বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় নিহতের সংখ্যা ৬৭ হাজার ছাড়াল

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৪ অক্টোবর, ২০২৫ ২২:৫৮

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ৬৭ হাজার ছাড়িয়েছে। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য টাইমস অব ইসরায়েল।

শনিবার মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে ৬৭ হাজার ৭৪ জনে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) গত এক দিনে তাদের হামলা বা অভিযানের বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, খাদ্যাভাব ও পুষ্টিহীনতায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অনাহার ও অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৫৯ জনে। এর মধ্যে ১৫৪ জন শিশু।

সম্প্রতি জাতিসংঘের বৈশ্বিক সম্মেলনে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। ফ্রান্স ও সৌদি আরবের আয়োজিত এ সম্মেলনে প্রথমে যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগাল, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, আন্দোর্রা, মোনাকো। এরপরও থেমে নেই ইসরায়েলের নিষ্ঠুর হামলা। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া উপত্যকায় দুর্ভিক্ষ চরম আকার ধারণ করেছে।

গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োযভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) মামলা চলছে।

হার মানছে হামাস?

গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনার জবাব দিয়েছে হামাস। গাজার প্রশাসনিক কাঠামো নিয়ে দুই পক্ষের অবস্থান ভিন্ন।

ট্রাম্পের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, একটি আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে টেকনোক্র্যাট কমিটি গাজা পরিচালনা করবে এবং এ প্রক্রিয়ায় টনি ব্লেয়ারসহ আন্তর্জাতিক ব্যক্তিরা যুক্ত থাকবেন। হামাস বলেছে, গাজা পরিচালনা করবে একটি ফিলিস্তিনি স্বাধীন টেকনোক্র্যাট কমিটি, যা জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গঠিত হবে এবং আরব ও ইসলামি সমর্থনে কার্যকর হবে।

গত শুক্রবার দেওয়া এক বিবৃতিতে হামাস পরিকল্পনার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিলেও প্রশাসনিক কাঠামো ও নিজেদের ভবিষ্যৎ ভূমিকা নিয়ে মতভেদ প্রকাশ করেছে।

হামাস জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলি সেনাদের পূর্ণ প্রত্যাহার, জিম্মি ও বন্দিদের বিনিময় এবং গাজায় মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠনের বিষয়গুলোতে সম্মত।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রস্তাবিত সূত্র অনুযায়ী জীবিত ও মৃত ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিতে তারা প্রস্তুত। তবে এ প্রক্রিয়ায় ‌‘ক্ষেত্রীয় শর্ত’ পূরণের কথা উল্লেখ করলেও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়নি।

ট্রাম্পের পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, হামাসের জিম্মিদের ফেরত দেওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েল ২৫০ আজীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি বন্দি এবং ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর আটক ১ হাজার ৭০০ গাজাবাসীকে মুক্তি দেবে। এর মধ্যে নারী ও শিশুরাও থাকবে। একইসঙ্গে প্রতি ইসরায়েলি জিম্মির মৃতদেহের বিনিময়ে ১৫ জন ফিলিস্তিনির মৃতদেহ ফেরত দেওয়া হবে।

সবচেয়ে বড় মতভেদ হামাসের ভবিষ্যৎ ভূমিকা নিয়ে। ট্রাম্পের পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, হামাস গাজার প্রশাসনে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে কোনো ভূমিকা রাখবে না এবং ধাপে ধাপে গাজা নিরস্ত্রীকরণের পথে যাবে।

তবে হামাস নিজেদেরকে ফিলিস্তিনি জাতীয় কাঠামোর অংশ হিসেবে দাবি করেছে এবং নিরস্ত্রীকরণ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেনি।

হামাস জানিয়েছে, গাজার প্রশাসন ও ভবিষ্যৎ কাঠামো নিয়ে আলোচনা একটি জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী হতে হবে। তবে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী বা হামাসের সদস্যদের নিরাপদে দেশত্যাগের মতো প্রস্তাবগুলো নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি সংগঠনটি।

‘যুদ্ধ থামাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে হামাস’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা নিয়ে আশার সুর শোনা যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকদের কণ্ঠে। তাদের মধ্যে অন্যতম তুরস্কের ইস্তাম্বুল জায়িম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম অ্যান্ড গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স সেন্টারের (সিআইজিএ) পরিচালক ও জননীতিবিষয়ক অধ্যাপক সামি আল-আরিয়ান।

তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে কার্যকর হতে পারে। তবে সেটি নির্ভর করবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গাজা থেকে প্রত্যাহার ও বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে ট্রাম্প কীভাবে পদক্ষেপ নেন তার ওপর।

আল-আরিয়ান বলেন, আমার বিশ্বাস হামাস ও অন্যান্যরা এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।

তিনি আরও যোগ করেন, যদি ট্রাম্প সত্যিই যুদ্ধ শেষ করতে আগ্রহী হন, তাহলে তার প্রস্তাবের মাধ্যমেই সে পথে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এদিকে গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থা জানিয়েছে, হামাস যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার পরও ইসরায়েল গাজা নগরীতে বেশ কয়েকটি বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ চালিয়েছে। এতে শনিবার ভোর থেকে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন।

সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল এএফপিকে বলেন, রাতটি ছিল অত্যন্ত সহিংস। ইসরায়েলি সেনারা গাজা নগরী ও উপত্যকার অন্যান্য এলাকায় বহু বিমান হামলা ও আর্টিলারি গোলাবর্ষণ চালিয়েছে, যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বোমা হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন।

ট্রাম্পের প্রস্তাবে হামাসের সম্মতি, স্বাগত জানাল জাতিসংঘ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা গাজা শান্তি পরিকল্পনার আলোকে জীবিত ও মৃত সকল ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে হামাস। হামাসের এই প্রতিক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।

মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মহাসচিব ‘হামাসের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এতে উৎসাহিত হয়েছেন’।

ডুজারিক বলেন, ‘মহাসচিব সব পক্ষকে গাজায় চলমান সংঘাত শেষ করার সুযোগটি গ্রহণ করার আহ্বান জানান এবং কাতার ও মিসরকে মধ্যস্থতাকারী ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।’

এ বিভাগের আরো খবর