লাখো মুসল্লির সমাগমে কানায় কানায় পূর্ণ টঙ্গীর তুরাগ তীরের বিশ্ব ইজতেমা ময়দান। ১৬০ একরের ময়দানে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় মুসল্লিদের অনেকে ময়দানের আশপাশের সড়ক ও ফুটপাতে তাঁবু টানিয়ে অবস্থান নিয়েছেন।
এদিকে শীতের মধ্যে হঠাৎ বৃষ্টিতে দুর্ভোগে পড়েছেন ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নেয়া মুসল্লিরা। শামিয়ানা চুঁইয়ে পানি পড়ে অনেকের বিছানাপত্র ভিজে গেছে। এ অবস্থায় মুসল্লিদের অনেকে আশপাশের দোকান থেকে পলিথিন বা ত্রিপল কেনার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হলে মূল মঞ্চে মুরব্বিদের বয়ান বন্ধ হয়ে যায়। সবাইকে ধৈর্য্য ধরে খিত্তায় অবস্থান করার আহ্বান জানান আয়োজকরা।
বৃহস্পতিবার দিনভর আকাশ মেঘলা থাকলেও মাগরিবের নামাজের পর বৃষ্টি শুরু হয়। চটের শামিয়ানার নিচে বৃষ্টি প্রতিরোধের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ভিজে গেছে মুসল্লিদের বিছানা ও মালপত্র। ময়দানের নিচু স্থানে জমেছে পানি।
ইজতেমায় আসা মুসল্লি ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘নামাজের পর বয়ান শুরু হওয়ার পর হঠাৎই বৃষ্টি নামে। চটের সামিয়ানার নিচে বৃষ্টি প্রতিরোধের কোনো কিছু না থাকায় অনেক মুসল্লির বিছানা, মালপত্র ভিজে গেছে।’
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থেকে আসা মুসল্লি তসলিম হোসেন বলেন, ‘আমরা ৮০ জন সাথী ইজতেমা ময়দানে এসেছি। গতকাল (বুধবার) রাতে এবং আজ সন্ধ্যার বৃষ্টিতে সবাই দুর্ভোগে রয়েছেন। তবে আল্লাহ আমাদের ইমানি পরীক্ষা নিচ্ছেন। কষ্ট হলেও ইজতেমা শেষ করেই আমরা বাড়ি ফিরবো ইনশাআল্লাহ।’
আরেক মুসল্লি জামিল হোসেন বলেন, ‘শীতের মধ্যে এই বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য ত্রিপল কিনেছি। তবে এই সুযোগে বিক্রেতাদের অনেকেই বাড়তি দাম আদায় করছেন।’
তাবলিগ জামাতের দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাবলিগের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরোধী পক্ষ মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমার প্রথম পর্বে অংশ নিচ্ছেন। তিন দিনব্যাপী এই পর্ব ২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার শুরু হয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি রোববার আখেরি মুনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
চারদিন বিরতির পর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ৯, ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি। প্রথম পর্বে অংশ নিতে ইজতেমা ময়দানে জমায়েত হচ্ছেন মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা।
আয়োজকরা বলছেন, বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দিন দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে এখানে। দুপুর দেড়টার দিকে কাকরাইলের মুরব্বি মাওলানা জোবায়ের এ জুমায় ইমামতি করবেন।
বৃহত্তম জুমার এই জামাতে অংশ নিতে প্রতি বছরই তাবলিগের মুসল্লি ছাড়াও গাজীপুর ও আশপাশের জেলা থেকে আগের রাতেই ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নেন অনেক মুসল্লি। ব্যতিক্রম হয়নি এবারও।