ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে হঠাৎই অবস্থান বদলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনীকে ‘কাগুজে বাঘ’ বলে খোঁচা দিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ক্রেমলিন। বলেছে, ‘রাশিয়া বাঘ নয় ভালুক।’
ট্রাম্প গত মঙ্গলবার ট্রুথ সোশ্যালে বলেছিলেন, রাশিয়া তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে উদ্দেশ্যহীনভাবে এমন এক যুদ্ধ লড়ছে, যা এক সপ্তাহেরও কম সময়ে জয় করা উচিত ছিল। কিন্তু রাশিয়া তা না পারায় তারা ‘কাগুজে বাঘ’ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
তিনিও আরও বলেছিলেন, ‘ভ্লাদিমির পুতিন ও রাশিয়া এখন বড়সড় অর্থনৈতিক সমস্যায়, এখনই সময় ইউক্রেনের পদক্ষেপ নেওয়ার। (যুদ্ধে) রাশিয়ায় যে অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছে তা দেখে আমার মনে হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থন নিয়ে লড়াই করার ও তার সব অঞ্চল আদি অবস্থায় পুনরুদ্ধার করতে ইউক্রেইন পারবে।
ট্রাম্পের এমন সব মন্তব্যের পরেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানাল রাশিয়া। তার ‘কাগুজে বাঘ’ মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‘রাশিয়া বাঘ নয়, বরং রাশিয়াকে ভালুকের সঙ্গে তুলনা করা হয়। আর আমরা কাগুজে ভালুক নই। সত্যিকারের ভালুক।’
রাশিয়ার অর্থনৈতিক সমস্যা নিয়ে ট্রাম্প যা বলেছেন সে প্রসঙ্গে ক্রেমলিনের জবাব, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার চাপে থাকার পরও রুশ অর্থনীতি স্থিতিশীল রয়েছে। আর ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর ধীর অগ্রযাত্রা মূলত কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ, দুর্বলতা নয়।
‘যুদ্ধে ইউক্রেন জিততে পারে’- এমন পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করেছেন দিমিত্রি পেসকভ। তিনি বলেন, রাশিয়ার জাতীয় স্বার্থ নিশ্চিত করতে বিশেষ এই সামরিক অভিযান চালানো হচ্ছে। দেশের বর্তমান এবং ভবিষ্যতের জন্য এ লড়াই করা হচ্ছে। এর কোনো বিকল্প নেই।
মস্কোর ওপর যুদ্ধ বন্ধে চাপ সৃষ্টি করতে ট্রাম্প ইউরোপের দেশগুলোকে রাশিয়ার জ্বালানি কেনা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
পেসকভ এই ধারণা প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক স্বার্থেই ট্রাম্প ইউরোপের দেশগুলোকে রুশ জ্বালানি কিনতে বাঁধা দিচ্ছেন। এর ফলে ইউরোপের স্বার্থও ক্ষুণ্ণ হবে।’
গত কয়েক মাস ধরে ট্রাম্প রাশিয়ার অনুকূল বার্তা দিয়ে আসলেও এবার সরাসরি অবস্থান বদলে ইউক্রেন এবং ইউরোপের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ইউক্রেনে আগ্রাসনের জন্য দুষেছেন রাশিয়াকে।
এর মধ্যেই গত বুধবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ট্রাম্পের প্রশংসা করেন। সেইসঙ্গে নিউইয়র্কে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি। তারপরেই রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ ঘিরে অবস্থান বদলান ট্রাম্প।