বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গাছ কেটে ফুটপাতে দোকান

  •    
  • ৭ নভেম্বর, ২০২১ ০৮:১৯

স্থানীয় সোলায়মান আলম বলেন, ‘এমনিতেই টেক্সটাইল মোড় এলাকায় বিভিন্ন দলীয় কোন্দল ও কিশোর অপরাধীদের কারণে প্রায় সময় মারামারি-সংঘর্ষ লেগেই থাকে। উৎপাত রয়েছে মাদকসেবীদেরও। ফুটপাত দখল করে এতগুলো দোকান নির্মাণ করা হলে সেখানে লোকসমাগম বাড়বে।’

স্থানীয়দের আপত্তি উপেক্ষা করে গাছ কেটে ফুটপাতে দোকান করার অনুমতি দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। নগরীর টেক্সটাইল মোড়ে ১২ ফুট প্রস্থের ফুটপাত দখল করে ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়েছে ৬৬টি পাকা দোকান।

এসব স্থাপনা নির্মাণ করতে গিয়ে রাতে কাটা হয়েছে ফুটপাতে থাকা কিছু গাছ। কিছু গাছ দোকানের মধ্যে রেখেই দেয়াল তুলে ফেলা হয়েছে।

টেক্সটাইল মোড় থেকে চন্দ্রনগরমুখী সড়কের দুই পাশের ফুটপাতে পাকা দোকান নির্মাণের কাজ চলছে।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, হকার পরিচয়ে দোকান বরাদ্দ নিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরাও। এর মধ্যে ৬৫ নম্বর দোকান বরাদ্দ নিয়েছেন মো. সালাউদ্দিন। তিনি জালালাবাদ ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা। একইভাবে ৬৪ নম্বর দোকান নিয়েছেন বাহার উদ্দিন, ৬৩ নম্বর দোকান নিয়েছেন শামসুদ্দিন বাদল ও ৬২ নম্বর দোকান নিয়েছেন শাহজাহান। এরাও স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

স্থানীয়রা জানান, রাতে গাছগুলো কেটে দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। কাটা গাছের গোড়া যাতে মানুষের চোখে না পড়ে, সে জন্য মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। মাটি খুঁড়লেই গাছের অস্তিত্ব মিলবে।

স্থানীয় সোলায়মান আলম বলেন, ‘এমনিতেই টেক্সটাইল মোড় এলাকায় বিভিন্ন দলীয় কোন্দল ও কিশোর অপরাধীদের কারণে প্রায় সময় মারামারি-সংঘর্ষ লেগেই থাকে। উৎপাত রয়েছে মাদকসেবীদেরও। ফুটপাত দখল করে এতগুলো দোকান নির্মাণ করা হলে সেখানে লোকসমাগম বাড়বে।’

ফুটপাতে দোকান নির্মাণ না করার দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যে টেক্সটাইল মহল্লার নেতারা সিটি করপোরেশনের কাছে লিখিত চিঠিও দিয়েছেন।

মহল্লার আজগর আলী বলেন, ‘ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির নামে ফুটপাতে দোকান বরাদ্দ নেয়ার পেছনে কিছু ব্যক্তি লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য করেছেন। অথচ এসব ফুটপাত দিয়ে গার্মেন্টস ও শিল্প-কারখানার হাজার হাজার শ্রমিক চলাফেরা করেন। এলাকায় রয়েছে একাধিক গার্মেন্টস ও শিল্প-কারখানা।

‘এসব প্রতিষ্ঠানের মালামাল আনা-নেয়ার কাজে ভারী যানবাহনও চলাচল করছে এ এলাকা দিয়ে। এর চেয়ে বড় সমস্যা হবে, ফুটপাত ব্যবহার-বঞ্চিত হয়ে পথচারী রাস্তা দিয়ে হাঁটবেন। শিল্প এলাকা হওয়ায় ভারী গাড়ি চলাচল করে টেক্সটাইল এলাকায়। স্বাভাবিকভাবেই লোকজন চলাচলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হবে।’

অভিযোগের বিষয়ে চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, মেয়রের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে নগরীর কোথাও কোনো ফুটপাত কিংবা ভূ-সম্পত্তি বরাদ্দ দেননি তিনি। টেক্সটাইল, শেরশাহ ও তারাগেট এলাকায় ফুটপাতে যেসব দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, সেটি সাবেক প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন দিয়ে গেছেন।

তিনি বলেন, ‘শহরের এমন কোনো সড়ক ও ফুটপাত নেই, যেখানে সৌন্দর্যবর্ধনের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়নি। অতীতে মেয়র, প্রশাসকরা যেসব সিদ্ধান্ত দিয়ে গেছেন, সেটি বাতিল করা কঠিন। সিটি করপোরেশনকে আইনি জটিলতায় পড়তে হবে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর টেক্সটাইল মোড় এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালায় সিটি করপোরেশন। ওই সময় ফুটপাত হকারমুক্ত করা হয়। ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি উচ্ছেদ করা স্থানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আবার ফুটপাতে দোকান বরাদ্দের সিদ্ধান্ত দেয়।

এ বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, উচ্ছেদ করা টেক্সটাইল গেট, শেরশাহ ও তারা গেট ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনে ৩১ জানুয়ারি তৎকালীন প্রশাসক কিছু সিদ্ধান্ত দেন।

এগুলো হলো প্রকৌশল বিভাগের চিহ্নিত জায়গা এস্টেট শাখা থেকে বরাদ্দ এবং ভাড়া আদায় করা হবে। মালিকরা তাদের নিজস্ব খরচে দোকান নির্মাণ করবেন।

সিটি করপোরেশন থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, টেক্সটাইল মোড় এলাকার ফুটপাতে দোকানপ্রতি এক লাখ ৮০ হাজার টাকা করে ৬৬টি দোকান বাবদ এক কোটি ১৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা সেলামি নেয়া হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর