার সঙ্গে আপনার পেটের নানারকম সমস্যাও সমাধান করে এই গোলাপ চা। ত্বক এবং চুলও ভালো রাখে। এর মধ্য়ে আছে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। হজমে সাহায্য করে। আপনার স্ট্রেস কম করে। মন ভালো রাখে।
ক্যাফেইন মুক্ত
কফি, চা এবং এমনকি গরম চকোলেটেও ক্যাফেইন থাকে। যদিও ক্যাফেইন ক্লান্তি দূর করার জন্য, সতর্কতা এবং শক্তি বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য, তবুও অনেকে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সহ্য করতে পারে না। উদাহরণস্বরূপ, ক্যাফিন রক্তচাপ বাড়াতে পারে এবং কিছু মানুষের মধ্যে উদ্বেগের অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে।
গোলাপ চা প্রাকৃতিকভাবে ক্যাফেইন মুক্ত এবং এইভাবে এই চা সব মানুষের জন্য ভালো প্রমাণিত হতে পারে। এটি একটি ক্যাফেইন ফ্রি অল্টারনেট ড্রিঙ্ক। যা আপনার শরীরের জন্য খুবই ভালো। আপনার সহজেই খিদে পায় না। তাই এই গোলাপের চা সব সময়ই একটি ভালো অপশন।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
ইউরিরানি ট্র্যাকে সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। আপনার শরীরের টক্সিন বের করে দেয়। তার ফলে আপনার শরীরের ওজন থাকে সঠিক।
এই চা শরীরে ঘাটতি পূরণ করে আপনার বিপাক বৃদ্ধি করে ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে ১৭ আউন্স (৫০০ মিলি) পানি পান আপনার বিপাক ৩০ ভাগ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। যদি আপনার ওজন কমে যায়, তাহলে প্রতিদিন সকালে গোলাপ চা পান করা উচিত।
ক্যানসার এবং ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো হলো যৌগ যা র্যাডিকেলের প্রভাবগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এগেুলো এমন অণু যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস সৃষ্টি করে, যা অনেক রোগ এবং অকাল বার্ধক্যের সঙ্গে যুক্ত। গোলাপ চায়ে থাকা পলিফেনল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি নির্দিষ্ট ধরনের ক্যানসার, হৃদরোগ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। ১২ প্রকারের গবেষণায় দেখা গেছে যে, গোলাপ চায়ের ফিনল উপাদান এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সবুজ চায়ের সমান বা তার বেশি। এই চা বিশেষ করে গ্যালিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগটি অ্যান্টিক্যান্সার, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যানালজেসিক প্রভাব বলে পরিচিত।
হজমে সাহায্য করে
গোলাপের চা ভেষজ। যা হজমের ক্ষমতা বাড়ায়। ওজন কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর ডায়জেস্টিভ সিস্টেম প্রয়োজন। সারাদিনে এক বা দুই কাপ গোলাপের চা বা রোজ টি আপনি খেতে পারেন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
এই ভেষজ চা আপনাকে নানারকম অসুস্থতা ও সংক্রমণ থেকে দূরে রাখে। আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর মধ্য়ে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। যা নানা রকম সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকলে, ওজনেরও তেমন কোনও হেরফের হয় না।
গোলাপের চা যেভাবে তৈরি করবেন
এক কাপ গোলাপের পাপড়ি, তিন কাপ পানি, আদা, ছোট একটি দারুচিনি নিন। চাইলে আপনার চায়ে স্বাদমতো চিনি যোগ করতে পারেন।
খুব ভালো করে গোলাপের পাপড়ি ধুয়ে নিন। একটি পাত্রে গোলাপের পাপড়ি ও জল দিয়ে অল্প আঁচে পাঁচ মিনিট ফোটান। পাঁচ মিনিট পর আঁচ বন্ধ করে দিন।
আদা ও দারুচিনি গুঁড়ো করে চায়ের মধ্যে দিয়ে ঢাকা দিয়ে দিন। আপনি আদা বা দারুচিনির পরিবর্তে এলাচগুঁড়োও ব্যবহার করতে পারেন। এক মিনিট ঢাকা দওয়া অবস্থায় রেখে ছেঁকে নিন। সূত্র: এই সময়