বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এটিএম বুথে ঈদ কাটে তাদের

  •    
  • ২ মে, ২০২২ ১৩:৪৮

কোথাও কোথাও দুই ঈদেই থাকতে হয় কর্মক্ষেত্রে। আবার কোথাও এক ঈদে ছুটি কাটালে অন্য ঈদে দায়িত্ব পালন করতে হয় এসব নিরাপত্তাকর্মীকে। ছুটি মিললে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উৎসব উদযাপনের অংশীদার হতে চান তারা।

নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে যখন ব্যস্ত রাজধানীবাসী, তখনও ব্যস্ততা কমে না ব্যাংকগুলোর এটিএম বুথের নিরাপত্তাকর্মীদের। দায়িত্ব পালন করতে হয় ঈদের দিনেও। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে অংশ নিতে পারেন না অধিকাংশ কর্মীই।

কোথাও কোথাও দুই ঈদেই থাকতে হয় কর্মক্ষেত্রে। আবার কোথাও এক ঈদে ছুটি কাটালে অন্য ঈদে দায়িত্ব পালন করতে হয় এসব নিরাপত্তাকর্মীকে। ছুটি মিললে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উৎসব উদযাপনের অংশীদার হতে চান তারা।

মঙ্গলবার দেশে উদযাপিত হতে যাচ্ছে ঈদুল ফিতর; এর আগে রোববার নগরের এটিএম বুথগুলোর নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত বেশ কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে এসব বিষয়ে আলাপ হয় নিউজবাংলার।

এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যালে অগ্রণী ব্যাংকের এটিএম বুথের দায়িত্বে নিয়োজিত ৬৫ বছর বয়সী মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটি যে থাকে না, তা না। যারা আগে যাইতে চায় হেরা যাইতে পারে। আর যারা থাইক্কা যায় হেরা পরে ছুটি পায় পরে।’

বরিশালের মেহেদীগঞ্জে গ্রামের বাড়ি মোজাম্মেলের। ১২ বছর ধরে নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি করেন তিনি। চার বছর হলো স্ত্রীকে ঢাকায় নিয়ে এসেছেন।

ছোটবেলার ঈদের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘বহুত পার্থক্য; হেই সময়কার আনন্দ। বাবা-মা কাপড় কিনে দিত। সবাই মিইলা আনন্দ তো আছে। এরপরে যহন চাকরিতে আইছি; হে সময় ছেলেপেলে যখন বাড়ি ছিল; হে সময় যদি বাড়ি না যাইতে পারতাম ভীষণ খারাপ লাগত। তবে এখন আর খারাপ লাগে না।

ঈদের দিনে সকালে এসে বিকেল পর্যন্ত ডিউটি করতে হবে বলে জানান মোজাম্মেল। বলেন, ‘সবার ছুটি দিলে কাজ বন্ধ হয়ে যাবে একেবারে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তফসিলভুক্ত ৫৯টি ব্যাংকের মধ্যে এটিএম বুথভিত্তিক সেবা দিচ্ছে ৫১টি ব্যাংক। তথ্যমতে, দেশে সবগুলো ব্যাংকের এটিএম বুথের সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৭২২। স্থাপিত এটিএম বুথগুলোর সিংহভাগই রাজধানীসহ অন্যান্য সিটি করপোরেশন এবং জেলা শহরে সীমাবদ্ধ।

রাজধানীর আজিজ সুপার মার্কেটে একটি বুথের নিরাপত্তাকর্মী গোপালগঞ্জের মো. আসাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মাঝে মাঝে মন চায় পরিবার নিয়ে ঈদ করার জন্য। বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য। কিন্তু কর্মক্ষেত্রের কারণে যাইতে পারি না। আগে কর্ম তারপর বাড়ি। কর্ম ঠিক তারপর বাড়ি ঠিক।’

সাধারণত ঈদুল অজহার পরই বাড়ি যান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঈদে সবাই ছুটি পায় না। চারজন ডিউটি করি। তিনজন ছুটি কাটাইতে যায়।’

ঈদে বাড়ি থাকলে কী হতো এমন প্রশ্নে আসাদ বলেন, ‘আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি বেড়াতে যাইতাম। তারা আসত। ফোনে কথা হয়। বাজারঘাট, কাপড়চোপড় সব দেওয়া হইছে।’ ঈদে সবার ছুটি থাকলে ভালো হতো জানিয়ে তিনি বলেন,‘ আমরা পারি না তো কর্মের কারণে। আমাদের কাজ অনেক ছোট। দায়িত্ব অনেক বড় বলে যোগ করেন তিনি।

শরীয়তপুরের বাসিন্দা মো. দেলোয়ার। বাটা সিগন্যালে প্রাইম ব্যাংকের বুথের নিরাপত্তাকর্মী তিনি। মার্শাল সিকিউরিটিতে কর্মরত এই ব্যক্তি আট বছর ধরে ঈদে ছুটি পান না দাবি করে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোরবানির ঈদেও না রোজার ঈদেও না।’

ছুটি চান কি না জানতে চাইলে দেলোয়ার বলেন, ‘চাইলেও দেয় না। কী করমু? চাইয়া তো লাভ নাই। তবে ঈদের এক মাস পর এই ছুটি পাওয়া যায়।’ঈদের কোনো আনন্দ করতে পারেন না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পেটের ধান্ধায় সবকিছু করতে হয়। আমি যদি নিজের মতলবে চইলা যাই, পরে চাকরি পামু না। ছুটি না নিয়া চইলা গেলে বেতন দেয় না। ঝামেলায় ফালাইয়া দিব।’

দেলোয়ার বলেন, ‘ঈদের আনন্দে সবার ছুটি পাওয়া উচিত। সবার কম-বেশি আনন্দ আছে। নামাজ এই পোশাকেই এহানে পড়তে হইবো। বাসায় যাওয়ার সুযোগ নাই।’

এ বিভাগের আরো খবর