বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভ্রাতৃবধূকে এইডস পরীক্ষার তাগিদ হান্টার বাইডেনের

  •    
  • ২৬ এপ্রিল, ২০২২ ২২:৩০

আরেকটি মেইলে হ্যালিকে সংযমী হওয়ার পরামর্শ দেন হান্টার। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমার ভাইদের বাড়িতে বিছানায় যাওয়ার জন্য তোমার কেউ আছে। সেই ভালবাসার কাজটি তার বা তাদের জন্য হতে পারে। তুমি কখনোই এটা মনে করো না যে তুমি দুজন সেরা মানুষকে হারিয়েছ, যাদের তুমি বা অন্য কেউ কেবল স্বপ্নেই ভাবতে পারে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের ব্যক্তিগত একটি ই-মেইল ব্যাপক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। চার বছর আগে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে ওই মেইলে হান্টার তার ভাইয়ের বিধবা স্ত্রী হ্যালি বাইডেনকে দ্রুত এইচআইভি পরীক্ষার তাগিদ দিয়েছিলেন।

অন্য নারীর গর্ভে হান্টারের ঔরসজাত সন্তান জন্মের প্রায় এক মাস পর মেইলটি পাঠানো হয়।

‘হ্যালি আপনার এইচআইভি পরীক্ষা করা প্রয়োজন’ টাইটেলের ই-মেইলটি হাতে পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম ফক্স নিউজ ডিজিটাল। তাতে দ্রুত এইচআইভি পরীক্ষা করে ওইদিনই ফল জানানোর তাগিদ দেন হান্টার।

‘তোমাকে আজই ফলাফল জানাতে হবে। আজ আমার পরীক্ষা হচ্ছে। ভয়ে আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। আর তুমি আমাকে ঝুলিয়ে রেখেছ। তুমি যে ভালোবাসা দিয়েছ তা খুবই বিরক্তিকর। ‘তুমি নিষ্ঠুর হলেও আমি তোমাকে (হ্যালি) ভালোবাসি। পরীক্ষা করো এবং আজই আমাকে ফলাফল জানাও।’

ওই মাসেই আরেকটি মেইলে হ্যালিকে সংযমী হওয়ার পরামর্শ দেন হান্টার। ১৫ জুলাই হ্যালিকে পাঠানো ই-মেইলে হান্টার বলেন, ‘আমি মনে করি আমার ভাইদের বাড়িতে বিছানায় যাওয়ার জন্য তোমার কেউ আছে। সেই ভালবাসার কাজটি তার বা তাদের জন্য হতে পারে। তুমি কখনোই এটা মনে করো না যে তুমি দুজন সেরা মানুষকে হারিয়েছ, যাদের তুমি বা অন্য কেউ কেবল স্বপ্নেই ভাবতে পারে।’

হ্যালির সঙ্গে সম্পর্কের বিস্তারিত ২০২১ সালে ‘বিউটিফুল থিংস’ নামে এক স্মৃতিচারণে বর্ণনা করেছিলেন হান্টার বাইডেন। তিনি জানিয়েছিলেন, তার ভাই বিউ বাইডেন ক্যান্সারে মারা যাওয়ার প্রায় এক বছর পর ভাইয়ের বিধবা স্ত্রী হ্যালির সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান তিনি। আর সেই সম্পর্কটা হ্যালিই শুরু করেছিলেন।

হ্যালি বাইডেন। ছবি: সংগৃহীত

হান্টারের বাবা জো বাইডেনও (যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট) বিষয়টি জানতেন। এই সম্পর্ক নিয়ে জো বাইডেন একটি বিবৃতিও দিয়েছিলেন। তাতে বলা হয়, ‘আমরা সবাই ভাগ্যবান। এই দুঃখের মধ্যে হান্টার ও হ্যালি একে অপরকে খুঁজে পেয়েছে। এই সম্পর্কে আমি ও আমার স্ত্রীর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’

হান্টার ১৯৯৩ সালে বিয়ে করেছিলেন ক্যাথলিন বুহেলকে। ২০১৭ সালের এপ্রিলে তাদের বিচ্ছেদ হয়। সাবেক স্ট্রিপার লুন্ডেন রবার্টস নামে এক তরুণী জানান, হ্যালির সঙ্গে সম্পর্ক চলাকালেই হ্যালির বড় বোন এলিজাবেথ সেকেন্ডির সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্কে জড়ান হান্টার

