বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মার্কিন-চীন বাণিজ্য চুক্তির অগ্রগতিতে এশিয়ার শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বগতি

  • বাণিজ্য ডেস্ক   
  • ২৭ অক্টোবর, ২০২৫ ২১:৫৮

এশিয়ার শেয়ারবাজারে সোমবার ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে, কারণ বিনিয়োগকারীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতি নিয়ে আশাবাদী হয়েছেন। আলোচনায় ইতিবাচক ফলাফল পাওয়ায় বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে দীর্ঘদিনের বাণিজ্যবিরোধ প্রশমিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

সপ্তাহান্তে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট জানান, চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ‘কার্যত টেবিলের বাইরে।’ তার ভাষায়, ‘শুল্ক এড়ানো হবে।’ তিনি আরও জানান, চীন বিরল মৃত্তিকা রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ বিলম্বিত করতে এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে ‘উল্লেখযোগ্য পরিমাণে’ সয়াবিন ক্রয় করতে সম্মত হয়েছে।

অন্যদিকে, চীনের ভাইস প্রিমিয়ার হে লাইফেং বলেন, উভয় দেশ শুল্ক, রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ এবং ফেন্টানাইল সহযোগিতার বিষয়ে ‘প্রাথমিক ঐকমত্যে’ পৌঁছেছে। আলোচনাকে তিনি ‘স্পষ্ট, গভীর ও গঠনমূলক’ বলে অভিহিত করেছেন।

এই অগ্রগতির ফলে আসন্ন আগামী বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (APEC) শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের মধ্যে বৈঠকের পথ সুগম হয়েছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার পর এটি হবে দুই নেতার প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ।

আলোচনার ইতিবাচক প্রভাব সোমবার সকালে এশিয়ার বিভিন্ন শেয়ারবাজারে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার বাজার প্রায় দুই শতাংশ করে বেড়েছে এবং উভয়ই সাম্প্রতিক সময়ের মাইলফলক ছুঁয়েছে। হংকং, সাংহাই ও তাইপেইর বাজারও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু করেছে।

গত শুক্রবার ওয়াল স্ট্রিটে শক্তিশালী লেনদেন সমাপ্তির পর এশিয়ার বাজারেও ইতিবাচক মনোভাব ছড়িয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক মুদ্রাস্ফীতি তথ্য ফেডারেল রিজার্ভকে সুদের হার কমানোর পথে আরও একধাপ এগিয়ে দিয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ভূমিকা রেখেছে।

গত রোববার কুয়ালালামপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘তারা (চীন) একটি চুক্তি করতে চায়, আমরাও চুক্তি করতে চাই।’ তিনি বর্তমানে পাঁচ দিনের এশিয়া সফরে রয়েছেন, যার অন্তর্ভুক্ত মালয়েশিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। প্রতিটি সফরেই বাণিজ্য চুক্তির আলোচনাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতির খবরে বৈশ্বিক বাজারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে তামার ভবিষ্যৎমূল্য বেড়েছে, যা বিশ্বব্যাপী শিল্প ও নির্মাণখাতে চাহিদা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

গত কয়েকমাস ধরে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছিল। অক্টোবরে ট্রাম্প প্রশাসন চীনের বিরল মৃত্তিকা রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ সম্প্রসারণের প্রতিক্রিয়ায় ব্যাপক শুল্ক বৃদ্ধির হুমকি দেয়, যা ওয়াশিংটন ‘অর্থনৈতিক বলপ্রয়োগ’ হিসেবে বর্ণনা করেছিল।

তবে সর্বশেষ অগ্রগতি উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি বেসেন্টের ভাষায়, ‘চুক্তির কাঠামো অনুযায়ী চীন এক বছরের জন্য তার বিরল মৃত্তিকা নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রাখবে, এরপর পুনর্মূল্যায়ন করা হবে।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই অগ্রগতি যদি বাস্তবে রূপ নেয়, তবে তা শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের জন্য নয়, বরং পুরো এশীয় অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বার্তা বয়ে আনবে।

এ বিভাগের আরো খবর