সাবেক স্ট্রিপার লুন্ডেন রবার্টস। ছবি: সংগৃহীত

‘ল্যাপটপ ফ্রম হেল’ বইয়ে আমেরিকান কলামিস্ট মিরান্ডা ডিভাইন লেখেন, ‘হান্টার যে মাসে হ্যালিকে এইচআইভি পরীক্ষার তাগিদ দিয়েছিলেন, সে সময় তিনি লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি হোটেলে পাঁচ মাস ধরে অবস্থান করছিলেন। এই সময়টায় মাদক সেবনের কারণে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন হান্টার। এক মাস পর ২০১৮ সালের আগস্টে হান্টারের ছেলে রবার্টসের জন্ম হয়। ওই বছরের শেষ দিকে হান্টার-হ্যালি আলাদা হয়ে গেলেও বিষয়টি জানাজানি হয় পরের বছর।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে হ্যালিকে পাঠানো একটি ই-মেইলে হান্টার তাকে ‘অজ্ঞাত, মধ্যবয়সী, পরাজিত’ বলে অভিহিত করেছিলেন। একদিন পর হ্যালি তার প্রতিক্রিয়া বলেন, ‘দয়া করে বাজে ই-মেইল ও রাগ বন্ধ কর। আমি তোমার বিরুদ্ধে নই।’

শিশুর নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা ‘বিউ বাইডেন ফাউন্ডেশন’-এর চিফ অপারেটিং অফিসার জোশ অ্যালকর্নের বেতন নিয়ে হ্যালি ও জো বাইডেনের ছোট বোন ভ্যালেরি বাইডেনের একটি ই-মেইলের প্রতিক্রিয়ায় হান্টার এমন আচরণ করেন বলে ধারণা করা হয়।

হান্টার শুরুর দিকে রবার্টসের সন্তানের বাবা হতে অস্বীকার করেছিলেন। স্মৃতিকথায় তিনি দাবি করেছিলেন, রবার্টসের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আরকানসাসের এক বিচারক রায় দেন, রবার্টসের ‘জৈবিক ও আইনি পিতা’ হান্টার। সন্তানের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব হান্টারকেই বহন করতে হবে।

পরের মাসে বাইডেনের আর্থিক বিষয়ে বিচার বিভাগের তদন্তে জারি করা সমনের প্রতিক্রিয়ায় সাক্ষ্য দেয়ার জন্য সর্বশেষতম হয়ে ওঠে রবার্টস।

নিউ ইয়র্ক পোস্টের খবরে বলা হয়, হান্টারের সাবেক বান্ধবী জো কেস্তানও সম্প্রতি ডেলাওয়ারের গ্র্যান্ড জুরির সামনে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি নিউ ইয়র্ক ও ক্যালিফোর্নিয়ায় হোটেলে হান্টারের বিলাসবহুল খরচের অভ্যাস সম্পর্কেও গ্র্যান্ড জুরিকে জানিয়েছিলেন।

হান্টারের বর্তমান স্ত্রী সাউথ আফ্রিকান চলচ্চিত্র নির্মাতা মেলিসা কোহেন। ২০২০ সালে শুল্ক সম্পর্কিত একটি ফেডারেল তদন্তের সময় তাদের বিয়ের বিষয়টি প্রকাশ পায়। ডেলাওয়ারের অ্যাটর্নি ডেভিড ওয়েইস এই তদন্তের তত্ত্বাবধান করছেন।

সিনেট হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কমিটি এবং সিনেট ফিনান্স কমিটি ২০২০ সালে হান্টারের বিদেশি ব্যবসায়িক লেনদেনের বিষয়ে একটি তদন্ত পরিচালনা করে। সেই তদন্তে তথ্য পাওয়া যায় যে হান্টারের অন্তত চারটি বড় লেনদেন ছিল, যেগুলোকে অর্থ মন্ত্রাণালয়ের ক্রাইমস এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্ক ‘সম্ভাব্য অপরাধমূলক কার্যকলাপ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

ফক্স নিউজের এই অনুসন্ধান হান্টার ও হ্যালির আইনজীবীদের কাছে পাঠানো হলেও তারা কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।

এ বিভাগের আরো খবর